আদম মনে মনে হাসে।
হুঁ হুঁ বাওয়া, একদম নিখুঁত পিলান! জ্ঞানবৃক্ষের ফল আদম খেয়েই ছাড়বে, সে ঈশ্বর যত 144 ধারা জারি করুন না কেন।
আদম নিজের ভবনে বসে হাওয়া খেতে খেতে অনেক গবেষণাই করেছে। জ্ঞানবৃক্ষের বিশ হাতের মধ্যে যাওয়া নিষেধ, এক ভীষণদর্শন তাগড়া স্বর্গদূত লাঠি হাতে সে বৃক্ষ পাহারা দেয়, পশুপক্ষী কারো সাধ্য নেই জ্ঞানবৃক্ষের কাছে গিয়ে তার ফলে মুখ দেয়।
আদম মহা বিরক্ত জ্ঞানবৃক্ষ নিয়ে এসব ফালতু বিধিনিষেধে। আরে বাবা, ফল যদি না-ই খাওয়া, তো ঐ ফল সৃষ্টির দরকারটা কী? জ্ঞানবৃক্ষের ফল খেলে তো জ্ঞানই বাড়ার কথা, আর জ্ঞান বেড়ে গেলে ঈশ্বরের সমস্যাটা কোথায়?
সেটাও ভেবে বার করেছে আদম। ঈশ্বর তাবৎ সৃষ্টিকে বোকাচো-- বানিয়ে রাখতে চান। কারো জ্ঞান পেকে উঠুক সেটাই তিনি চান না। তবে জ্ঞানবৃক্ষের ফল কেন বানানো হয়েছে ভেবে পায় না আদম।
স্বর্গদূতরা যে জ্ঞানবৃক্ষের ফল মাঝেসাঝে খায়, সেটা আবিষ্কার করে মহা ক্ষেপে গিয়েছিলো আদম। এই ফল খেলে নাকি কীসব শক্তি বৃদ্ধি পায়, দূতগুলো ফল খেয়ে স্বর্গের অপ্সরাগুলোর সাথে রাতভর হুল্লোড় করে। আদম তাই ঠিক করেছে, চুপিচুপি ফল পেড়ে এনে খেয়ে সে-ও ঈভের সাথে হুল্লোড় করবে। এমনিতে ঈভ কিচ্ছু করতে দেয় না, কিন্তু জ্ঞানবৃক্ষের ফল খেলে জোশ অনেক বেড়ে যায়, তখন ঈভের সাধ্য নেই আদমকে ঠ্যাকায়।
কিভাবে ফল হস্তগত করবে, ছকে ফেলেছে আদম। পাহারাদার স্বর্গদূতটার সাথে ষড় করে রেখেছে সে, এমনকি ওর লাঠিটা দিয়ে গুঁতিয়েই ফল পাড়া হবে। আধাআধি বখরা হবে, তাতে আদমের আপত্তি নেই। রক্ষক তো ভক্ষক হতেই পারে, সমস্যা কোথায়? খাক সবাই, খেয়ে দেয়ে জ্ঞান বাড়াক, জোশ বাড়াক ...।
ধরা পড়ার ভয় আছে, কিন্তু আদম ভেবে রেখেছে সে দিকটাও। ঈশ্বর কৈফিয়ৎ চাইলে সে বলবে, ঈভই তাকে এ ফল পেড়ে এনে খেতে ফুসলি দিয়েছে, মুহুহুহুহুহু ... আদম অশ্লীল হাসে, তার মনে আজ বড় ফূর্তি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০