নভেম্বর ২০১০
পরী বন্ধুবরেষূ,
দেখলেন তো!! নিজেকে যতটা গবেট মনে হয় তা আপনি নন। আপনিও অনেক কিছু জানেন যার অনেকটাই আমার কাছেও অজানা।
আজকের আকাশটা দেখেছেন? শেষ বিকেলে যখন সূর্য ডুবি ডুবি করছিল যখন গভীর আঁধারে ডুবে যাওয়ার কথা ছিল সব কিছু... ঠিক তখনি উল্টো সমস্ত আকাশ তীব্র একটা হলুদ আভায় ছেয়ে গেল। যেনো সমস্ত আকাশটা কেউ কাঁচা হলুদ দিয়ে মাখিয়ে দিল। আমি বহুকাল এমন সুন্দর আকাশ দেখিনি। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আমায় দিবেন না। আমি জানি। শেষ বিকেলে সূর্যের ক্ষীন আলোক রশ্মি মেঘের মাঝে বিকিরন এর সবই আমার জানা। কিন্তু এর সৌন্দর্য্য যে তীব্র ভাল লাগা মনের মাঝে দিয়ে যায় তার কোন ব্যখ্যা বিজ্ঞান কি দিতে পারবে? বিজ্ঞান হয়ত আমার হ্রদস্পন্দন ও তার কার্যকারিতা বলতে পারবে কিন্তু এই আলো যে হৃদয়ে যে কম্পন দিয়ে গেলো তা কিন্তু পরিমাপও করতে পারবেনা। যাক সে কথা। আমার বিকেলটাতেই ফিরে আসি। সে আলো দেখার পর মনটা খুব ভাল হয়ে গেলো। জানালা দিয়ে অনেকক্ষন তাকিয়ে থাকার পর রাস্তায় এসে দেখলাম। মনে হল জীবনে বেঁচে থাকার আকুতি মানুষের কত কিছুতেই না থাকে। এই যেমন আমার আরেকটা এমন আকাশ দেখার জন্য বেঁচে থাকতে ইচ্ছে হল। তখন এই আকাশটা যেনো কাউকে নিয়ে দেখতে পারি। বলতে পারি কতখানি দোলা দিয়ে গেলো আমার আকাশটা আমাকে।
সারাদিন কেবল নিজের কথাই বলি। কেমন আছেন আপনি? আপনার টিয়া পাখিটার কথা শুনে খুব খারাপ লাগল। কে যেনো বলেছিল.. পালা মায়ের জ্বালা বেশি। আসলেই তাই। যার উপর কোন অধিকার নাই তাকে যদি ভালবেসে ফেলি, তাকে যদি পেয়েও হারাই তখন কষ্টটা অনেক বেশিই হয়।
ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েন্ট এড করেন নি আজো। প্রতিদিন ডাক পিয়নের ডাক শোনার অপেক্ষায় থাকতে হয়। মাঝে মাঝে খুব দীর্ঘ মনে হয় সময়টা।
ভালো থাকবনে এবং হাসি যনেো সব সময় আপনার সঙ্গী হয়।
প্রলয়।
করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও
আঙ্গুলের মিহিন সেলাই
ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।
চুলের মতন কোনো চিহ্ন দিও বিস্ময় বোঝাতে যদি চাও ...
বর্ণণা আলস্য লাগে তোমার চোখের মতো চিহ্ন কিছু দিও!
আজো তো অমল আমি চিঠি চাই, পথ চেয়ে আছি,
আসবেন অচেনা রাজার লোক
তার হাতে চিঠি দিও, বাড়ি পৌঁছে দেবে ....
এমন ব্যস্ততা যদি শুদ্ধ করে একটি শব্দই শুধু লিখো, তোমার কুশল! ...
