তখন আমার নতুন প্রেম। ২-৩ সপ্তাহে ১-২ বার দেখা হতো। মাসে দুইমাসে একবার হয়তো বাইরে কোথাও খেতে যেতাম। সে থাকতো হলে। তখন আমার কিংবা তার মোবাইল কিনার সামর্থ্য হয় নাই, আগে থেকে দেওয়া টাইম টেবল অনুযায়ী দেখা করতাম। তার রুমমেটের মোবাইল ফোন ছিলো। আমি সে নাম্বারটা জানতাম কিন্তু আমার প্রতি কড়া নির্দেশ ছিলো, কোনো আপদ বিপদ না হলে আমি যেন ফোন না করি।
এখন যেমন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, ঠিক তেমনি একটা বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যা, গত কয়েকদিন ধরেও বৃষ্টি হচ্ছিলো। ৩ দিন পরে পরীক্ষা, অনেকদিন ধরে দেখা হয় না, পড়তে পড়তে মাথা ঝিম ধরে আসছিলো, হঠাৎ মনে হলো, তাকে নিয়ে একটু বৃষ্টিতে ভিজে আসলে কেমন হবে?
কিন্তু ডাইরেক্ট ভিজলে যদি ঠান্ডা লেগে যায়, সেই ভয়ে ঠিক করলাম, রিক্সা করে ঘুরবো। তাই অনেক ভয়ে ভয়ে তার রুমমেটের মোবাইলে ফোন করলাম ফোনফ্যাক্সের দোকান থেকে, শুধু বললাম,'' ইমার্জেন্সী। একটু হলগেটে আসো ১০ মিনিট পরে।'' ৭ টাকা মিনিটে যত কম কথা বলা যায়, তত ভালো।
আমি রিক্সা নিয়ে যখন তার হলে গেলাম, সে তো হতভাগ, আমাকে মারাত্মক বকুনী, কেন আমি এমনটা করলাম, সে ভয় পেয়ে গিয়েছিল, ব্ল্যা, ব্ল্যা। তারপর ১৫-২০ মিনিট রিক্সায় চক্কর, আবার বিদায়। অসম্ভব এক ভালো লাগায় মনটা ভরে গিয়েছিল।
পরে পরে এটা আমার পাগলামীর পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো। বৃষ্টিতে ছাতা ধরে দুইজন একসাথে হাটা, রিক্সায় ঘুরাঘুরি, ফুটপাতে দাড়িয়ে চা খাওয়া। ভুনা খিচুরী............
আর এখনো বৃষ্টি পড়ে নিয়মিত, ঢাকা শহরেই আছি, রিক্সাও আছে। দুইজনই একই ছাদের নিচে আছি। এখন যদি কখনো বলি, চলো একটু ঘুরে আসি, তখন সে রাজী হয় না। বলে '' প্যাক, কাদা, রিক্সায় ভিজে যাওয়া, কি দরকার খামাকা? তার চেয়ে আমি শাহরুখ খানের একটা হিন্দি সিনেমা দেখি, তুমি চা খাবে`? চা বানিয়ে দিবো? পাকুড়া খাবে?''
কি আর করা? আমি বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যাতে চা এর সাথে দূর্বোধ্য হিন্দি সিনেমা গিলতে থাকি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১১:০৭