কিন্ত্ত এই হিজাব তার জন্য কাল হয়ে দাড়ায়। পরবর্তী কয়েক বছর তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হোন তার সহপাঠীদের কাছ থেকে। তাকে গালিগালাজ শুনতে হয়, তার গায়ে থুথু নিক্ষেপ করা হয়। স্কুলের ভিতর ও বাহিরে তার গায়ে লাথিও মারা হয়। এমনকি স্কুলের শিক্ষকরাও তার পোশাক নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে লাগলেন। আমাদের দেশেও কোনো কোনো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামের কুলাঙ্গার হিজাব ও বোরখা পরিহিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। এরকম খবর হরহামেশাই আমাদের সংবাদপত্রে আসে।
পুরো হাই স্কুলের সময়টা জুড়ে নাজমা এই বৈষম্যের শিকার হোন। তার শিক্ষাজীবণ শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্ত্ত তিনি ক্লাসে প্রথম হয়ে হাইস্কুলের গন্ডি পার হোন। অতঃপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোন। সেটা ছিল ৯/১১ সময়কার ঘটনা। তাকে প্রায়শই সন্ত্রাসী বলে ডাকা হতো। বেশ কয়েকবার তাকে ধাওয়া করা হয়।
১লা অক্টোবর ২০১০ এ, নাজমা একটি অনলাইন হিজাব স্টোর খুলেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিজাবী নারীরা নাজমার সাথে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে লাগলেন। নাজমার মতো আরো অনেকেই বৈষম্যের শিকার হয়েছেন স্কুল কলেজে। অনেকের চাকরী চলে গেছে হিজাব করার কারণে। নাজমা ভাবতে লাগলেন, কি করে হিজাব পরিহিত নারীদের প্রতি অন্যদের ধ্যান ধারণা পরিবর্তন করা যায়। এতে হয়তোবা হিজাব পরিহিত নারীদের প্রতি বৈষম্য কমে আসবে।
২০১৩ সালের ১লা জানুয়ারী, নাজমা www.worldhijabday.com নামে একটি ওয়েবসাইট ও ফেইসবুকে World Hijab Day নামের একটি ফ্যান পেইজ চালু করলেন। সেইসাথে নাজমা সকল মত ও ধর্মের নারীদের আহবান করতে লাগলেন, যেন তারা প্রতি বছর ১লা ফেব্রুয়ারী একদিনের জন্য হলেও হিজাব পরিধান করে হিজাব পরিহিত নারীদের পাশে দাড়ায়, তারা কিরূপ বৈষম্যের শিকার হয় সেটা যেন অনুধাবন করতে পারে।
নাজমার সম্পূর্ণ লেকচারটি ইউটিউব থেকে শেয়ার করা হলো
আশা করি আমাদের দেশের হিজাব পরিহিত নারীরা এই দিবসটিকে নাজমার দেশ, আমাদের দেশ, বাংলাদেশেও জনপ্রিয় করে তুলবে। এখানে উল্লেখ্য যে, আজকাল কিছু নারী মাথার চুল ঢেকে রাখে ঠিকই কিনত্ত অত্যন্ত আটসাট পোশাক পরে যাতে তাদের শরীরের অবয়ব ফুটে উঠে। এটা অবশ্যই অবশ্যি হিজাব না।
তথ্যসূত্রঃ
worldhijabday.com
www.facebook.com/WorldHijabDay
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৫
১. ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৪ ০