আপনারা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার আঘাত করেছে গত ২০ ও ২১ শে মে। ঘূর্ণিঝড় + ভরা পূর্ণিমা + জোয়ারের সময় মিলে এবারের ঘূর্ণিঝড়টি ছিলো প্রায় ইউনিক। ফলে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের সাথে-সাথে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাসের স্বীকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্বের ঘূর্ণিঝড় গুলো (১৯৯১ ছাড়া) নির্দিষ্ট কিছু জেলার উপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল কিন্তু এবারের ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের সমান্তরে প্রবাহিত হয়েছে প্রায় প্রত্যেকটি উপকূলীয় জেলায় উপর দিয়ে অতিক্রমের সময় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধান করেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও ফেনির উপকূলীয় এলাকার মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু একদম মাথার উপর দিয়ে অতিক্রম করেছে চর নিজাম, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া, মনপুরা, সন্দীপ, কুতুবদিয়া, উড়ির চর, ইত্যাদি। বিশেষ করে দুর্গম চর এলাকার চরম দারিদ্র মানুষগুলো নিজেদের বসত ঘর গুলো সম্পূর্ণ রূপে হারিয়ে বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ১ টি রুমে ৫০-১০০ জন করে চরম মানবেতর ভাবে অবস্থান করছেন।
এটা সত্য যে এবারের ঘূর্ণিঝড়ে অনেক কম মানুষ মারা গেছে যার প্রধান কারণ মানুষকে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে (টেলিভিশন, মোবাই ম্যাসেজ) সাবধান করে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে মানুষের ঘর-বাড়ি গুলো রক্ষা করা সম্ভব হয় নাই। আপনারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকার বাড়ি-ঘর এর ক্ষয়-ক্ষতি এর ছবি দেখেছেন। সরকারি তথ্য মতেই শুধু বাঁশ খালি উপজেলায় প্রায় ৭০ হাজার পরিবার সম্পূর্ণ রূপে জলাবদ্ধ অবস্থায় আছে। অন্যান্য এলাকা গুলোর অবস্থাও একই।
কিছু-কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসন করা সরকারের একার পক্ষ থেকে সম্ভব হয়ে উঠে না। কানাডার ফোর্ট ম্যাক-মারির চলমান অগ্নিকান্ড তার সবচয়ে বড় উদাহরণ। কানাডার সাধারণ মানুষ কানাডিয়ান রেড ক্রসের মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করতেছে।
চর এলাকার শতকরা ৯০ জন মানুষই জেলে পেশায় নিয়োজিত অথবা মৎস্য শ্রমিক হিসাবে কাজ করে দৈনিক মুজুরি ভিত্তিতে। আগামী ২/৩ সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে বর্ষা কাল শুরু হয়ে যাবে। যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত বসত-বাড়ি গুলো মেরামত করতে হবে।
আমার পরিচিত মানুষের অনুরোধ করেছিলাম ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত তাদের এলাকার ছবি দেওয়ার জন্য। আপনাদের জন্য ৪ টি জেলা (চট্রগ্রাম, ভোলা, কক্সবাজার ও নোয়াখালি) হতে ৫ টি ছবি যোগ করলাম।
অবশেষে দৈনিক পত্রিকা গুলোতে কিছুটা হলেও ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু এর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার বর্ণনা আসা শুরু করেছে। যে এলাকার গুলোর বর্ণনা এসেছে সেগুলোতে যাতায়ত অপেক্ষাকৃত সহজ। দুর্গম চর এলাকা গুলোর ক্ষয়-ক্ষতির বাস্তব চিত্র পেতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষায় থাকতে হবে।
দৈনিক মানবজমিন, ২৪ শে মে, ২০১৬
জনপদে রোয়ানুর তাণ্ডব চিহ্ন ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ শেষের পাতা
দৈনিক প্রথম আলো, ২৪ শে মে, ২০১৬
১৫ জেলায় ১ লাখ ১০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত
বরাবরের মতো এবারও বেশি কিছু স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছি (প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থাকে অর্থ সাহায্য গ্রহণ করে তাদের কাছে পৌঁছানো)। এই মুহূর্তে আমেরিকা প্রবাসী ভোলা জেলার এক ছোট ভাই ভোলা জেলায় অবস্থান করছে। সে অনুরোধ করেছে তার এলাকার দুঃস্থ মানুষের জন্য কোন ভাবে সাহায্যে করতে পারি কি না।
প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি বিনীত অনুরোধ, যার যত টুকু সামর্থ্য আছে এমনকি ১ ডলার হলেও তা দিয়ে সাহায্য করার জন্য।
আপনারা কেউ সাহায্য করতে চাইলে নিম্নে প্রদত্ত ই-মেইলের মাধ্যমে পে-পাল এর মধ্যমে সাহায্য পাঠাতে পারবেন।
Bangladesh Disaster Aid and Rehabilitation এর PayPal একাউন্ট #
[email protected]
Nongar Dhrubo এর PayPal একাউন্ট # (আমেরিকান ডলারে পাঠালে নিম্নোক্ত একাউন্টে পাঠাতে পারেন)
shariful. [email protected]
***************************************************
বিকাশের মাধ্যমে নিম্নোক্ত নাম্বারে পাঠেতে পারবেন:
***************************************************
ফোন নাম্বার: ০১৭৬৪-৩৪০৪৪৭
অন্য কোন ভাবে সাহায্য করতে চাইলে আমাকে জানানোর জন্য অনুরোধ করবো।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: Bangladesh Disaster Aid and Rehabilitation নামক একটি অ-লাভ জনক (Non-Profit) প্রতিষ্ঠান যা কানাডা সরকারের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ও কানাডার রাজস্ব বিভাগের কাছে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে দায়বদ্ধ। এই প্রতিষ্ঠানটি গত ৪ বছর ধরে বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় প্রবাসী বাংলাদেশী মানুষদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করে তা দেশের দুর্গত মানুষদের মাঝে পাঠানোর ব্যবস্হা করে আসতেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:১৭