কথা গুলো বলা কতটা যুক্তি সঙ্গত আমি জানি না, কিন্তু এটা নিয়ে এতটাই ডিপ্রেসড্ যে না বলেও পারলাম না। নামধাম উল্লেখ করবো না, আর বললেও লাভ নেই কেননা যাদের নিয়ে বলছি তারা খুবই সাধারন মানুষ।তারা কোনো ব্লগার না, কোনো নাস্তিক কিনা তাও জানিনা, কোনো সেলিব্রেটি না, কোনো রাজনৈতিক দলেরও না।
একদিন দেখি সে গান গাচ্ছে,,,,,,,,,,,,, আমার ** বাংলা, আমি তোমায় ** ( * এর জায়গায় যে শব্দ গুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আমি এখানে বলতে পারছি না দুঃখিত) আমি শুনে অবাক !!!! এ আমি কি শুনছি !! আমি নিজেকে বিশাল দেশ প্রেমিক বলি তা নয় কিন্তু নূন্যতম শ্রদ্ধা তো রাখা উচিত। আমি তাকে বললাম, ছিঃ এসব কি বলছ তুমি? জাতীয় সংগীতের অবমাননা করা ঠিক না। সে তাচ্ছিল্য ভরে বললো.......... আরে হুরররর.......... জাতীয় সংগীত (ব্যাঙ্গাত্মক উচ্চারন).......... অতঃপর আবার সেইম গান......... !!! সাথে আরো কিছু স্ল্যাং।
কিছুদিন আগে ফেইসবুকে একটা পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। চ্যানেল আই তে গানের রিয়েলিটি শো তে ৩ জন সেলিব্রেটি (আনফরচুনেটলি নাম মনে নাই) দের মাঝে একজন ১৯৭১ এ রাজাকাররা তার পরিবারের উপর কিরকম অত্যাচার করেছিলো তার বর্ননা দিয়েছিলেন। আমি যখন এটা টিভি তে তখনই কেঁদে দিয়েছিলাম। সেদিন ফেইসবুকে দেখে আবারও কেঁদেছি। ঐ পোস্টে একজনের খুব জঘন্য একটা কমেন্ট দেখেছিলাম যেটা আমি এখানে বলতে পারছি না। এত খাটি বাংলা কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব না।
খুব কাছের একজন মানুষ, দেশ নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলছেন দেখে সহ্য করতে পারলাম না। বললাম, তুমি তো অমানুষ,নিমকহারাম, যেখানে থাকো খাও তাকেই অসম্মান করো। তার উত্তর ছিলো, হাহ...... এই ** এর দেশ থেকে যেতে পারলে বাঁচি ( উল্লেখ্য তিনি দেশের বাইরে যাবার ধান্দা করছেন আজ ৫ বছর) এ কথা শুনে আমি বললাম এই জন্যই তুমি বাইরে যেতে পারছো না। এখন এ কথা বলছো, অন্য দেশে গেলে বুঝবা ঠ্যালা কাকে বলে। এটা শুনে সে বললো, একবার এই ** থেকে বের হতে পারলে জীবনে আর আসবো না। মনে মনে বললাম, হুম দেশ কলঙ্ক মুক্ত হবে।
বেশ কিছুদিন ধরেই শহীদ রুমীর নাম মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। সেদিন ফেইসবুকে এ বিষয়ক খবর পড়ছি এমন সময় একজনের সাথে কথা হলো।সে আস্ক করলো আমি কি করছি? আমি উত্তর দিলাম। শুনে সে বললো, যত্তসব ভন্ডামি। এটা শুনে আমি বললাম, তোমার তো এ বিষয়ে কথা বলবার অধিকার নেই। তুমি কতটুকু জানো? তুমি জানো রুমী কে ছিলেন? তুমি জানো আজাদের কথা? আজাদের মায়ের কথা? তুমি জীবনে কর্ণেল খালেদ মোশারফের নাম শুনছো? সে খুব বাজে মুখভঙ্গি করে আমাকে বললো এইসব ফালতু মানুষদের কথা জানার কোনো ইচ্ছা নেই আমার এবং সময়ও নেই। আমি জানিনা কেনো কিন্তু আমি কেঁদে দিয়েছিলাম।
যাদের কথা বললাম এরা সবাই আম জনতা যাকে বলে ম্যাঙ্গোপীপল। আমাদের দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতারা করাপটেড। এ দেশের মিডিয়া ও করাপটেড। ভাবতাম আমার মতন সাধারন মানুষদের মনে হয়তো এখনো দেশের জন্য শ্রদ্ধা আছে,ভালোবাসা আছে।হয়তো এদের কারনে হলেও ১০০ বছর পর বাংলাদেশ টা অন্যরকম হবে।হয়তো শক্তিশালী কোনো দেশ না কিন্তু শান্তির দেশ হবে।
আমি মেয়েটা খুবই অপটিমিস্টিক।বাংলাদেশের যখন ১ বলে ৭ রান লাগে আমি তখনো আশা রাখি যে একটা নো বল হবে এবং পরের বলে ছক্কা........ কিন্তু এখন খুব হতাশ হয়ে যাচ্ছি। আমি রাজনীতি বুঝি না। ইনফ্যাক্ট আমাদের রাজনীতি নিয়ে আমার কোনো আইডিয়া নেই। লজ্জ্বাজনক সত্যি কথা বলি, জিল্লুর রহমান মারা যাবার পর আমি তাকে দেখেছি,এর আগে তাকে আমি চিনতাম না। আমাদের সবার আলাদা নাম পরিচয় থাকতে পারে, আলাদা ইনটারেস্ট থাকতে পারে, পয়েন্ট অফ ভিউ থাকতে পারে কিন্তু একটা ব্যাপার তো সবার জন্য কমন................ বাংলাদেশ এর জন্য কি কিছুই করার নেই??১৯৭১ এ এই নাম ধারন করবার পর থেকে কি পেয়েছে আমাদের কাছ থেকে ? এভাবেই কি চলবে? যদি তাই হয় তবে আমি আমার ভবিষ্যত প্রজন্মকে এখানে আসতে দিতে চাই না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩৩