খালেদা জিয়া , জীবিত বাংলাদেশী রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ | উনার নামে অভিযোগের শেষ নাই । আসেন তো জানি ওইসব অভিযোগের কিছু কিছু সম্পর্কে ।
এইট পাশ খালেদা জিয়া -
বাংলাদেশের এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যায় খালেদা জিয়া কেন এইট পাশ করে প্রধান মন্ত্রী হয় এই জন্য । এর জবাবে নানা কথা বলা যায়, নানা দেশের উদাহরণ দেয়া যায় যেখানে অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত মানুষেরা নিজ যোগ্যতায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসছেন ।
আমি এই সব কিছুই বলবো না । শুধু অনুরোধ করব পাঠকদের আমার বলা কথাগুলি ভেবে দেখার জন্য-
খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৬৭ । ব্লগের অনেকের দাদি-নানী আছেন এই বয়সের । তাদের কাছে একটু জিজ্ঞাস করে দেখেন , ওই সময়ে মেয়েদের শিক্ষার হার কেমন ছিল । খুব ভাগ্যবান ছাড়া মেয়েদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বা আগ্রহ এই দুইটার সম্মিলন ঘটা ছিল নেহায়েত হাতেগোনা । মেয়ে একটু বড় হলে তাকে উপযুক্ত পাত্রস্থ করাই ছিল বাবা মায়ের চিন্তা । এই অবস্থায় খালেদা জিয়া কেন হার্ভার্ড থেকে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স, ইকনমিক্স এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে ট্রিপল মাস্টার্স এবং পরে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এর উপর একটা পি এইচ ডি ডিগ্রি করল না বলে কান্না কাটি করেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলি - বেশি করে মোল্লা লবণ খান । যদি এই বয়সে কিছু কমন-সেন্স না হয় তাইলে আর ভবিষ্যতে আশা নাই ।
আমরা যারা মনে করি গত শতকে বাংলাদেশে নারীদের অবস্থার উন্নয়ন , নারীর ক্ষমতায়ন শুরু হয়েছে তাদের জন্য এইট পাশ খালেদা জিয়ার চেয়ে আর ভাল রোল মডেল কে হতে পারেন ?
রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ খালেদা জিয়া -
অনেকের আবার প্রশ্ন কেন খালেদার মত রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ কেউ ক্ষমতায় আসবেন । জ্ঞানপাপী আর কাকে বলে । ভাব খানা এই যে , জিয়া মারা গেলেন ৮১ সালের মে মাসে আর জুন মাস থেকেই খালেদা প্রধানমন্ত্রী । এরা কেন যেন মনে করতে পারেন না যে জিয়ার মৃত্যুর পর প্রায় ১০ বছর এরশাদের মত এক প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খালেদা রাজনীতি করে বিএনপিকে ধরে রেখেছিলেন ।
১৫ আগস্টের জন্মতারিখ -
এইটা একটা বিতর্কিত বিষয় । খালেদার জন্মদিন ১৫ই আগস্ট হতেও পারে , নাও হতে পারে । যারা না হতে পারের পক্ষে খালেদার সার্টিফিকেট দেখান তাদের বলি - বাংলাদেশের ৩৫ বছরের উপরে মানুষ যারা এদের প্রায় সবার জন্মদিন দুইটা । একটা অরিজিনাল , আর একটা স্কুলে ভর্তির সময় দেয়া যা অনেক ক্ষেত্রে এসএসসি পরীক্ষার সময় বদলে ফেলা হয় । ১৫-২০ বছর আগেও জন্ম নিবন্ধন নিয়ে কারো এত মাথা ব্যথা ছিল না । আর এমন তো না যে ১৫ই আগস্টে বাংলাদেশে কোন শিশু জন্ম গ্রহণ করে না । ইন ফ্যাক্ট , আমার স্ত্রীর জন্ম দিন ১৫ই আগস্ট । কাজেই খালেদা জিয়া ১৫ই আগস্ট জন্ম নিতে পারেন না , এইটা বলা হাস্যকর ।