“মেয়েরা যতরকম করেই অপমানিত হোক না কেন, তা শেষ পর্যন্ত রূপকায়িত হয় যৌনতার মাধ্যমে। যে যৌনতা নারীর দায়িত্বের মধ্যে ফেলা হয়, এই যৌনতাই আবার নারীর লজ্জা, আবার বেশ্যাবৃত্তি, কখনো কখনো আত্ম-কালিমালেপন। এই বিষয়গুলোর প্রভাব সব নারীই অনুধাবন করেন, তবে সেটি যে সবসময় শতভাগ অনুধাবন করেন তা নয়, বলতে পারেন কার্যকরভাবে নারীরা বিষয়গুলো অনুধাবন করেন না। এই সকল কথাকে চারটি অক্ষরে গুটিয়ে আনা যায়। না fuck নয়, cunt(কামের সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত নারী)। আমাদের আত্ম-ঘৃণার জন্ম এখান থেকেই; আমরা কামের সামগ্রী, এই ভাবনা থেকে। আর এটাই আমাদের জীবনের নির্যাস, আমাদের পাপ।” -কেট মিলেট, দ্য প্রস্টিটিউশন পেপারস
গুগল.কম.বিডি তে কি কি সার্চ হচ্ছে সেটা একবার দেখে আসি :
ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের একটি বাংলা সংস্করণ আছে। এটা অনেকেই ব্যবহার করেন। সাম্প্রতিক এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বাংলাদেশ থেকে গুগলের বাংলা সংস্করণে বেশি খোঁজা হয় অশ্লীল কাহিনি ও ছবি। ইংরেজি ২৬টি বর্ণের ২০টিতেই অশ্লীল শব্দ খোঁজার হার বেশি। এমনকি তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ নম্বরেও অশ্লীল শব্দগুলোই জায়গা পেয়েছে। আর যেসব অশ্লীল শব্দ, ছবি, যৌন উদ্দীপক বইয়ের খোঁজ করা হয়, সেগুলোর ডিজিটাল সংস্করণ যথেষ্ট পরিমাণেই আছে ইন্টারনেটে। কখনো সেসব ইউনিকোড বাংলায় লেখা কখনোবা বই থেকে স্ক্যান করা।
বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটে অশ্লীল ওয়েবসাইট দেখার প্রবণতা এবং দেশি অশ্লীলও পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট নিয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন একটি পর্যবেক্ষণ করে।পর্যবেক্ষণের পর সংস্থাটি ৮৪টি ওয়েবসাইটের একটি তালিকা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) দিয়েছিল।এরপর সেই সাইটগুলো বন্ধ করে বিটিআরসি।
সম্প্রতি আরেকটি পর্যবেক্ষণে বাংলা গুগলে অশ্লীল শব্দ খোঁজার হার বেশি বলেদেখা যায়।
সমাজ গবেষকদের দাবি অনুযায়ী, গুগল বিডিতে ইংরেজি ২৬ অক্ষর একের পর এক দিয়ে দেখা গেছে, অশ্লীল শব্দ সবচেয়ে বেশিবার খোঁজা হয় ‘বি’ দিয়ে।‘এ’তে খোাঁজ হয় বিদেশি অশ্লীল ছবি। অশ্লীল শব্দ খোঁজার তালিকা থেকে বাদ পড়া অক্ষরগুলো হলো ডি (ঢাকা শেয়ারবাজার), ই-(একাত্তরের চিঠি), টি (টাকা আয়), ইউ ও ডব্লিউ (উইকিপিডিয়া) কোষ, শুধু ‘কিউ’ অক্ষর দিয়ে কোরআনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শব্দ।
পর্নোগ্রাফিক ও সাইবার অপরাধ :
বর্তমানে এমন ঘটনা প্রায়ই শোনা যায় যে, ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগের অন্য কোনো সাইট থেকে নারী ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে অন্য ওয়েবসাইটে তুলে দেয়া হচ্ছে। অন্য দিকে কিছু কিছু সিচুয়েশানে ছবিগুলো ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করে বা সুপার ইম্পোজের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে প্রতিদিন কতজন নারী সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
বর্তমানে দেশে ৫৫ লাখেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করছে। দেখুনতো একবার আপনার সাজেশানে কয়টা ফেইক মেয়েদের ছবি সব ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে ।
মোবাইলফোন ও ইন্টারনেট বাংলাদেশের অবস্থা :
উন্নত বিশ্বে পর্নোগ্রাফির সবচেয়ে বড় সূত্র হচ্ছে ওয়েবক্যাম। এটি সাধারণত ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে থাকে। অন্তরঙ্গ প্রেমিক-প্রেমিকারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা নিজেদের অন্তরঙ্গ বিষয়গুলো এতে শেয়ার করেন। সেখান থেকে এটি তৃতীয় কোনো পক্ষ তুলে নিয়ে ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারেন। বিশ্বে এ রকম অনেক সাইট রয়েছে। বাংলাদেশেও ওয়েবক্যামে এডাল্ট চ্যাটিং বাড়ছে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হচ্ছে, এ রকম সেবার মনিটরিং করার খুবই দুরূহ।
নিম্নমানের মোবাইল হ্যান্ডসেটে বাংলাদেশের বাজার ভরে গেছে। আড়াই হাজার টাকা মূল্যের হ্যান্ডসেটেই এখন ভিডিও ছবি তোলার ব্যবস্থা রয়েছে। সে কারণে এর নেতিবাচক ব্যবহার হচ্ছে। মোবাইল ফোনে তোলা ছবি ইচ্ছে হলেই যেকেউ ফেসবুক, ব্লুটুথ বা এমএমএস করে শেয়ার করতে পারছে। তা ছাড়া নেটে তো শেয়ার করা যাচ্ছেই। বিশ্বাস করে কেউ কাউকে দিলে সেটি অন্যরা বিশ্বাস ঠিক না রেখে ওয়েবসাইটে আপলোড করছে। এতে করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এসব পর্নো।
আগামী পর্বে বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফী নিয়ে আরও বিস্তারিত লিখব । সাথে সত্য কিছু ঘটনাও আপনাদের সামনে নিয়ে আসব ।
ধন্যবাদ ।
রেফারন্স :
১। http://www.bdtodaynews.com
২। http://www.dailynayadiganta.com
৩। http://oncinemabd.com
৪। http://www.bdmonitor.net
৫। http://www.sachalayatan.com
প্রথম পর্ব :
ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি ও অন্যান্য (পর্ব - ১)