somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিঃশব্দ ভালবাসার সিকি শতাব্দী

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ১১.৪৫ থেকে ১২.১৫। প্রতিদিন এ ৩০ মিনিট বালিশের পাশে হাতের মুঠোতেই ফোনটি রেখে অপেক্ষা করে মেয়েটি। কর্ণদ্বয় সদা সতর্ক কখন ফোনটি বেজে উঠবে? কখন স্ক্রীনে ভেসে উঠবে প্রিয় মুখটি?
হুম......ঠিক সময়ে প্রিয় মুখটি ভেসে উঠে স্ক্রীনে।
রিসিভ করতেই ভেসে আসে ওপ্রান্তের শব্দ............
হ্যালো। কেমন আছো?
আছি ভালো । তোমার কি অবস্থা?

এভাবে কমপক্ষে ১৫ মিনিট। একসময় বিদায় নিয়ে নিশ্চিন্তে প্রশান্তির নিদ্রায় যায় মেয়েটি।
গত পক্ষকাল ব্যাপী তোমার এই নিয়মিত কাজটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে এ মেয়েটির ব্যাকুল হৃদয়কে। কোন কারণে যতক্ষন তোমার ভালবাসা মিশ্রিত "হ্যালো" শুনতে না পায় ততক্ষন যেন মেয়েটির হৃদয়ে বিরাজ করে এক সাগর শূন্যতা ।
গত কয়েকটি বছর মেয়েটি তোমাকে পেয়েছে নতুন এক মোহনায়। কখনো তুমি স্পষ্ট করে মেয়েটিকে বলোনি তোমার ভালোলাগার কথা কিন্তু মেয়েটির ব্যাকুল হৃদয় জানে কতটা ভালবাসো তুমি তাকে। আর এ ভালবাসা শুধু কয়েক বছরের নয়, এ ভালবাসার বয়স প্রায় সিকি শতাব্দীকাল। কারণ, প্রায় সিকি শতাব্দীকাল আগে থেকেই তোমার সাথে যে মেয়েটির পরিচয়। যখন দু' দু' চারটি হাত চারটি পা ছিলো খুবই ছোট। একসাথে খেলাধুলা, চিমটি কাটা, কানামাছি, চোর খেলা ইত্যাদি ছিলো একাসাথে থাকলে নিয়মিত আয়োজন। সেখান থেকেই শুরু দুটি হৃদয় দেয়া নেয়ার। কখনো দিয়েছে মেয়েটি দিয়েছে আবার কখনো দিয়েছে তুমি। তবে মেয়েটির সাথে এ লেনাদেনা পুরোটাই চলেছে গোপনে, নিভৃতে।
তোমার গোপন গভীর চাহনী আর টেককেয়ার এগুলো কিশোরী, ষোড়শী হৃদয়কে করেছিলো সর্বদা তোলপাড়, তবুও সব সময় এ মেয়েটি ঠান্ডা নিশ্চুপ, নিশ্চল হয়েই ছিলো যেমনটি এখনও আছে। হৃদয়ের গহীন সাগরে বিরাজ করতো এক উত্তাল ঢেউ কিন্তু সে উত্তাল সাগর তীরে এসে যেন একেবারেই নিরব।

তোমার ছোট ছোট গিফটগুলো সাজানো রয়েছে মেয়েটির শোকেসে। এর চেয়েও অনেক মূল্যবান কিছু মেয়েটির শোকেসে সাজানো থাকলেও এ ছোট ছোট উপহারগুলোই শোকেসটির শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন, এগুলো হয়ে দাড়িয়েছে অমূল্য। কখনো মেয়েটি এগুলোর কামনাও করেনি, বরং উল্টো বকা দিয়েছে কিন্তু সময়ে সময়ে উপহারগুলো হাতে তুলে দিয়ে বিস্ময়ে হতবাক করে দিয়েছো তাকে।

