যারা পড়বেন নিরপেক্ষ মানসিকতা নিয়ে পড়বেন। কথা পছন্দ না হলেই "রাজাকার", "ভারতের দালাল" প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত করা আবার ব্লগীয় কালচারে পরিনত হয়েছে। যা হোক, আমার এই পোস্টের অবতারনার কারন অমি পিয়ালের একটি পোস্ট।
পোস্টটিতে উনি রাজাকার প্রজন্মকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মে যোগদানের। উনার আমন্ত্রনের মাহাত্ব্য নিয়ে আমার কোন কথা নাই। শুধু আমার না, আমার মনে হয় কোন সচেতন যুব বা যুবার ই কোন আপত্তি নেই। তার এই আমন্ত্রনের কারনও আছে। সত্যিই এমন অনেক ছেলে আছেন, যাদের বাবা ১৯৭১ এ স্বাধীনতার বিরোধীতায় যুদ্ধাপরাধ করেছে। তারা অনেকেই শুধু মাত্র তাদের বাবার দিকে তাকিয়ে যুদ্ধাপরাধ এর স্বপক্ষে নানা কথা বলেন। আমার খুব কষ্ট লাগে এটা দেখলে যে, কেউ কেউ বলেন, ৩০লক্ষ বাঙালী আসলেই শহীদ হয়েছিলেন কিন!! অদ্ভুত কথা। ভাই ৩০লক্ষ না হোক ৩০জন বাঙালীকেও যদি তারা মেরে থাকেন তাতে কি তাদের অপরাধ বিন্দুমাত্র কমে যাবে? যা হোক, বাদ দেই। তাদের প্রতি অমি পিয়ালের আজকের এই আহবান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণও। যারা রাজাকার প্রজন্ম তাদের ব্যাপার তারা অমি পিয়াল এর এই আমন্ত্রনকে কিভাবে ওয়েলকাম করবেন, এ ব্যাপারে আমার কোন কথা নেই।
বাট আমার অন্য একটা কথা আছে। এই কথাটা বলা কারন "মুক্তিযুদ্ধ" বা "মুক্তিযোদ্ধা" শব্দটার প্রকৃতঅর্থ নিয়ে। কাইন্ডলী কোন দলের দিক থেকে চিন্তা না করে নিরপেক্ষভাবে আমার কথাগুলো খেয়াল করুন।
আনেক মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলার কোন নাগরিকের ই অধিকার নেই যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেন তাদের সাপোর্ট করার, তা সে যে দল এ ই হোক।
তবে আমার আপত্তি তার যোগদানের নির্দেশিত পথের ব্যাপারে।
সবার কাছে আমার প্রশ্ন, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মে যোগদান বলতে আমাদের কি বোঝানো হচ্ছে?
মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম হতে গেলে কি আমাকে ছাত্রলীগ করতে হবে?
মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম হতে গেলে কি আমাকে টেন্ডারবাজদের সমালোচনা করা হতে বিরত থাকতে হবে?
মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম হতে গেলে কি আমাকে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পসে ছাত্রলীগের সেঞ্চুরীয়ান ধর্ষনকারীদের মত দলবাজী করতে হবে?
মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম হতে গেলে কি আমাকে জোরপূর্বকপর্ণ মুভি বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দেয়াটাকে সমর্থন করতে হবে?
মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম হতে গেলে কি আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে দিনের পর দিন ৬০টাকা কেজি করে খাওয়ানো মন্ত্রীর গুনগান গাইতে হবে?
যে আওয়ামীলীগ নিজেদের মনে করে মুক্তিযুদ্ধের ধারক আর বাহক, যে ছাত্রলীগ মনে করে নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, সেই দলের ই লোক এক সময় করেছে ধর্ষনের সেঞ্চুরী। আর আজ করছে আমার-আপনার বোনকে জোর করে ধর্ষন করে পর্ণমুভি বানিয়ে তার ব্যবসা।
সংশ্লিষ্টরা, দয়া করে বলবেন কি আপনি কি মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম বলতে এই ধর্ষনকারীদের দলে ঢুকতে বলছেন? নাকি অন্য কোন প্লাটফর্মের কথা বলছেন?
প্লিজ অন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরী করুন, যে প্লাটফর্মে গেলে কোন ধর্ষনকারীকে সাপোর্ট করতে হবে না, কোন পর্ণ মুভি নির্মাতাকে সাপোর্ট করতে হবে না, কোন টেন্ডারবাজকে সাপোর্ট করতে হবে না।
আমরা, আবার বলছি, আমরা(আমি না), রাজাকার সাপোর্ট করিনা। এই দেশের মাটিতে প্রতিটা রাজাকারের বিচার চাই। চাইই চাই। এই দেশকে ভালোবাসে এমন সৎ মানুষের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেখতে চাই।
কোন যুদ্ধপরাধীর গাড়িতে না।
আবার মুক্তিযুদ্ধে অগ্রগামী কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচিত আমার-আপনার ই কোন এক অজানা বোনের ধর্ষনকারীদের গাড়ীতেও না।
মুখে মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধ বলতে বলতে ফ্যানা তুলে ফেলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দলের কোন এলাকার সাধারন সম্পাদক,অথচ ধর্ষন করে গোপনে ছবি তুলে তার ব্যবসা করে (প্রকান্তরে একজন পর্ন মুভি মেকার), এমন কারো গাড়িতেও না।
আপনার যারা আমাদের বলছেন, বা আমাদের ভোটব্যাংককে ব্যবহার করছেন, তারা কি তৈরী করেছেন কোন আলাদা প্লাটফর্ম? আমরা তো বি.এন.পি. করতে পারবো না, কারন তারা জামাত এর সাথে আছে। আমরা তো এরশাদকে সাপোর্ট করতে পারবো না কারন আওয়ামী, বি.এন.পি. এই জাতির সাথে বেইমানি করতে পারে, বাট আমরা এই প্রজন্ম তা করতে পারি না। আমরা তো বাম রাজনীতিকেও সাপোর্ট করতে পারছিনা তাদের সমাজতান্ত্রিক মানসিকতার কারনে। তাহলে আমরা কি করব? আপনারা কি দেখিয়েছেন পথ? পথ দেখাচ্ছেন না অথচ "মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম" টার্ম টা ব্যবহার করছেন যখন ইচ্ছা। নাকি আমাকে ছাত্রলীগ ই করতে ইনফ্লুয়েন্স করছেন?
জনাব, দেশ এর প্রতি ভালোবাসা শুধু আপনাদের পৈত্রিক সম্পত্তি না। আমি নাহিদও দেশকে ভালোবাসি। আমিও চাই এই বাংলার বুকে সব যুদ্ধাপরাধীদের ই বিচার হোক। হতেই হবে। আমিও চাই শেখ মুজিব হত্যার বিচার হোক। সাথে আমি জিয়া হত্যারও বিচার চাই। চাই ডঃ মিলন হত্যারও বিচার।
সুতরাং "মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম" এর জন্য আলাদা একটা রাজনৈতিক পথ তৈরী করুন। আলাদা একটা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম তৈরী করুন। যেখানে যেমন নেই কোন যুদ্ধাপরাধী, তেমনি নেই কোন ধর্ষনকারীও।
আমরা যেমন একজন যুদ্ধাপরাধীকে ঘৃনা করি ঠিক তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দলের কোন এলাকার সাধারন সম্পাদক বা বিশ্ববিদ্যালয় নেতার ধর্ষন করে গোপনে ছবি তুলে তার ব্যাবসার মানসিকতাকেও সমান ঘৃনা করি।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৩:৫২