ফেসবুক এক আজব জিনিস। আমার কাছে ফেসবুক অনেকটা সমাজের মত। সমাজে যেমন সকল ধর্মের,মতের লোকজন থাকে তেমনি ফেসবুকেও সকল মতের , ধর্মের লোকজন আছে। সমাজে চলার জন্য যেমন বাকী সকলের মতামত কে গুরুত্ব দিতে হয় সমাজকে সুন্দরভাবে তেমনি ফেসবুকেও কমিউনিটি ঠিক রাখার জন্য অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হয়। কিন্তু লোকজন আজকাল ভাবসাব এমন যে উনার ফ্রেন্ডলিষ্ট এর সবাইকে উনার মতের হতে হবে। এমনি কারো সাথে ব্লগ লেখার খাতিরে, ফোরাম কিংবা টেকনোলোজি এর কারনে ফ্রেন্ড হইলেও উনার ব্যাক্তিগত-রাজনৈতিক মতামত তাদের মত হতে হবে। অনেকে একধাপ এগিয়ে তাদের গুরুরা কেন তাদের মতের মিল নাই এমন লোকের সাথে চলাফেরা করে-ফেসবুকিং করে!!! সবার নিজস্ব একটা আলাদা চিন্তা চেতনা বিশ্বাস, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে। সময়ের সাথে সাথে এটা একেদিকে পরিবর্তন হয়। কিন্তু জোর করে কাউকে কিছু বলার ব্যাপারটা আমার ভাল লাগে না। এটা অনেকটা আমার কাছে কারো ধর্ম নিয়ে কথা বলার মত। কেউ যদি এখন বলে আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে শিবির করে কিংবা নাস্তিক এমন পোলাপাইন আছে কেন? আমি তাকে বলব আপনাকে *TN. আমি বর্তমানে শিবির করে এমন অনেক পোলাপাইনের সাথে ল্যাংটাকাল থেকে অনেক ভাল একটা সময় কাটাইছি, যেই সৃতিগুলো অনেক মজার এবং আমার জীবনের গুরুত্বপুর্ন। এমনকি আমার সবচেয়ে বেষ্ট ফ্রেন্ড সেই ল্যাংটাকাল থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধু কড়া শিবির। আমি কড়া এন্টি বামপস্থী কিন্তু আমার ভার্সিটির ইউনিয়নের ভাইদের সাথে আমার সম্পর্ক অনেক ভাল, অনেকটা বেষ্ট ফ্রেন্ডের মতই।
যারা একটু কড়া উগ্রবাদী তারা শেষমেষ আনফ্রেন্ড বা ব্লক করে দেয়। এইভাবেই একজন আরেকজনকে সামান্য মতভেদের কারণে বন্ধুত্ব ছিন্ন করে ফেলে অথচ সমাজের মতই সুন্দর একটা কমিউনিটির পরিবেশ গড়া যেত ফেসবুকে। অনেকেই এতটা উগ্রবাদী যে কেউ যদি আমারদেশ এর লিংক কিংবা বাঁশের কেল্লার একটা ভিডিও লাইক কিংবা শেয়ার দেয় তবে সাথে সাথেই আনফ্রেন্ড-ব্লক অথচ কেউই তাদের বোঝাতে বা ফেরাতে চেষ্টা করেনা।
তাই সবার উদ্দেশ্যে বলি আগে মানুষ হোন। উগ্রতা পরিহার করে অন্যের মতকে গুরুত্ব দিন। আপনার সাথে তার যদি টেকনোলজী, ব্লগ, ফোরামের কারণে বন্ধু হন তাহলে সেই কারনেই বন্ধুত্ব রাখুন। সে নাস্তিক কি আস্তিক, আওয়ামী-বিএনপি-শিবির কিনা এতকিছু নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। তার কোন লিংক, লেখা বা অন্য যেকোন কিছু আপনার মতের বিরুদ্ধে যায় তবে ইগ্নোর করুন বা যদি ইচ্ছা হয় যুক্তি-তর্ক দিয়ে খন্ডন বা প্রতিবাদ করুন। যদিও বলতে পারেন "আমার ফ্রেন্ডলিষ্ট এ কে থাকবে না থাকবে সেটা আমার ব্যাপার" কিন্তু সামান্য মতভেদের কারণে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলা যে অন্যের মতকে তার মতের উপরেই অটল রাখা সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