প্রথমেই বলে নেই, এটা হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে এমআরপি করা নয়; যাদের অলরেডি এমআরপি আছে এবং মেয়াদ শেষের দিকে, ভিসার জন্য যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকা প্রয়োজন, এই পোস্ট তাদের জন্য।
যেহেতু প্রথম ইস্যুকৃত এমআরপির মেয়াদও এখনো শেষ হয়নি, এমআরপি রিনিউ নিয়ে কোন তথ্য ব্লগ বা অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়না। এমনকি পাসপোর্ট অফিসের দালালরাও ঠিকমতো বলতে পারেনা এই সম্পর্কে। সম্প্রতি আমার এমআরপি রিনিউ করলাম, ভাবলাম একটা পোস্ট দেই, অনেকের কাজে দেবে

রিনিউ ফি: আসলে এমআরপি রিনিউ হয়না, নতুন করে পাসপোর্ট করতে হয়। এজন্য আপনাকে ৩ হাজার টাকা ব্যাংকে পে করতে হবে, জরুরী হলে ৬ হাজার। সবচেয়ে ভালো হবে ট্রাস্ট ব্যাংকে টাকা জমা দিলে, ভিড় কম থাকায় খুব দ্রুত কাজ হয়। ওখানে এমআরপি রিনিউ ফি এর কথা কেউ কোনদিন শোনেনি, কাজেই নতুন এমআরপি ফি হিসেবেই টাকা জমা করবেন। জমা রশিদটা খুব জরুরী, ওটাতে "ডুপ্লিকেট" বা এধরনের কিছু লেখা থাকলে পাসপোর্ট অফিস গ্রহন করবেনা, নামের বানানটাও পাসপোর্টের সাথে মিলিয়ে নেয়া জরুরী। কোন এমআরপির মেয়াদউত্তীর্ন হয়নি এখনো, হলে তার জন্য আলাদা জরিমানা থাকবে, ৩০০ টাকা এবং আরো বেশিদিন হলে ৬০০ টাকা। সব টাকাই এক জমা রশিদে থাকা ভালো, একবারে টাকা জমা দিতে হবে।
ডকুমেন্টস্ যা লাগবে: নতুন পাসপোর্ট করতে যা যা লাগে, তার সবই লাগবে। পার্থক্য শুধু দুই কপির জায়গায় এক কপি ফরম লাগবে, আর বর্তমান পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি লাগবে। আগে পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশের দালালদের মাধ্যমে সত্যায়িত করানো যেত, এখন ঐ ধরনের সত্যায়িত ডকুমেন্টস পাসপোর্ট অফিস অনেক সময় গ্রহন করেনা। কাজেই অন্য কোথাও থেকে সত্যায়িত করাবেন। সকল ডকুমেন্টস এর কপিই সত্যায়িত হতে হবে। অনলাইনে এমআরপি ফরম পূরন করে প্রিন্ট দিয়ে নিতে পারেন, নতুন এমআরপি আবেদন অপশন সিলেক্ট করে কাজটা করতে হবে। এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ফরমে আঠা দিয়ে লাগিয়ে তার উপর সত্যায়িত করতে হবে। টাকা জমার স্লিপ আঠা দিয়ে ফরমের উপরে লাগিয়ে দিতে হবে এক কোনায়।
আরেকটা ফরম লাগবে যা শুধু পাসপোর্ট অফিসের ৬ তলায় পাওয়া যায়, সেটা হলো "Re-issue" ফরম। যেহেতু নতুন পাসপোর্ট বই পাবেন, কোন তথ্য আপডেট করাতে হলে এটাই হলো সুযোগ, এই ফরমেই যা চেন্জ চান সেগুলো লিখতে হবে। চেন্জ করার কিছু না থাকলে শুধু "এক্সটেন্ড ভ্যালিডিটি" লিখে দিবেন। নাম, জন্মতারিখ, বর্তমান/স্থায়ী ঠিকানা বাদে আর সবই চেন্জ করতে পারবেন, এমনকি ছবিও। কোন চেন্জ না থাকলে আগের এমআরপি-এর তথ্যই নতুন পাসপোর্টে চলে আসবে, নতুন অনলাইন আবেদনে যা লিখেছেন তার কিছুই কিন্তু আসবেনা। ন্যাশনাল আইডি অথবা নতুন ১৭ ডিজিট বার্থ সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি লাগবে। পেশা হিসেবে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার এসব লিখলে অনার্সের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি লাগবে। আর বর্তমান এমআরপি এর সত্যায়িত ফটোকপি দিতে হবে। বর্তমান অরিজিনাল পাসপোর্ট অবশ্যই সাথে করে নিয়ে যাবেন, ওটার কভার পেজ ফুটো করে আপনাকে ফেরত দিয়ে দেবে।
যেখানে যা করবেন: প্রথমেই পাসপোর্ট অফিসের গেটে লাইন দিয়ে ঢুকতে হবে, আর্মি আপনার ফরমে সিল মেরে ৩০৪ নম্বর রুমে যেতে বলবে। যেহেতু আপনার রিনিউ কেস, আপনি ৩০৪ রুমের লাইনে দাড়িয়ে সময় নস্ট করবেননা, এই লাইন একেবারে নতুনদের জন্য। সোজা ৬ তলায় গিয়ে রি-ইস্যু ফরম নিয়ে আসুন, পূরন করে ৩০৩ নম্বর রুমে চলে যান তৃতীয় তলায়। ওখানে "রি-ইস্যু" ফরম এ্যাপ্রুভ করে দেবে, পুরানো পাসপোর্টের কভার ফুটো করে আপনাকে ফেরত দেবে। এবার আপনাকে ছবি তোলার লাইনে দাঁড়াতে হবে ৪ তলায়; যদিও আপনার ছবি তোলা লাগবেনা, তারপরো ঘন্টা দু'য়েক এই লাইনে থাকতেই হবে। সরাসরি ৪ তলায় গেলেও আবার হবেনা, নিচ তলায় গিয়ে ১০২ নম্বর গেট থেকে ফরমে সিল নিয়ে তারপর ৪ তলায় যেতে হবে। ছবি তোলার সিরিয়াল নেয়ার সময় বলবেন "রি-ইস্যু", "রি-ইস্যু" এর জন্য সিরিয়াল দেবে তাহলে। ছবি তোলার রুমে ঢুকলে আপনার "রি-ইস্যু" ফরম দেখে ডাটাবেজ আপডেট করে দেবে, প্রিন্ট দিয়ে দিবে। ওখানে সব বানান মিলিয়ে দেখবেন ঠিক আছে কিনা। এমন কোন তথ্য যদি মনে পড়ে "রি-ইস্যু" ফরমে লিখতে ভুলে গেছেন, হতাশ হবেননা