করুণা করে হলেও চিঠি দিও, ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি
দিও খামে
কিছুই লেখার নেই তবু লিখো একটি পাখির শিস
একটি ফুলের ছোট নাম,
টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে কিছু, হয়তো পাওনি খুঁজে
সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প
খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড় একা লাগে, তাই লিখো
করুণা করে হলেও চিঠি দিও, মিথ্যা করে হলেও বোলো, ভালবাসি !
পুনশ্চ : এবাররের কবি মহাদেব সাহা। কবিতার নাম "চিঠি দিও"।
--------------------------------------------------------------
নভেম্বর ২০১০
প্রলয়,
আপনার বন্ধুবরেষূ সম্বোধন টা দেখে হাসিও পেলো আবার ভালোও লাগল। হাসি পেলো হঠাৎ বুদ্ধদেব গুহর সবিনয় নিবদেন বইটর কথা মনে পড়ল। ভালো লাগল বন্ধু বলে ডাকলেন তাই।
সেদিন আকাশটা আমিও দেখেছি। হঠাৎ করেই চোখে পড়ল। এক ছুটে ছাদে চলে গিয়েছিলাম। ইচ্ছে করছিল দুহাত দিয়ে পুরো আকাশটা জড়িয়ে ধরতে। আচ্ছা.. সুন্দর কিছু দেখলেই কেন নিজের করে পেতে ইচ্ছে করে?
আপনি কিন্তু এবার নিজেই দেরি করে উত্তর দিলেন। ব্যস্ত ছিলেন বেশি? আচ্ছা আপনি কি করেন? দুঃখিত.. ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে ফেললাম।
ফেসবুকে ফ্রেন্ডরিকুয়েষ্ট ইচ্ছে করেই একসেপ্ট করিনি। কেন জানিনা চিঠি পেতে ও লিখতে ভালই লাগছে। এবং এও জানি ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করলে আপনি আর এভাবে লিখবেন না। তখন কেবল ক্ষুদে বার্তা চালাচালি হবে।
আমি কখনো চিঠি পাইনি। একবার একটা চিঠি পেয়েছিলাম। অবশ্য চিঠি বললে ভুল হবে। চিরকুট পেয়েছিলাম। প্রাপক কিংবা প্রেরকের নাম নেই। শুধু লেখা "আই লাভ ইউ"। খুব রাগ হয়েছিল। উহু.. লেখাটার জন্য না। লেখার মালিকের উপর। ভালবাসা প্রকাশের সাহস আছে অথচ নিজেকে প্রকাশের সাহস টা করতে পারলনা। কোনদিন জানতে পারলে খুব বকে দিতাম। পরের বার কাউকে লিখলে যেনো নামটাও লিখে। অন্তত উত্তর টা দিতে পারে।
আপনি অত দেরি করে লিখবেন না। খুব যদি ব্যস্ত থাকেন তবে অন্তত একলাইনের চিঠি দিয়েন "ব্যস্ত আছি" লিখে।
পরী।
পুনশ্চত্তর : কবি ও কবিতার নাম কেন লিখলেন? খুব রাগ হয়েছে। কবিতা পড়ে না জানলে খুজে খুজে দেখি। তাতে অনেক কবিতা পড়া হয়ে যায়। আজ লিখে ফেললেন বলে পড়া হলনা অন্য কোন কবিতা।
----------------------------------------------------------------
নভেম্বর ২০১০
পরী,
একটু ব্যস্ত ছিলাম। তাই সেবার দেরি হয়ে গিয়েছে। চেষ্টা করব এখন থেকে দেরি না করতে। কবি ও কবিতার নাম টা ইচ্ছে করেই লিখেছিলাম। যাতে অন্তত মনে না হয় কেবল মাত্র এ জন্যই লিখছেন আমাকে। আমার মানুষিক ক্ষুদ্রতার জন্য ক্ষমা করবেন।
জানিনা কেন জানি আপনার চিঠি পেয়ে মনে হল আপনি খুব নিঃসঙ্গ। হয়ত ভুল। তা না হলে আমার চিঠির জন্য অপেক্ষা করতেন না হয়ত।
আপনার চিঠির গল্পটায় খুব মজা পেলাম। আহা! কেউ তো অন্তত বলেছে। আচ্ছা যদি নামটাও বলে দিত তবে কি করতেন? উত্তর দিতেন? নাকি বকা দিয়ে দিতেন?
আমি কি করি জানতে চাওয়াটা কোন ব্যাক্তিগত ব্যাপার না একদমই। আমি একজন শিক্ষিত চাকর। আপনার বাসার যে বুয়া টা আছে তার থেকে আমার পার্থক্য আমাকে ভাল কাপড় পড়ে যেতে হয় আর অর্থের যোগান টা বুয়ার চেয়ে বেশি বলে সামাজিক ভাবে একটু সম্মানজনক অবস্থায় থাকি। বাদ বাকি সবই বুয়ার মতই। নির্দিষ্ট সময়ে যেতে হয়। নির্দিষ্ট কাজ করতে হয়। আবার সময় সময় কর্তার বকাও খেতে হয়। একদম মেনে নিতে পারিনা এই ছকে আঁকা জীবনকে। ইচ্ছে হয় সব ছেড়ে চলে যাই দূরে কোথাও। শান্ত নিস্তরঙ্গ কোন সমুদ্রের তীরে। ঝির ঝির করে বাতাস এসে গায়ে লাগবে আর ঢেউ গুলো আলতো করে ছুয়ে যাবে। নারিকেলের পাতার শব্দ থাকবে আর থাকবে পাখির ডাক। সাথে কি কেউ থাকবে? থাকলে মন্দ হয় না। বরং আরো ভালই লাগত।
ভালো থাকবনে এবং হাসি যনেো সব সময় আপনার সঙ্গী হয়।
প্রলয়।
অতন্দ্রিলা,
ঘুমোওনি জানি
তাই চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে
বলি, শোনো,
সৌরতারা-ছাওয়া এই বিছানায়
---সূক্ষ্মজাল রাত্রির মশারি---
কত দীর্ঘ দুজনার গেলো সারাদিন,
আলাদা নিশ্বাসে---
এতক্ষণে ছায়া-ছায়া পাশে ছুঁই
কী আশ্চর্য দু-জনে দু-জনা---
অতন্দ্রিলা,
হঠাত্ কখন শুভ্র বিছানায় পড়ে জ্যোত্স্না,
দেখি তুমি নেই ||
পুনশ্চ : আপনি শুধু বিড়ালের ছবি দেন কেন প্রোপিক এ?
-----------------------------------------------------------------
ডিসেম্বর ২০১০
প্রলয়,
আপনি তো ভারি ইমোশোনাল। সামান্য একটু জানতে চাইলাম বলে এতো ক্ষেপে গেলেন!! মানুষিক ভাবে ক্ষুদ্র আপনি এর পর বুয়ার সাথে নিজেকে দাড় করিয়ে কি উদ্ভট সমিকরন দিলেন!! খুব রাগ হয়েছে চিঠিটা পড়ে। এত আগ্রহ নিয়ে চিঠি খুলে মনটাই খারাপ করে দিয়েছেন। এমন পচা চিঠি আর কখনো লিখবেন না।
আমি নিঃসঙ্গ কিনা জানিনা। হুম এটা সত্যি অনেক বন্ধু আছে, আত্মীয় স্বজন সবাই আছে। কিন্তু জানেন.. তারপরও না কেমন জানি একটা একাকিত্ব ভর করে। সকলে সকলকে নিয়ে ব্যস্ত। যে যার মত নিজের কথা বলে। নিজেকে নিয়েই ভাবে। অন্যের কথা শোনার সময়টুকুও নেই কারো।
সেদিন মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেল। কোন কারন ছাড়াই খুব বিষাদে মনটা ছেয়ে গেল। খুব ইচ্ছে হল ছাদে যেতে। কিন্তু কাউকে রাজী করাতে পারলাম না। উল্টো বকা শুনতে হল ঘুম ভাঙ্গিয়েছি বলে। তারপর একা একাই ছাদে গেলাম। আকাশের চাঁদ টা এক পাশে হেলে গেছে। তারা গুলোও চাঁদের সাথে হেলে