বুঝেছি প্রিয়ার মন আর ভালোবাসা,
স্বার্থে মোড়ানো ভুল অভিনয় প্রতারণার।
হয়েছে ভস্ম নিঃস্বার্থ প্রেম যতো আশা,
স্বপ্ন'রা হারায়ে ছন্দ হৃদয়ের বর্ণ অঙ্গার।
একাকীত্ব বিরহে দগ্ধ চারিদিক শূন্যতা,
কষ্টের সখ্যতায় নির্ঘুম রাত আমার।
জানিনা কেন আজ এই বিষণ্ণতা,
কি আশায় অস্থির বাকি কি জানার!
আছে কি প্রাপ্য কিইবা তার কাম্যতা,
দেখছি দূরের চাঁদ ছাপিয়ে আঁধার!
মনে যেন সহস্র বছরের নীরবতা,
সহসা যাচ্ছে কেটে নির্ঘুম রাত আমার!
________________________
নির্ঘুম রাত্রি শেষে বর্ণিল সকাল
অলস দুপুরে বসে ঘরের কোণে
উদাস চিত্তে ভাবছি যে মাতাল
মনে আমার হয়েছে কিছু আজ।
মনের লাগাম কে ধরেছিল কবে
জ্ঞানীগুণী মুনিঋষি সাধু জন সবে
যদিও রাখেন মন খবর সমান্তরাল
এই অধমের নেই সাধ্য জানিবার।
বেসুরো আজ যেন সব গানের কলি
ছন্দ হারিয়ে যেন ক্লান্ত উদাস কবি
পদ্যরা সব লাগছে গদ্য ঝনঝাঁল
উলটো সবকিছু তাল নেই বেতাল।
__________________________________
আমি ঘুম ভুলে যাই
মনে জাগে না খাওয়া বিছানার সুখ।
স্বপ্নে ভাসি কল্পনায়
যদি মিলে ছন্দ দেই কবিতায় ডুব।।
এ আমার আত্ম প্রেম
শব্দের সন্ধানী হয়ে কেটে যাবে যুগ।
আমি যে নীরবচারী
গভীর নিঝুম রাতে মনে পড়ে খুব।।
কত রাত ভোর হল
বুনে শব্দের জাল দেখিনি প্রিয় মুখ।
কবিতা আর প্রিতম
দুই নেশাতেই আমি হয়ে যাই চুপ।।
_________________________
কেটে গেল আরেকটি রাত নির্ঘুম...!
আজকের রাতটিও কাটিয়ে দিলাম নির্ঘুম, অথচ কিছুই লিখলাম না কোথাও! যদিও লেখার খুব ইচ্ছে ছিল...!
অনেকদিন পর গতকাল সন্ধ্যার আগে তাকে ফোন দেই। রিসিভ করতে একটু দেরি হলেও শেষ সময় রিসিভ করলো। আমি একটু নীরব ছিলাম। ইচ্ছে করেই। ভাবছি দেখি কে ধরেছে। পরে আবার আমার জন্য তার না সমস্যা হয়ে যায়!
না, সেওই ধরেছিল। কিন্তু, আমার সাথে কথা বলার কোন আগ্রহ তার মাঝে বোঝলাম না। আমার তো তাই মনে হল। কারণ, আমার নাম্বারটা সে জানে, কিন্তু ও প্রথম থেকেই শুধু হ্যালো হ্যালো করছে, তারপর যখন আমি ওকে হাসাতে সালাম দিলাম, সে সালামের জবাব না দিয়ে কেবল বললো, ও ও তুমি? মনে হল একটু হাসি ছিল তার মুখে। তবুও আমি তার আগ্রহ না দেখে সোজা সুজি ফোন দেওয়ার উদ্দেশ্যটা বলে দেই, 'শুভ নববর্ষ, নতুন বছরের শুভেচ্ছা দিতেই ফোন দিয়েছি'। সে কিছুই আর বললো না শুধু 'ও ও' ছাড়া...!