গত কয়েকদিন যখন মেয়েটি প্রচন্ড মানসিক দ্বন্ধে জর্জরিত তখন তুমি দিয়েছো পাশে থেকে স্বান্তনা। তুমিই জুগিয়েছো উৎসাহ, মাঝে মাঝে দিয়েছো মৃদু বকা আর বাতলে দিয়েছো সময়ের করনীয়। অবিশ্বাসের এ যাত্রায় এসে যদি তোমার একান্ত সাহচার্য না পেতো তাহলে মেয়েটি কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো তা সে নিজেও জানে না । ভরশা দিয়েছো তুমি। সাহস জুগিয়েছো প্রতিটি মূহুর্তে।নতুন করে আরেক কঠিন বন্ধনে আবব্ধ করে ফেলেছো তাকে। মেয়েটি জানেনা কিভাবে এর মূল্য দেয়া সম্ভব।
একজন ডাক্তার যেভাবে রোগীর শরীরের উন্নতির জন্য সর্বদা চেষ্টা করে , খোঁজ নেয় প্রতিনিয়ত ঠিক তেমনি তুমি মেয়েটিকে মানসিক ভাবে উন্নতি করার জন্য তিন বেলা খোঁজ নিতে।
এরই মাঝে শারীরিক অসুস্থতা পেয়ে বসলো মেয়েটিকে, অনেক বেশী অসুস্থ। তোমার ভালবাসা আর অদৃশ্য সোহাগের ভাষা আরো বেশী বুঝতে পারলো মেয়েটি। তোমার অনবরত সাহস অল্পতেই মেয়েটিকে সুস্থ করে তুললো। এ ভালবাসার পরশ না পেলেও হয়তো সে সুস্থ হয়ে উঠতো কিন্তু তোমার ভালবাসাময়তা হৃদয়ের সুস্থতায় তাকে করে তুললো আরো অনেক বেশী প্রাণচঞ্চল। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া মেয়েটিকে অল্পতেই তুমি ভাল করে তুললে।
এইতো সেদিন তোমার জন্মদিন। মেয়েটি ভুলে নি। দিনটি শুরু কিছুক্ষনের মাঝেই তোমাকে শুভেচ্ছা দিলো সে। তুমি ভালো থাকবে এ আশা আর বিশ্বাসে ভরপুর মেয়েটির হৃদয়।
মেয়েটি জানে তুমি তোমার ডেক্সটপ ইমেজ হিসেবে মেয়েটির ছবি সেট করেছো। তোমার প্রতিটি ক্লিক এ হৃদয়ে অদৃশ্য শিহরণ তোলে।

মেয়েটি জানে তোমার সকল কষ্টগুলো, মাঝে মাঝে স্বান্তনা দেয়। কিন্তু তোমার কাছে যেন কোন কষ্টই কষ্ট না। তোমার সদা হাস্যোজ্জ্বল চেহারাটাই তার প্রমান করে দেয়। মেয়েটি তোমার বুকে মাথা না রেখেই তোমার বুকের শব্দ শব্দ শোনার চেষ্টা করে, শুনতেও পায় ভেতরের শব্দ। কিন্তু খুজে পায়না তোমার অভাব অভিযোগ। খুজে পায়না তোমার অভিমান। পায় শুধু হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার আবেদন। সে আবেদনে কোন তাড়া নেই, নেই কোন বাড়াবাড়ি।
এতো কিছুর পরও তুমি মুখ ফুটে বলোনি কিন্তু তোমার মনের ভাষার প্রতিটি শব্দের ভালবাসাময়তা, হৃদয়ের গভীরতা, অদৃশ্য পরশ তোমার ভালবাসার শতভাগ প্রমান পেয়েছে মেয়েটির তৃষিত হৃদয় । ওদিকে লাজুক মেয়েটিও কখনো মুখফুটে বলেনি তোমাকে তার ভালবাসার গোপন কথা। ............................
মেয়েটি সত্যিই বলছে............................... তোমাকে অনেক ভালবাসে।


আজ তোমার নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলো, রাত হলো আরো গভীর কিন্তু এখনো মেয়েটির প্রিয় ফোনটি তোমার উপস্থিতি জানিয়ে দিচ্ছেনা। তুমি কি আজ ব্যস্ত অথবা কোন সমস্যা নাকি রাগ করেছো? অথবা পরিশ্রান্ত শরীরে ঘুমের রাজ্যে ডুব দিয়েছো? প্রতিটি দিনের মতো তুমি কি আজ মেয়েটিকে ভালবাসার প্রশান্তি নিয়ে ঘুম পড়াবে না? কি অবস্থায় আছো তুমি??????



সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী...

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০৪

বাংলার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী...

ময়মনসিংহ গীতিকা প্রকৃতপক্ষে একক কোনো কাহিনী নির্ভর বই না। 'ময়মনসিংহ গীতিকা' হচ্ছে কবিতা বা গানের সংকলন, যা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের মুখেমুখে প্রাচীন কাল থেকে ভিন্নভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাটারি অটো রিক্সা বন্ধ করা কী খুব কঠিন কাজ?

লিখেছেন চোরাবালি-, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৪৮



বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড় হল এখন অটো রিক্সা, স্বল্প পরিশ্রমে সহজ আয়ের মাধ্যম হিসাবে খুবই জনপ্রিয় একটা পেশা। স্বল্প ভাড়ার জন্য অনেক মানুষ এখন পায়ে হাঁটা ভুলেই গেছে আর হাঁটার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জিয়াউর রহমান

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৪



চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জবাবদিহিতার অনন্য দৃষ্টান্ত

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি যাত্রা করবেন নাকি রাজনীতি করবেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১১


ইদানীং দেশে রাজনৈতিক দল গজানোর হার দেখলে মনে হয়, দেশের মাটিতে এখন ধান নয়, গজায় দল। ভোট এলেই বুঝি এই দলগুলো দুলে ওঠে, আর না এলেই পড়ে থাকে ফাইলের পাতায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×