যাচ্ছিল একটু একটু করে। আহা!! চাঁদের কত ভাগ্য। সারাক্ষন তারারা তাকে ঘিরে থাকে। আচ্ছা যেদিন চাঁদ থাকেনা আকাশে, তারা গুলো কি কষ্ট পায়? কিংবা তারা গুলো কি কেবলই চাঁদের জন্যই ঝলমল করে? তবে কি তারারা নারী? যাদের একমাত্র কাজই অন্যকে তুষ্ট করা? খুব কান্না চাপছিল তখন। জানিনা কতক্ষন কেদেছি। হঠাৎই এক ঝাক পাখি ডাকতে ডাকতে চলে গেল মাথার উপর দিয়ে। ভোরের আলো একটু একটু করে আসছিল। সেদিন মনে হল.. আমি হয়ত আসলেই নিঃসঙ্গ।
জানি আজ আমিও আপনার মন খুব খারাপ করে দিলাম। আপনাকে বলেই হয়ত বলে ফেললাম কথাগুলো। কেন জানি মনে হল আপনার সাথে বলা উচিৎ নাকি উচিৎনা এসব ভেবে কথা বলার প্রয়োজন নেই। অধিকার বোধ বেশি হয়ে গেল না তো??
অনেকগুলো কবিতা পড়লাম। পেলাম না। এরপর একটা হিন্টস দিবেন। যাতে একটু বুঝতে পারি।
ভাল থাকবেন। আর মন খারাপ মার্কা চিঠি দিলে কিন্তু......
পরী।
পুনশ্চত্তর : আমি অনেকটা বিড়ালের মত বলে। আমি বিড়ালের মত ঘুমাতে, আলসেমি করতে আর আরাম করতে খুব পছন্দ করি। পারিনা একটাও। তাই হিংসায় জ্বলে পুড়ে বিড়ালের ছবি দেই। হা হা হা হা
----------------------------------------------------------------------
ডিসেম্বর ২০১০
পরী,
বন্ধুবরেষূ লিখতে গিয়েও লিখলাম না। যদি হাসা হাসি করেন। আপনাকে ঠিক বুঝতে পারিনা। মাঝে মাঝে মনে হয় এইতো চিনি, মাঝে মাঝে মনে হয় ধুর.. ঘোড়ার ডিম।
আমি সেদিন মোটেই রাগ করিনি। সত্যি বলছি। চাকরী নিয়ে খুব অশান্তিতে আছি। আমার আসলে চাকরী ধাতে সয়না। প্রতিদিন নিজের সাথে নিজেকে বোঝাপড়া করতে হয় এই চাকরী নিয়ে। যাই হোক। আমার কথা বাদ দিন।
আপনি যদি এত বিষন্ন থাকেন তবে আশ পাশের সবাই যে বিষাদগ্রস্থ হয়ে যায় তা কি আপনি জানেন? আমরা সকলেই কোন না কোন ভাবে একা। আমার দেখুন সকলেই কিন্তু সকলকে নিয়েই দিন কাটাচ্ছি। এটাই জীবনের অংশ। সুতরাং এত হতাশাগ্রস্থ হবেন না একদমই। আপনার লেখা পড়ে খুব কষ্ট পেয়েছি। আপনিও কম ইমোশনাল নন। সেটাকি বোঝেন। খুব বকা দিতে ইচ্ছে করছে। এমন করে কেউ কাদেঁ বোকা মেয়ে। নিজের আনন্দ নিজের কাছে। কেউ খুন করে আনন্দ পায় কেউ ভালবেসে। আপনি কিভাবে নিজের আনন্দ খুঁজবেন সেটা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। কিন্তু এভাবে আর কখনো নিজেকে কষ্ট দিবেন না।
আপনার চিঠি পড়ে খুব কষ্ট লেগেছে। সেদিন রাতে যদি আমি থাকতাম তবে আপনাকে আমি একা ছাদে যেতে দিতাম না। কাঁদতেও না। আপনি আর কখনো কাঁদবেন না। আর আপনি অধিকার / অনাধিকার এসব নিয়ে কখনো ভাববেন না। অন্তত আমার সাথে না। যা ইচ্ছে হয় বলবেন।
