১৯৮৬ সালে আমরা প্রথম ইন্টারন্যাশনাল ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই। ৯৪ রানে অলআউট হয়ে ৭ উইকেটে হারি পাকিস্তানের কাছে। তখন আমাদের লক্ষ্য থাকতো ৫০ ওভার টিকে থাকার জন্যে সংগ্রাম করা। সময় গড়াতে থাকে, আমাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০০+ রান করা। কিন্তু আমরা যথারীতি হারতে থাকি। টানা ২২ ম্যাচ হারার পর অবশষে জয় ধরা দেয় কেনিয়ার বিপক্ষে ১৯৯৮ সালে, রফিকের ৭৭ আর আতাহার আলীর ৪৭ রানের ওপর ভর করে। আনন্দে ভেসে যায় পুরো দেশ। এর আগে ১৯৯৭ সালে আমরা ICC ট্রফি জিতে নেই। সে এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত, রঙের খেলায় মেতে ওঠে গোটা জাতি।
এভাবেই ধীরে ধীরে লক্ষ্যমাত্রা বাড়তে থাকে, আমরা নিজেদের ক্রমাগত অতিক্রম করতে থাকি। একসময় আমাদের বিরুদ্ধে অন্যেরা রেকর্ড করতো, একটা সময় পর আমরাই অবাক করা সব রেকর্ড করতে থাকি। সবচেয়ে কম বয়েসে আশরাফুলের সেঞ্চুরি, এক ম্যাচে সোহাগ গাজীর সেঞ্চুরি এবং হ্যাটট্রিক, এত অল্প টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়ার পরেও সাকিবের নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার হওয়া - এসবই প্রমান করে আমরা কতদূর এগিয়েছি।
এদেশে আমরা প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকি যুদ্ধ করে। উন্নত বিশ্বের তুলনায় আমাদের সুযোগ সুবিধা এতই কম যে সেটা তুলনা করতে যাওয়াই ভুল। সাউথ আফ্রিকা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরা এত কম সুযোগ সুবিধা পেলে আদৌ এরকম পারফর্ম করতে পারতো কিনা, চিন্তার বিষয়। অথচ আমরা যথন জিততে পারতাম না, আমাদের নিয়ে খোঁচাখুঁচি কম হয়নি। সিধু আমাদের দলকে তুলনা করেছিলেন তেলাপোকার সাথে, শেহবাগ আমাদের বোলিং নিয়ে উপহাস করেছিলেন, ইউনুস খান বাংলাদেশের টেস্ট স্টেটাস আফগানিস্তানকে দিয়ে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু তারা এটা মাথায় রাখেননি যে দিন সবার সমান যায় না। সিধু এখন আর ইংরেজি কমেন্ট্রি দেয়ার সুযোগ পান না, হিন্দিতে ঘ্যান ঘ্যান করেন, শেহবাগ এখন দিন গোনেন কখন তাকে আবার ইন্ডিয়া টিমে ডাকা হবে, ইউনুস খান ওয়ানডে টিমে চান্স না পেয়ে হা-হুতাশ করেন।
সে যাই হোক, কটু কথা আমরা কম শুনি নাই। কথাগুলো হজম করেছি কিন্তু ভুলে যাইনি। আমরা কড়ায় গন্ডায় সেগুলো শোধ করবো। বাংলাওয়াশ কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি সেটা আমরা বোঝাবো সবাইকে। একটা একটা করে ধরবো আর একটা একটা করে বানাবো।
নিউজিল্যান্ডকে দিয়ে সেটা কেবল শুরু হলো মাত্র।