গত ৩১শে মার্চ, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত
প্রথম দফা স্থানীয় নির্বাচনে জীবনের প্রথম ভোট দিতে গিয়েছিলাম। বাড়িতে আসছিলাম শুধু ভোট দেয়ার জন্য। নির্ধারিত দিনে সকাল দশটায় ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম। যাওয়ার পতে ভাবছিলাম কত
লম্বা সারির পিছনে দাড়িয়ে
থাকতে হবে, কতগুলো সারি হবে আরো
কিছু জিনিস। ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে
দেখি চারিদিকে শুধু শুনশান নিরবতা।
যেরকম ভেবেছিলাম সেরকম কিছুই নেই।
ভোট দিবে এরকম মানুষই নেই। তিন-
চারটা মনুষ্যসারি নেই। নেই
ভোটকেন্দ্রের পাশে বিভিন্ন দলের
ক্যাম্প। শুধু নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু
লোক বাহিরে বসে আছেন। আহা! এ
কি? কেন্দ্রের দরজাই তো লাগানো!
একটু এগিয়ে গিয়ে দেখে বুঝতে
পারলাম দরজা ভিতর থেকে
লাগানো। তারপর আমি কিছুক্ষণ এই সেই
চিন্তা করে দরজার সামনে গিয়ে
কড়া নাড়লাম। ভিতর থেকে কেউ একজন
দরজা খুলে দিয়ে-
জনৈক ব্যক্তি: খেনে আইছো?
(সিলেটী ভাষা) শুদ্ধ-কেন আসছো?
আমি: শালায় বলে কি,কেন আসছি
মানে? (মনে মনে) তারপর বললাম ভাই,
ভোট দিতে আসছি।
জনৈক ব্যক্তি: আপনার ভোট দিতে হবে
না, আমরা দিয়ে দিছি। বাড়িতে
গিয়ে ঘুমান!
আমি: তাহলে ভাই এটা(টোকেন
দেখিয়ে) দিছেন কেন? আর আপনারা
যদি দিয়ে দিবেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে
ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিতে আমন্ত্রণ
করেন কেন?
এরপর ওপাস থেকে আর কোন কথা নেই শুধু
জোরে একটা শব্দ করে দরজাটা বন্ধ হয়ে
গেল।
এই অবস্থায় আমার কিছু করার ছিল না।
শুধু জিহ্বা দাত দিয়ে কামড়ে
নিজেকে সামলে সেখান থেকে চলে
আসলাম। জীবনের প্রথম ভোট দিয়ে
গিয়ে দারুন অভিজ্ঞতা হল। এটাই কি
বেশী নয়?
আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
হিসেবে বলতে পারি আমার বাবা
আরো অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার মত এরকম
দেশ প্রত্যাশা করেন নি। তারা
দেশকে এবং দেশের মানুষকে
ভালবেসে যুদ্ধে অংশগ্রহণ
করেছিলেন। ক্ষমতার জন্যে নয়, মমতার
টানে। পরাধীনতার জন্য নয়, স্বাধীনতা
জয়ের জন্য।
আমার কিছু করার নেই। বাবা থাকলে
বাবার কাছে বিষয়টা শেয়ার কিরতে
পারতাম। না, ভালই হইছে নেই! থাকলে
কষ্ট পেতে হত।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:৫৯