আগের কবিতাটি অমিয় চক্রবর্তীর। কবিতার নাম রাত্রি। এবারের কবিতাটি একজন বিখ্যাত ভারতীয় কবির। ওনার একটা সিরিজ এখনো প্রেমিক - প্রেমীকাদের হৃদয় কেড়ে নেয়।
ভালো থাকবনে এবং হাসি যনেো সব সময় আপনার সঙ্গী হয়।
প্রলয়।
আমি ছাড়া অনেককেই তো অনেক দিলে।
এর আকাশে ওর আকাশে
ওষ্ঠপুটের অনেক পাখি উড়িয়ে দিলে
পায়রাকে ধান খুটিতে দিলে খোয়াই জুড়ে
বুকের দুটো পর্দাঢাকা জানলা খুলে
কতজনকে হাত-ডোবানো বৃষ্টি দিলে।
কত মুখের রোদের রেখা মুছিয়ে দিলে নীল রুমালে।
আমি ছাড়া অনেককেই তো অনেক দিলে।
চায়ের কাপে মিষ্টি দিলে হাসির থেকে
নকশাকাটা কাঁচের গ্লাসে সরবতে সুখ মিশিয়ে দিলে।
নখের আঁচড় কাটতে দিলে ডালিমবনে
দাঁতের ফাঁকে লাল সুপুরি ভাঙ্গতে দিলে।
আমি ছাড়া অনেককেই তো অনেক দিলে।
একটা জিনিস দাওনি কেবল কাউকে তুমি
আলমারিটার ঝুলন চাবি।
শূন্যতাকে রঙীন করার সাম্পু সাবান
সায়া শাড়ীর ভাঁজের নিচে
একটা ছোটো কৌটো আছে।
তার ভিতরে ভোমরা থাকে।
সে ভোমরাটি সকল জানে
কোন্ হাসিতে রক্ত ঝরে ঠিক অবিকল হাসির মতো
সে ভোমরাটি সকল জানে
কোন রুমালে কান্না এবং কোন আঁচলে বুকের ক্ষত
দেয়ালজুড়ে বিকট ছায়া ভাবছো বুঝি অন্য কারো?
কার ছায়াটি কিরূপ গাঢ় সে ভোমরাটি সকল জানে।
আমায় কিছু লিখতে হবে
লিখতে গেলে ভোমরাটি চাই।
তোমার ঘরের আলমারিটার ঝুলন-চাবি
আমায় দেবে?
পুনশ্চ : আমদের কি কোনদিনও দেখা হবে না?
------------------------------------------------------------------------
ডিসেম্বর ২০১০
প্রলয়,
কেমন আছেন আপনি? কখনোই জিজ্ঞেস করা হয়না। আজ হঠাৎ মনে হল। খুব স্বার্থপরের মত নিজের কথাই বলি। আপনার কিছু জানাই হয়না। আমাকে সারাক্ষন জ্ঞান দিচ্ছেন অথচ নিজে চাকরী নিয়ে হা পিত্যেস করছেন। চাকরী করতে হয় জীবনের তাগিদে। সেটাকে সেভাবেই দেখুন। আর মনের খোরাক অন্যভাবে মিটিয়ে নিন। যেটা করতে ভালো লাগে। তাহলেই দেখবেন চাকরীর ব্যাপারটা আর মাথায় থাকবে না।
আচ্ছা আপনি কি অনেক কবিতা পড়েন? ক্লু্ না দিলেই বুঝতেই পারতাম না। এটা পুর্নেন্দু পত্রীর অনেককেই তো অনেক দিলে। আমি আপনার মত অত কবিতা পড়িনা। তবে আপনার দেওয়া কবিতা গুলো পড়ার পড় কেন জানি কবিতার প্রতি একটা দুবর্লতা সৃষ্টি হল।
আজ আমি একটা দিচ্ছি, দেখি আপনার জানা কিনা।
তুই কি আমার দুঃখ হবি?
