প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি বিখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠীর সাথে যিনি হৃদয় কাটা ছেঁড়া করে ইতিমধ্যে লক্ষ হৃদয় জয় করেছেন।
ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠী জন্মগ্রহন করেন কর্ণাটকের ছোট্ট শহর কিন্নিগলিতে।
উনি ওনার বাবা মায়ের নয় সন্তানের মধ্যে অষ্টম সন্তান ছিলেন।
উনার ভাষ্যমতে স্কুলে উনি প্রথম সারির ছাত্র ছিলেন না।
পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নিয়ে ডাঃশেঠীর বক্তব্যঃ
"I am concerned with the way children today are scared about the exams. I have no problem with failure.I have failed in many exams .How good a surgeon I am has nothing to do with the marks I scored or how many times I failed .Some of the toppers in surgical exams are such bad surgeons that I won't even allow them to cut my hair."
চিকিৎসক হওয়ার পিছনে অনুপ্রেরনাঃ ডাঃ শেঠী যখন ছোট এক সময় তিনি লক্ষ্য করলেন চারপাশের প্রিয় মা-বাবারা মানে উনার প্রতিবেশী প্রিয় মেসো-মাসীরা বুড়ো হয়ে যাচ্ছেন এবং এই সময়টা তাদের জন্য কঠিন সময়।তবে একদল লোক যারা কিনা চিকিৎসক তাদের সহায়তায় উনারা ভালো থাকছেন। তখন থেকে শেঠী পণ করলেন চিকিৎসক হবেন।
যখন তিনি স্ট্যান্ডার্ড সিক্স এর ছাত্র তখন খবর বের হলো Dr Christiaan Barnard দক্ষিন আফ্রিকার কেপ টাউনে হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপন করেছেন।
হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপন!!!! খবরটা কিশোর শেঠীকে বেশ আন্দোলিত করলো এবং উনি মনে মনে ঠিক করলেন তিনি কার্ডিয়াক সার্জন হবেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবনঃ
ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠী পেশায় একজন কার্ডিয়াক সার্জন।
উনি এম.বি.বি.এস এবং এম.এস ডিগ্রী অর্জন করেন- কস্তুরবা মেডিক্যাল কলেজ,ব্যাঙ্গালুরু থেকে।
এম.এস ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৮২ সালে।
ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠী "ওয়েস্ট মিডল্যান্ড কার্ডিও থোরাসিক রোটেশন প্রোগ্রাম" এ অংশগ্রহন করেন।
১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি Guy's Hospital London এ কর্মরত ছিলেন।
উনি বেশ কিছুদিন আমেরিকার"University of Minnesota Medical School" এ অধ্যাপনা করেন।
রাজীব গান্ধী ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স এও অধ্যাপনা করেন।
"Medical Council of India" এর একজন নীতি নির্ধারক সদস্য উনি।
উল্লেখযোগ্য সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডঃ
১৯৮৯ সালে ডাঃশেঠী এবং উনার দল কলকাতাতে ১৪০ শয্যার গবেষনা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৯৭ সালে এই দলটির হাত ধরেই ৪৫০ শয্যার "ম্যানিপাল হার্ট ফাউন্ডেশন" যাত্রা শুরু করে।
পরবর্তীতে উনার নেতৃত্বেই কলকাতায় "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্স" নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে।
ভারতের প্রতিটি রাজ্যে জটিল কার্ডিয়াক সার্জারি সহজে সহজলভ্যভাবে জনগনের কাছে পৌঁছে দেয়াই ডাঃ দেবী শেঠীর স্বপ্ন।
ডাঃ শেঠীর জীবনে অমূল্য প্রাপ্তিঃ একবার মাদার তেরেসা হার্ট এ্যাটাক করলে ডাঃ শেঠীর তত্ত্বাবধানে উনার চিকিৎসা চলছিল।একটা পর্যায়ে উনি অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন।একদিন মি.শেঠী ওয়ার্ডে হৃদরোগে আক্রান্ত শিশু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন।
তখন মাদার তেরেসা বলে ওঠেন-"Now I know why you here.To relieve the agony of children with heart disease ,God send you to this world to fix it."
উনার পাওয়া যে কোন পুরষ্কারের চেয়ে উনাকে উদ্দেশ্য করে বলা প্রিয় মাদার তেরেসার মুখ থেকে উচ্চারিত শব্দগুলো উনার কাছে অমূল্য বলে মনে করেন উনি।
হৃদরোগের শল্য চিকিৎসায় ডাঃদেবী প্রসাদ শেঠীর অবদানঃ
তিনি ভারতের প্রথম কোন কার্ডিয়াক সার্জন যিনি ১৯৯০ সালে হৃদরোগে (PDA) আক্রান্ত মাত্র নয়দিনের শিশুর "Video Assisted PDA Ligation" করেন।
তিনি ভারতের প্রথম কার্ডিয়াক সার্জন যিনি প্রায় কর্মক্ষমতা হারানো হৃদপিন্ডের বাম নিলয়ে সাহায্যকারী ডিভাইস ব্যবহার শুরু করেন।
তিনিই দুনিয়ার অল্প কিছু সার্জনদের মধ্যে একজন যিনি অতি ক্ষুদ্র ক্যামেরা ব্যবহার করে খুবই ছোট ছিদ্র করে আক্রান্ত হৃদপিন্ডে(key hole heart surgery) প্রয়োজনীয় সার্জিক্যাল ইন্টারভেনসন করতে পারেন।
হৃদপিন্ডের বাইপাস সার্জারিতেও ওনার বিশেষ খ্যাতি আছে ।
উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনার সাফল্যের পিছনে রহস্য কি?
ডাঃ শেঠী উত্তর দিয়েছিলেন আমি বড় কিছু চিন্তা করতে পছন্দ করি এবং সে অনুযায়ী পরিশ্রমও করি।
কথা সত্য "An idea can change a life"। চলেন না আমরাও বড় কিছু চিন্তা ও পরিশ্রম করতে শুরু করি।
তথ্যসূত্রঃ 1)Heart Surgeon: Devi Prasad Shetty.
Click This Link
(July 29,2010)
2)Interview: Dr.Devy Prasad Shetty.
daijiworld.com(January 2,2015).
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৪