প্রেম করে সফল হয়েছেন এই ধরণের ঘটনা শুনলে এখন তাজ্জব হয়ে যাই। যেই "কাপল" কে দেখি অনেক দিন প্রেম করে অবশেষে বিয়ে করেছেন তাদের দেখলে মাঝে মধ্যে এলিয়েন মনে হয়। বেশীর ভাগ রিলেশন শিপ এখন গড়ে উঠে এখন একটা মোহে পড়ে, প্রথমে কেউই বুঝে না কি করছে বা কি হচ্ছে! পরে একটা রিলেশন শিপে গভীর ভাবে ঢুকে যাবার পর তাল ফিরে পায়, হায় হায় কি হয়ে গেল? আমার সাথে ওর তো অনেক অমিল, আমাদের ফ্যামিলি তো মেনে নিবে না, এই রিলেশন শিপের ভবিষ্যত নাই, এই সব চিন্তা ভাবনার ফলেই সমস্যার সূচনা হয়। এবং একটা সময় এইটা ব্রেক-আপ এ রূপ নেয়। ব্রেক-আপ জিনিসটাও এখন অনেক অন্যরকম, ইটস লাইক ফাইট ; একজন হারবে একজন জিতবে। যে Looser সে পস্তাবে আর যে জিতেছে সে অন্য একজনের হাত ধরে চলে যাবে sad যদিও আমার মতে দুইজনই লুসার কারণ রিলেশন শিপ টিকিয়ে রাখতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এইবার পোস্টের আসল কথায় আসি, এইরকম ব্রেক-আপ ঘটলে মানুষ অনেক আপসেট হয়ে যায়, দিশেহারা হয়ে টিনেজার রা অনেক উলটা পালটা কাজ করে বসে। এখন এক নজরে কয়েকটা পদ্ধতি দেখে নেই কি করলে এই ব্রেক-আপ পরবর্তী সময়টা নিজেকে ভালো রাখতে পারবেন।
১ / প্রথমে চিন্তে করুন টপ-টু-বটম কি কি কারণে আপনাদের ব্রেক-আপ হয়েছে, অনেক সময় দেখবেন কোনো যথাযথ কারণ পাচ্ছেন না। তবে একটা না একটা কারণ অবশ্যই আছে ভালো মতো চিন্তা করলেই পেয়ে যাবেন। পজেটিভলি দেখুন আপনারা একসাথে যতদিন ছিলেন ভালো ছিলেন, তবে আপনাদের থাকাটা ভবিষ্যতের জন্য ভালো না হওয়াতেই আপনারা আলাদা হয়েছেন। আজ হোক কাল হোক এটা হবেই যদি আপনাদের ভিশন এক না হয়ে থাকে।
২ / যদি ব্রেক-আপ টা আপনার সিদ্ধান্ত হয়ে থাক তবে এটা নিয়ে আর ভাবার কোনো দরকার নেই। আপনি মন থেকে যেটা চেয়েছেন সেটাই করেছেন, এইটাকে আবেগ দিয়ে মেপে যদি ফিরে যাবার চিন্তা করেন তাহলে অনেক বড়ো ভুল করবেন। তাই যা করেছেন ভালো করেছেন এটা ভেবে এগিয়ে চলুন। মনে রাখবেন আপনি হয়তোবা চাইলেও তার সাথে এখন থাকতে পারবেন, তবে সেটা আপনার নিজের জন্যেই ভালো হবে না।
৩ / ভুলেও ব্রেক-আপ করে কোনো প্রকার যোগাযোগের চেষ্টা করবেন না, নো ফেসবুকিং, নো আই-এম, নো টেক্সট, নো ভয়েস কল। যতদিন না আপনি নিজেকে নরমাল না করতে পারবেন ততদিন কষ্ট করে হলেও যোগাযোগ বন্ধ রাখুন। কারণ যোগাযোগ করলেই দেখবেন একপক্ষ একটু রোমান্টিক হয়ে যাবে, তাই পুরোপুরি এভয়েড করূন সব ধরণের কন্ট্যাক্ট। যদি খুব জরূরী কিছু বলার থাকে নোটস, পড়াশোনা এইসব নিয়ে তাহলে সেই সীমাটা ততটুকের ভিতরেই রাখুন এর বেশী না।
৪ / ব্রেক-আপ করার পর অনেক ভাবেই মনে হতে পারে আমরা একসাথে থাকতে পারি নি কি হয়েছে? আমরা তো ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম, তাই ফ্রেন্ড থাকি। ভুলেও না, ফ্রেন্ডশীপের চিন্তা করবেন না। একবার আলাদা হয়েছেন ব্যস পুরো সব রিলেশন শিপ কাট করে ফেলুন। মনে রাখবেন কখনই সেই আগের ফ্রেন্ড হতে পারবেন না, এটা শুধু আপনার জন্য একটা বার্ডেন হয়েই থাকবে। সো নো গুড অফ বিইং ফ্রেন্ডস, ওয়ান্স ইট'স ডান।