এই আমি এক উড়নচন্ডী আউলা বাউল
রুখো চুলে পথের ধুলো
চোখের নীচে কালো ছায়া
সেইখানে তুই রাত বিরেতে স্পর্শ দিবি।
তুই কি আমার দুঃখ হবি?
তুই কি আমার শুষ্ক চোখে অশ্রু হবি?
মধ্যরাতে বেজে ওঠা টেলিফোনের ধ্বনি হবি?
তুই কি আমার খাঁ খাঁ দুপুর
নির্জনতা ভেঙে দিয়ে
ডাকপিয়নের নিষ্ঠ হাতে
ক্রমাগত নড়তে থাকা দরজাময় কড়া হবি?
একটি নীলাভ এনভেলাপে পুরে রাখা
কেমন যেন বিষাদ হবি?
তুই কি আমার শুন্য বুকে
দীর্ঘশ্বাসের বকুল হবি?
নরম হাতের ছোঁয়া হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি,
নীচের ঠোট কামড়ে ধরা রোদন হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি
প্রতীক্ষার এই দীর্ঘ হলুদ বিকেল বেলায়
কথা দিয়েও না রাখা এক কথা হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি
তুই কি একা আমার হবি?
তুই কি আমার একান্ত এক দুঃখ হবি?
আচ্ছা, আমাকে কি অনেক ছিটিয়াল মনে হয়? কিংবা পাগলাটে ধরনের। কিংবা মনে হয় এই মেয়েটি বড্ড খেয়ালীপনায় ভরা। হাহাহা হাহা আপনি তো আমাকে কেবল কাগজেই চেনেন। আমি বড্ড খেয়ালী আগেই বলি। বৃষ্টি দেখলে আমার মাথায় গিট্টু লেগে যায়। আমার খুব ভিজতে ইচ্ছে হয়। প্রচন্ড ঠান্ডায় সবাই যখন চা কফি করে তখন আমার কোন আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে হয়। মাঝ রাতে ইচ্ছে হয় আধো আলোয় আধো অন্ধকারে শহর ঘুরতে। দুপুর বেলায় ইচ্ছে হয় কাউকে বলি মাথায় তেল দিয়ে চুল বেনি করে দিতে। আর আমি বসে বসে হুমায়ুন আহমেদ এর বই পড়ব আর চোখ ফুলাবো। খুব ইচ্ছে হয় প্রচন্ড ঝাল দিয়ে শুটকি মাছ খেতে মাঝে মাঝে। চোখের পানি আর ভাত একাকার হয়ে যাবে। আর শেষ বিকেলে যখন সূর্য্য ডোবে তখন খুব মন খারাপ হয়। ইচ্ছে হয় ডুবে যাওয়া সূর্য্যটাকে প্রান ভরে দেখতে কোন নদীর ধারে বসে। মনে হয়... কাল যদি আর না দেখি এই সূর্য্যটা।
ভাল থাকবেন।
পরী।
পুনশ্চত্তর : আসছে ১৬ ডিসেম্বর এ সন্ধ্যায় আসব ছবির হাটে। আসবেন তো? পারবেন তো চিনে নিতে আমাকে??
(চলবে)
পরী ও প্রলয়ের গল্প - প্রথম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৪৩