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই ১৫ই আগস্টে জন্মদিন ঘটা করে পালন করা কতটুক যৌক্তিক । আপনি একজনের মুক্তিযোদ্ধা স্বামীকে রাজাকার বলবেন , তার চরিত্র নিয়ে নিয়মিত কুৎসা রটাবেন - পরিণামে কিছু পাটকেল খাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে যে ।
বিএনপি - জামাত রাজনৈতিক জোট-
এই রাজনৈতিক জোট নিয়ে খোদ বিএনপির তৃনমূল পর্যায়ের কর্মীদের তীব্র আপত্তি আছে । তবে এইটা কোন বিয়ের মাধ্যমে গড়া আত্মীয়তার বন্ধন নয় যে কোন দিন ভাংবেনা । আজ বিকেলে প্রেসক্লাবে ডেকে সংবাদ সম্মেলন করে জোট ভেঙ্গে দিলে সন্ধ্যা থেকে জোটের কোন অস্তিত্ব থাকবেনা ।
এই বার পাঠকদের জন্য একটা ছোটো কুইজ দেই-
খালেদা জিয়ার দুই পুত্র - এদের বিয়ে হয়েছে কোন পরিবারে আর
কারো কারো মেয়ের বিয়ে হয় রাজাকার পরিবারে, ছেলে থাকে এবং বিয়ে করে এমন এক দেশের নাগরিক যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মের দ্বিতীয় বিরোধিতাকারী ছিল । আফসোস - এরাই মুখে স্বাধীনতা -মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে যায় । মুনাফেক আর কাকে বলে ।
তারেক কোকোর দুর্নীতি -
এইখানে হয়তো মায়ের অন্ধ স্নেহ কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে । আর দুর্নীতির কতটুকু তারেক করেছে আর কতটুকু তার নাম ভাঙ্গিয়ে তার বন্ধুরা করেছে কে জানে । তবে ভেবে দেখুন - একজন মা ৫ বছর যাবত তার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন , তারেক সারা জীবনের জন্য মেরুদণ্ডে আঘাতপ্রাপ্ত - দুর্নীতির জন্য এর চেয়ে বেশি শাস্তিভোগ বাংলাদেশের আর কোন রাজনৈতিক পরিবারকে কি করতে হয়েছে ?
বর্তমান সময়ের দুর্নীতির তুলনায় আর নাইবা গেলাম ।
খালেদা জিয়ার অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করা
অপ্রদর্শিত অর্থ কি ?- যেই টাকা আইনগত ভাবে লিগ্যাল কিন্তু কর দেয়া হয় নাই । কালো টাকা কি ? - যেই টাকা আয় করা হইছে অন্যায় ভাবে । খালেদা জিয়া তার অপ্রদর্শিত অর্থ সরকারি নিয়ম নীতি মাইনাই কর ও জরিমানা দিছে । এই নিয়া ত্যানা পেঁচাইলে আবার বলতে হবে - অপ্রদর্শিত অর্থ ও কালো টাকার মধ্যে পার্থক্য বুঝে না আসলে এইটা আয়োডিনের অভাব । আমার কিছুই করার নাই কেবল মোল্লা লবণ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া ছাড়া ।
এছাড়াও কিছু কিছু স্বল্প বুদ্ধির পেইড ব্লগার খালেদা জিয়া - ফালু নিয়ে মাঝে মধ্যেই কিছু কিছু পোস্ট দেন । এদের সম্পর্কে একটা কথাই বলার আছে - এরা হাই কমান্ডের নির্দেশ পেলে ঘরের মা- বোনকেও তুলে দেবেন দলের নেতাদের মনোরঞ্জনের জন্য ।
যৌক্তিক আলোচনা করবেন দয়া করে .................................।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:২৪