স্কুল জীবনে বিজ্ঞান বই এ গতিবেগ ও ত্বরণ সম্বন্ধে জেনেছি যা হয়ত অনেকের মনে নাই তাই আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি মূল আলোচনায় যাওয়ার পূর্বে। গতিবেগ হলও সময়ের সাথে দূরত্বের পরিবর্তনের হার। আর ত্বরণ হলও সময়ের সাথে গতিবেগ বৃদ্ধি হার। নিচে সংযুক্ত মানচিত্রে বিভিন্ন রং নির্দেশ করতেছে ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট তরঙ্গের কারণে কোন স্থানের ভূমিতে কেমন ত্বরণ এর সৃষ্টি হবে (উ-লম্ব বরাবর কিংবা অনুভূমিক বরাবর ভূমির গতিবেগ বৃদ্ধির পরিমাণ)।
ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট তরঙ্গ বা ঢেউ যখন ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন ভূ-পৃষ্ঠে কম্পনের সৃষ্টি হয়; ভূপৃষ্ঠের উপর অবস্থিত বাড়ি-ঘর, গাছ-পালা সহ ভূ-পৃষ্ঠের সংস্পর্শে থাকা সকল বস্তু কম্পিত হয়। কোন বস্তু কতটুকু কম্পিত হবে তা নির্ভর করছে ঐ বস্তুর নিচে অবস্থিত মাটির গঠনের উপর। ভূ-পৃষ্ঠের নিচের মাটি যদি কঠিন পাথুরে হয় তবে কম্পন অপেক্ষাকৃত কম হবে। মাটি যদি আলগা হয় তবে কম্পন হবে মাঝারি মানের। মাটি যদি পানিযুক্ত ও কর্দমাক্ত হয় তবে সেই মাটির নিচ দিয়ে ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট তরঙ্গ প্রবাহিত হলে ভূমির কম্পন হবে সর্বোচ্চ পরিমাণ। ঠিক এই কারণে নদী-নালা, জলভূমি ভরাট করে তৈরি করা বিল্ডিং অন্যান্য প্রকারের মাটিতে তৈরি বিল্ডিং অপেক্ষা বেশি ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ছবিতে কোন জেলার নাম উল্লেখ থাকুক কিংবা না থাকুক তাতে কিছু যায় আসে না। ভূমিকম্প ঝুঁকি নির্দেশ করতেছে আপনার জেলা শহরটি কোন রং দিয়ে চিহ্নিত তার উপর। যদি আপনার জেলা শহরটি গাড় হলুদ রং এর কোন এলাকার মধ্যে পড়ে থাকে তবে আপনার জেলাশহরটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে যেমন সিলেট ও খাগড়াছড়ি জেলা। পক্ষান্তরে আপনার জেলাটি যদি সবুজ রং এর এলাকার মধ্যে অবস্থান করে তবে সেই জেলায় অপেক্ষাকৃত কম ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে পাবনা জেলা পুরো বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে কম ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে যেখানে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য যে আমরা জানি স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে পাবনার রুপপুরে এই পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্হানপন করা হচ্ছে। তবে আমাদের বেশিভাগ মানুষই জানেনা যে রূপপুরে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই অর্থাৎ পুরো বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে কম ভূমিকম্প ঝুঁকি সম্পন্ন স্থানটি স্বাধীনতার পূর্বের চিহ্নিত করা হয়েছিল।