৫ / বি ক্রিয়েটিভ, সবার মধ্যে কিছু না কিছু করার প্রবণতা থাকে, সেটার পিছনে সময় দিন। দেখবেন খুব ভালো কিছু করতে পারছেন। খাতা খুলে ছবি আকুন - যা ইচ্ছা, লিখুন - কবিতা, গল্প হোয়াটএভার, ইভেন মাথায় কিছু না আসলে নিজের নামটাই সুন্দর করে লিখন, দেখবেন লেখার অনেক গুলো স্টাইল আপনি আবিষ্কার করে ফেলেছেন। বাগান করার শখ থাকলে সেটা করুন, কোনো কিছু পোষার ইচ্ছা থাকলে সেটা করুন, নিজের সাথে কথা বলুন - নিজেকে বলতে পারেন, ইট'স ওভার নাউ টাইম টু মুভ অন, বিভিন্ন ইন্সপায়ার হবার মতো কথা বলে নিজের আত্নবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুন। গুছানোর কাজটা করেও খুব ভালো সময় কাটবে, নিজের ঘর গুছান, পড়ার টেবিল সুন্দর করে গুছাতে পারেন, এসময় ভাবতে পারেন যে আপনার লাইফ টাকেই আবার নিজে হাতে গুচ্ছাছেন।
"It's a new world - it's a new start
It's alive with the beating of young hearts"
৬ / বন্ধুদের এসময় সবচেয়ে আপন করে নিন, ওদের সাথে সব কিছু শেয়ার করুন। আড্ডা দিন চুটিয়ে, রেস্টুরেন্টে যান খাওয়া দাওয়া করুন, পারলে দূরে কোথাও ঘুরে আসুন, ছবি তুলুন মনের মত। তবে নতুন একটা রিলেশন শিপের জন্য ছোক ছোক না করা সবচেয়ে ভালো, অনেকে এক্সিটিং মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে ভাবতে শুরু করে এই সময় টা, তাকে বেশী সময় দেয় এবং তার মায়া আদায় করার চেষ্টা করে; এভাবে যদি আরেক রিলেশন শিপের কথা ভেবে এগুতে থাকতেন তবে জেনে নিন - আপনি সিওর আবার ধরা খাবার চিন্তা করছেন।
"ন্যাড়া বেলতলায় বার বার যায়" - ডোন্ট বি দিস ন্যাড়া
৭ / এই সময়টা কোনো কাজেই মন বসে না যদিও, তাই নিজেকে বেশী বেশী সময় দিন, দরকারে মেডিটেশন করতে পারেন একটা নির্দিষ্ট সময়ে। সময় দিন এটা মাথায় রাখুন আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে, কেউ কারো জন্য থেমে থাকে না, সে যদি এগিয়ে যেতে পারে আপনিও পারবেন। নিজের জীবনের যেসব জিনিস এতদিন অপূর্ণ ছিলো সেগুলো পূরণ করুন। আপনার কোন ভুলটার কারণে সে চলে গেছে এটা বের করে নিজেকে শুধরে নিন। ওভারঅল পুরো ব্যপারটা পজিটিভলি নিন, দি সান উইল ডেফিনেটলি শাইন ফর ইউ সামডে।
৮ / যদি একটা সময় নিজের মনের ভিতর আত্নবিশ্বাসটা তৈরী করতে পারেন, তাহলে নিজের মনের অজান্তেই তাকে ভালোবেসে যান, যদিও বেশীভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ তা পারে না, ভাবে বিয়ে হবে না ; ভালোবেসে আর লাভ কি? ওকে তো পাবই না। এটা পুরোপুরি ভুল, না পেলেও ভালোবেসেছেন সেটা নিজের মন থেকে এটাকে ধরে রাখতে দোষ নেই, যদি আপনি অনেস্ট হন ভালোবাসায় এবং সেও যদি অনেস্ট থেকে থাকে তাহলে আপনাদের একটা না একটা সময় মিলন হবেই, অথবা আপনার কাছে এমন কেউই আসবে যে আপনার মতই সৎ। সৎ থাকাটা সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট মনে মনে ভালোবাসার ফিলিংস টা রাখা মানেই নিজের কাছে নিজে সৎ থাকা, যত যাই হোক আমার ভালোবাসা অনেক স্ট্রং এইটাও কম কিসের???
সরি, বক বক বেশী করার জন্য। সবাই ভালো থাকবেন, এই পোস্টখানাও আমার জন্য একটা শান্তনাই বটে