হ্যালো, এই যে ভাই শুনছেন?
-জী বলেন
কে আপনি?
-আমি? আমি তো ভাই জোকার।
জোকার???
-হ্যা। আমি জোকার।
আপনি কি করেন?
- লোক হাসানোর চেষ্টা
কোথায় থাকেন আপনি?
-তাসের দেশে ।।
গল্পের একমাত্র ও প্রধান চরিত্র এই জোকার... তাসের দেশের জোকার । জোকারের প্রধান কাজই হল তার আশেপাশের টেক্কা, রাজা, রানী, গোলাম... এদের হাঁসানো। তার দিনের দশ আনাই কাটে হয়তো আশেপাশের তাশগুলোকে হাসিয়ে । কাছের তাসগুলোকে হাসতে দেখলে সে আনন্দ পায় । তবে এই আনন্দটা অনেকটা স্যাডিস্ট টাইপ আনন্দ... নিজেকে হাসির খোরাকে পরিণত করে অন্যদের হাসি দেখে পাওয়া আনন্দ । দিন শেষে যখন সে নিজেকে একা পেত... তখন সে দেখত সে বেশ নিঃসঙ্গ কারন আশেপাশের কোন তাশের সাথেই তার তেমন কোন মিল নেই। কোন খেলায় তার তেমন কোন কাজ ও নেই... সে যেন শুধুই একটুকরো রঙচঙে কাগজ। আস্তে আস্তে তার আলাদা হওয়ার ব্যাপারটা অন্য তাশেদেরও নজরে আসল । পরিস্থিতি অথবা প্রকৃতি যেকোন কারনেই হোওক না কেন তারা ঠিক বেপারটাকে মানতে পারল না। তারা জোকারের না না ভুল ধরা শুরু করল। তোমার হাসানোতে ভুল, তুমি পরিবেশের উপযোগী না, তুমি ব্যবহার জান না... অনেক কিছু। জোকার ভাবল সবাই যখন বলছে তারমানে দোষটা হয়তো তার মাঝেই । একে তো জোকার নিঃসঙ্গ ছিল তারউপর আবার এত এত দোষ... সে ঠিক করলো সে আর এই তাশের দেশেই থাকবে না । সে তো নিজেকে বদলাতে পারবে না কারন সে জোকার, তাকে বানানোই হয়েছে এইভাবে।
একদিন সকালে, তাসের দেশের তাসেরা ঘুম ভেঙ্গে দেখলো তাদের সেই দোষী অন্যরকম জোকারটা আর নেই। তারা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। তারপর থেকে জোকার কে আর কোথাও দেখা যায়নি।
তবে এখনো তাসের দেশে কারো কারো মন খুব খারাপ হলে হয়ত সে সেই জোকারটাকে খোঁজে...
আপনার আশেপাশেই হয়তো লুকিয়ে আছে সেই জোকারটা... এখনো সে হয়তো জোরে শব্দ করে হাসিয়েই যাচ্ছে আপনাকে কিন্তু আপনি তার হাসির পেছনের চুপ থাকার গল্পটা জানেন না। হয়তো এখনোও সে প্রতি রাতে নিজেকে হাসানোর চেষ্টা করে কিন্তু দীর্ঘশ্বাসের আড়ালে সে হাসি চাপা পড়ে যায়।
কান পাতুন একদিন হয়ত নীরাবতাটা শুনতে পাবেন...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫২