খুবই কাছাকাছি সময়ে দুটি বিপরীত মেরুর সম্প্রদায়ের প্রধাণ ধর্মীয় উৎসব পালিত হচ্ছে। বিপরীত মেরু বললাম কেন? খুবই সহজ। এক দল বহু ঈশ্বরের (যদিও সনাতন ধর্মের অনেক অনুসারী আছে, যাদের কেউ একেশ্বরবাদী, আবার কেউ সর্বেশ্বরবাদী। তবে বহু ঈশ্বরবাদীদের চাপে সনাতন ধর্মীয় একেশ্বরবাদীরা চাপা পরে গেছে বলেই অনুভূত হয়) আরাধনা করে। আর অন্যদল বিশুদ্ধ একেশ্বরবাদী, যারা সৃষ্টিকর্তা, লালনকর্তা, পালনকর্তা অথবা সংহারকর্তা হিসেবে একটিমাত্র সত্ত্বায় বিশ্বাস ও তাঁর আরাধনা বা উপাসনা করে থাকে।
এই বিশুদ্ধ একেশ্বরবাদীরা নিজেদের পরিপূর্ণভাবে সৃষ্টিকর্তার কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে, তাদের বলা হয় মুসলিম, যার অর্থ আত্মসমর্পণকারী। এই মুসলিমদের একটি অন্যতম প্রধাণ ধর্মীয় উৎসব হলো হজ্জ্ব। আর্থিক ও শারিরীকভাবে সামর্থবান মুসলিমরা জীবণে একবার হজ্জ্ব পালন করে থাকে। আর হজ্জ্ব পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র ভূমি মক্কায় গমণ করে। সেখানে হাজীরা যে বাণীটি প্রতিনিয়ত উচ্চারণ করে সেটিই হলো তালবিয়া,
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَشَرِيْكَ لَكَ
যার অর্থ, আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত! আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোন অংশীদার নেই। নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার।
আপনার কোন অংশীদার নেই। ভালো করে লক্ষ্য করুন, এখানে দুবার উল্লেখ আছে আপনার কোন অংশীদার নেই। তো আমার প্রশ্ন, একজন মুসলিম সজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় কি করে এমন কোন উৎসব, অনুষ্ঠান বা কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারে যেখানে আল্লাহ্ -র সাথে কোন অংশীদার সাব্যস্ত করা হয়?
আজ থেকে আমিও একটা প্রবাদ চালু করলাম, সেটা হলো, "ধর্ম যার যার, উৎসবও তার তার।" আমার মতে অসাম্প্রদায়িকতা হলো, অন্য সম্প্রদায়কে শ্রদ্ধার চোখে দেখা, তাদের কোন ক্ষতি না করা। নিজের বিশ্বাস বিসর্জন দিয়ে, অন্য সম্প্রদায়ের উৎসবকে নিজের উৎসব মনে করে, তাতে নির্বোধ মূর্খের ন্যায় গা ভাসিয়ে দেয়া কোন ভাবেই অসাম্প্রদায়িকতা নয়। এর নাম সুবিধাবাদীতা।
তথ্যসূত্রঃ
ছবি বিবিসির সৌজন্যে