দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই এগিয়ে যাওয়ার নমুনা আমরা দেখতে পাই আমাদের রাস্তায়। বিলাসবহুল গাড়ির সমাহার আমাদের রাস্তায়। তবুও বলতে হচ্ছে এই বিলাসবহুল গাড়িগুলোই যে আমাদের পথের কাঁটা হতে চলেছে এতে আর কোন সন্দেহ নেই। আগে আমরা ইফতার করতাম বাসায়, প্রিয়জনদের সাথে। আর এখন করি রাস্তায়, যানজটে। একদা ঠিক ইফতারের পূর্বে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেত। আর এখন ঢাকায় সবচেয়ে বড় যানজট হয় ঠিক ইফতারের পূর্বমুহূর্তে। বলা বাহুল্য, এই যানযটের মূল কারন আমাদের ট্রাফিক সিস্টেমের ডিজিটালাইজ না হওয়া। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায়, ঠিক ইফতারের পূর্বে সকল গাড়ি সিগনালে একসাথে গিয়ে যে যানজটের সৃষ্টি করে তা সামলাবে- কার সাধ্য? আবার একদিনের জন্য (কয়েক ঘন্টা আসলে) ডিজিটালাইজ করতে গিয়েই ঢাকার মানুষ যে কতটা নাজেহাল হয়েছিল তা আমরা সবাই টের পেয়েছিলাম সেইদিন। যানযটে ঢাকা ছিল স্তব্ধ। তবুও স্বস্তি প্রশাসন বুঝেছিল- সময় আসেনি এখনও। আরও অনেক পথ বাকি।
অপরদিকে, প্রাইভেট কারের প্রাচুর্যতা/বাহুল্যতাই যে আমাদের যানজটের মূল কারন এতে কোন সন্দেহ নেই। আর এই গাড়ি কেনার যে স্রোত তা যে ততদিন থামবেনা বরং দিন দিন বাড়তেই থাকবে যতদিন আমাদের দেশে সিএনজি চালিত গাড়ি অতি সহজেই কিনতে/পরিচালনা করতে পারব। সারাদিনের ট্যাক্সি/সিএনজি ভাড়াতে যে খরচ তার চেয়ে অনেক কম খরচে একটি/দুইটি গাড়ি সহজেই রাখা যায়। আর রাখবনা কেন? আমরা না মধ্যবিত্ত? বিউটিপার্লারে যাওয়ার জন্য যে আমাদের গাড়ি চাইই চাই। হোক না এতে বাসে অফিস ফেরত ব্যক্তিটির একটু দুর্ভোগ।
এ তো গেল মুদ্রার একপিঠ। অপরপিঠে আমরা এখনও বুঝিনি- সিএনজি চালিত বিলাসবহুল গাড়ি যে আমাদের কোন দুর্ভোগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই আমাদের রিজার্ভড গ্যাসের প্রায় অর্ধেক চলে গেছে খরচের খাতায়। আলোচনায় চলে এসেছে রান্নার কাজে জ্বালানী হিসেবে গ্যাস না ব্যবহার করার বিষয়টি। কিন্ত এখনও কেউ বলছে না যে রান্নায় নয় আসলে বিলাসবহুল প্রাইভেট কারেই বেশি ব্যবহার/অপব্যবহার হচ্ছে আমাদের এই অমূল্য সম্পদটির।
মানছি এখন আর আমাদের জ্বালানী তেলে ভর্তুকি দিতে হচ্ছেনা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লাভের মুখও দেখছি। কিন্ত অদূর ভবিষ্যতে যে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে তা আমরা ভাবছিনা। আজ থেকে পনের/বিশ বছর পর হয়তো ফুরিয়ে যাবে আমাদের এই গ্যাস যদিনা আমরা সঠিক পরিকল্পনা করি। আর যদি এটা ঘটে, যদি আমাদের আবার তেলেই ফীরে যেতে হয়, তাহলে আমাদের তেলে যে ভর্তুকি কত হবে তা অচিন্তনীয়।
অতঃপর আমরা মধ্যবিত্ত!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৪৩