আমি সবসময় বা সবদিন ফোন দেই না তাকে। কারণ, আমি জানি ওর সংসার আছে, এবং খুব সুখেই আছে সে। নতুন আরেকটা বাচ্চা হয়েছে মনে হয় মাস দুই হবে, আমি সঠিক জানিনা। কারণ, তার সাথে আমার এখন আর ভালো যোগাযোগ নাই বললেই চলে। ভালো যোগাযোগ তার বিয়ের পর কোনদিনই ছিল না আমার সাথে। মাঝে চৌদ্দ বছর তো কোন কথাই হয়নি তার সাথে! একবার মনে হয় দেখেছিলাম শুধু চলার পথে এক পলক, লোকের ভিড়ে, বাস স্ট্যান্ড দাঁড়িয়ে আছে তার বাচ্চার হাত ধরে। আমার চোখে চোখ পড়তেই ওর ভিতু আর অপরাধী চাহনি আমি আর দ্বিতীয়বার ফিরে দেখতে পারিনি, দ্রুত চলে গিয়েছিলাম সেদিন। আর কোনদিন যে দেখাই হয়নি চৌদ্দ বছরের মধ্যে। কেমনে দিবো ফোন...!
তবুও গতকাল কলটা দিয়েই ছিলাম। খুব মনে পড়ছিল কয়েকদিন ওকে। আমার কয়েকদিন শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। জ্বর, পাতলা পায়খানা, সর্দী, কাশি সব মিলিয়ে খুব কষ্টে সময় পার করছি। শারীরিক এই কষ্টের জন্যই হয়তো খুব মনে পড়ছিল তাকে, তবুও ফোন দেই নি। কিন্তু গতকাল আর নিজেকে আটকাতে পারলাম না। দুপুরে শরীরটা অনেক ভালো মনে হলো। ভাত খেয়ে বিছানায় শুয়ে ব্লগে একটা নতুন কবিতা লেখছি।
কবিতাটা, গোসলে যাওয়ার আগে হঠাৎ মনডা একটু কেমন যেন খারাপ লাগছিল। সিগারেট ধরিয়ে টানছি আর ভাবছি যাই, গোসলটা করেই আসি। কিন্তু কিছুতেই উঠতে মন চাইলো না। খুব মনে পড়ছিল তাকে। অনেকদিন হয় তার সাথে কথা হয় না আমার। কেন যে মনে পড়ছে বুঝিনা। চোখ বন্ধ করে ভাবছি আমার স্কুল জীবন, কলেজ জীবন, তার সাথে আমার সুন্দর মুহূর্ত গুলো। কিন্তু, যখন মনে হল, সে অনেকদিন যাবত আমার আর কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না, কষ্টটা একটু বেশিই হচ্ছিল তখন পুরনো সেই সুন্দর হাসিখুশি দিনগুলো ভেবে। কিন্তু, তাকে ফোন দিতে পারছিনা, পরে কোন সমস্যায় পড়ে যদি তার স্বামী সাথে থাকে তো!
