কিছু লিখার ছিল না। অনেকদিন লিখিও না । জানি না কেন । হয়ত আগের মতো লেখার ইচ্ছা হয় না । স্টাডির কারনে সময় ও পাই না। আজকের ঘটনাটি কেন যেনো শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো । সত্য ঘটনা তাই শেয়ার না করে পারলাম না ।
কয়েকদিন আগে আমার এক ডাক্তার বান্ধবীর সাথে কথা হচ্ছিল । আমরা কথা হলেই প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করি । ও ওর ডাক্তারী আর আমি ... যাইহোক, ওদের মেডিকেলে গ্রাম থেকে সিরিয়াস এক ফিমেল রোগী এসেছে। মেয়েটির বয়স ১৫ বছর । গ্রাম্য সারল্য , এলোমেলো চুল , হাসি কিছুই নেই ওর মাঝে।
লিকলিকে একটা দেহ । লম্বা অনেকদিনের ইউজ করা একটা সালোয়ার কামিজে আবৃত । চোখে শুধুই ভয়ার্ত চাহনী । আর চোখের নিচে কালছে দাগ বলেই দিচ্ছে ভালই অসুস্থ সে ।
ওর ব্লিডিং হচ্ছিল তাই আ্যডমিট হইছে । আমার বান্ধবীর ঐ রাতে ক্লিনিকে ডিউটি ছিল তাই সেই ওকে আট্যান্ড করলো । মা,বড় বোন আর চাচারা ওকে নিয়ে আসছিল । মেয়ে বলে আত্নীয়রা ওকে কেবিনে রাখতে চাইলো । রাখাও হলো ।
ওরা কি কি টেস্ট করলো । কিন্তু কিছুই ধরতে পারছিল না । আমি ডাক্তার না তাই বলতে পারছি না । (ক্ষমা প্রার্থী) ... এদিকে ডাক্তার যারা যারা নাইট ডিউটিতে ছিল তারাও ধরতে পারছেন না । এদিকে মেয়েটি কান্না ও চিৎকার করে ভাসিয়ে দিচ্ছে। স্বাভাবিক একটা পেইন কিলার আর স্লিপিং পিল দিয়ে ওকে সেই রাতের জন্য রাখা হলো । পরেরদিন আর ভাল ডাক্তার আসবেন সকালে ।
পরের দিন বড় ডাক্তার রা দেখে কিছু মেডিসিন দিয়ে গেলেন । ঐ দিন রাতে সে আবার কান্না শুরু করলো সাথে ওর ব্লিডিং। আমার বান্ধবীর ঐদিন রাতেও ডিউটি ছিল । সে কেবিনে আইসা মেয়েকে প্রশ্ন করলো আবার কান্না কেনো ? ব্যাথা আছে নাকি । মেয়েটি কিছুই বল্ল না । শুধুই কান্না ।
আমার ডাক্তার বান্ধবী ওকে বল্ল সব খুলে বলতে সে কাউকে বলবে না । সুস্থ হয়ে উঠার জন্য ওর সব জানা প্রয়োজন । কেস হিস্ট্রি জানলে ওর চিকিৎসা ভালো হবে । মেয়েটি বল্ল সে বলতে পারবে কিন্তু আমার বান্ধবী ছাড়া আর কেউ রূমে থাকতে পারবে না । সো তাই হলো । ডাক্তারনী সবাই কে বের করে দিল ।
ব্যাথায় কাতর মেয়েটি তখন বলা শুরু করলো - ওর বড় বোনের স্বামী ওকে মাস পাচেক আগে জোর করে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক করেছে । সেটা একদিন ছিল না । একাধিক বার । মেয়েটা কনসিভ করছিল । ওর দুলাভাইকে জানালে সে বল্ল কাউকে যাতে না বলে , বল্লে ও ওর বড় বোনকে তালাক দিবে । আর ওর সমস্যা তো আছেই । মেয়েটি এহেন অবস্থা দেখে নিজেই নিজের আবরশান করছে । আমার বান্ধবী টি সাথে সাথে ওকে চেক করলো । কথা সত্য । সে খুব মারাত্নক ভাবে আহত । পরিবারের কাউকে বলতে পারে নাই । কিভাবে বলবে --- যদি বলত তবে বড় বোনের তালাক হত আর ওকে সামাজিক বিড়ম্বনা সহ্য করতে হতো । হয়তবা ও সুইসাইড করতো ।
একবার ভেবে দেখুন মেয়েটির মনের অবস্থা । সে যদি পরিবারকে বলে দিত তবে বোন টা স্বামী পরিত্যাক্তা হিসাবে গন্য হত আর মেয়েটে সমাজের চোখে ঘৃন্য হয়ে যেত । কতটুকু অসুস্থ সমাজে আমাদের বসবাস ।
ধিক এইসব সুবিধালোভী পুরুষদের । খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম শুনে । তাই শেয়ার করে ফেল্লাম ।
ধন্যবাদ