সিগারেট টানতে টানতেই কবিতাটির প্রথম চার লাইন টেবিলে থাকা সাদা কাগজে লিখে ফেললাম। তখন ভাবলাম তাহলে লেখেই ফেলি একটা কবিতা এখন তাকে ভেবে। পরে প্রায় ঘন্টা খানেক স্মৃতিরোমন্থন করে লিখে ফেললাম কবিতা কেমন'রে তুই কতই সুখী পরে অমনি টেবিলে রেখে গোসল করতে যাই পাশের নদীতে। গোসল করে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে শুয়ে সেই কবিতাটাই কাটছাঁট করে ব্লগে লেখছি। তখনও খু্ব মন চাইছিল তার সাথে কথা বলি। কিন্তু, তখন দেখি প্রায় তিনটা বাজে। ভাবলাম তার প্রফেসর স্বামী যদি বাসায় থাকেন তো তার জন্য খারাপই হতে পারে। এসব ভাবছি আর কবিতাটি ব্লগে তুলছি।
ভাবছিলাম, দুপুরে একটু ঘুমোবার জন্য। কিন্তু কবিতাটা ব্লগে তুলতে তার কথা আরও বেশি মনে পড়তে লাগলো। পরে ব্লগ থেকে বের হয়ে ফেসবুকে ঢুকি। পরে ফেসবুকেই কাটলো বিকাল পাঁচটা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। পহেলা বৈশাখ, নববর্ষের শুভেচ্ছা দিতে আর আমার ফেসবক পোষ্ট গুলিতে কমেন্টের উত্তর দিতে দিতেই চলে গেল সময়। মাঝেমধ্যে ব্লগে ঢোকে দেখতাম নতুন পোষ্টে বা নববর্ষ উপলক্ষে যদি কোন শুভাকাঙ্ক্ষী মন্তব্য করে তো প্রতিউত্তর তো করতেই হবে। পরে সন্ধ্যার আগে আগে মনে হল এখন হয়তো তার স্বামী বাসায় নাও থাকতে পারে, ৬ টা ৬ মিনিটে ফোন দিলাম তাকে। কিন্তু, তার কথা বলার অনাগ্রহে সোজাসুজি নববর্ষের শুভেচ্ছা দেওয়ার পর ওর শুধু 'ও ও' শুনে চুপ হয়ে গেলাম আমি। ভাবছি ওই কেটে দিক আগে বা কি করে দেখি। সেও পাঁচ সাত সেকেন্ড চুপ থেকে ফোন কেটে দিল। মাত্র ৪২ সেকেন্ড কথা হল তার সাথে। হঠাৎ করে ওর এত অনাগ্রহ দেখে একটু ভাবলাম চুপচাপ অনেক কিছু...। যে কিনা এত কথা বলার আগ্রহ দেখাতো, কথা বলার জন্য কষ্টকরে আমার নাম্বার জোগাড় করেছিল, সেই এখন এমন করছে কেন। মনে মনে বললাম, যাক ভালোই হলো আমাকে ভুলতে পেরেছে হয়তো....! তুই ভুলেই থাক আমাকে। তোকে আর কখনো ফোন দিবো না আমি....! তুই সুখেই থাকিস সবসময় স্বামী সংসারে। সেই আগের মতোই হাসি-খুশি লেগে থাকুক তোর মুখে অনন্তকাল.....
পরে আবার ফেসবুক আর ব্লগ ঘুরতে ঘুরতেই রাত ৯ টা পার হলো। পরে রাতের খাবার খেয়ে ফেসবুক দেখছি। এমন সময় বাহিরে যেতে হলো। বাহির থেকে শোয়া ১২ টার দিকে ফিরে এসে ফেসবুক আর ব্লগ ঘুরতে পড়তেই সকাল হয়ে গেল। চোখে সামান্য ঘুম আসলো না! কেটে গেল আরেকটি রাত নির্ঘুম...! এখনও এই লেখছি।
কষ্টের অনেক কথাই মনে হলো সারা রাত। কিন্তু কিছুই লেখতে পারলাম না কোথাও! আমার সবকিছু কেমন যেনো স্তব্ধ হয়ে আছে এখনো। কত রাত এভাবে নির্ঘুম সকাল হয়েছে তার কোন হিসেব রাখিনি আমি....! না! চোখ দুটো অবাধ্য হতে চাইছে এখন...। আকাশে কালো মেঘের জমাট বোঝতে পারছি....। হয়তো এখনই ভাসিয়ে দেবে এপাশ-ওপাশ.....!!
গরীবের জন্য ভালোবাসা না, ভালোবাসা কেবল ধনীদের জন্যই। পূর্ণতা কখনওই ভদ্র ছেলেরা পায় না ভালোবাসা থেকে! যারা ভালোবাসার নামে নোংরামি করে, তাদের কাছেই মেয়েরা ধরা দেয় সবসময়। মন থেকে যারা ভালোবেসে ফেলে, তারা ভালোবাসা পায় না, অবহেলিতই হয় শুধু...!
যাক, আর কিছু বলবো না ...! রাতটা স্মৃতি হয়েই থাকুক। ভালো থাকুক সে, সুখে থাকুক সবসময়....।।
(১৫ এপ্রিল ২০১৭ইং সকাল)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৫০