somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ফরমালিন

১৭ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক রাজ্যে এক সাধারণ প্রজা বাস করত। সে রাজ্যের প্রজারা বেশ সুখে শান্তিতে বসবাস করছিল। রাজ্যের রাজারও বেশ নাম ডাক ছিল। আশে পাশের রাজ্যের রাজা এমনকি দূর-দূরান্তের রাজারাও বেশ সুনাম গাচ্ছিল সে রাজ্যের। মোটকথা রাজ্যে সুখের অন্ত ছিল না।
জনৈক প্রজা তার পরিবার সন্তান-সন্ততি নিয়ে মোটামুটি সুখেই দিনাতিপাত করছিল। প্রজার সুখ আর কিসে প্রতিদিন কাজ জুটত,কাজ করত টাকা পয়সা পেত ,তাই দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। এতেই তাদের সুখ। জনৈক প্রজা দিনান্তে টাকা পয়সা নিয়ে বাজারে যেত চাল,ডাল,মাছ,তরিতরকারি কিনত। কোন কোন দিন একটু মাংসও কিনত। জনৈক প্রজা একদিন শুনল যে সে দেশের রাজা পাশের রাজ্যের রাজার কাছ থেকে এমন এক প্রকার ঔষধ নিয়ে এসেছে যা মাছ-মাংস,তরিতরকারি এমনকি ফলমূলে দেয়া হলে উক্ত খাদ্যদ্রব্য দশ থেকে পনের দিন এমনকি একমাস পর্যন্ত পচে না অর্থাৎ যেমন আছে তেমনই থেকে যায়। জনৈক প্রজা এ খবর তার স্ত্রীকে বলল। তার স্ত্রী বলল আমাদের যেহেতু ফ্রিজ নাই তাহলে তো ভালোই হলো ধনীদের মত আমরাও সবকিছু অনেক দিন বাড়িতে রেখে খেতে পারবো। তারা ঔষধযুক্ত তরিতরকারি নিয়ে আসলো এবং দেখল যে দশ দিন পার হলো তরিতরকারি যেমন ছিল তেমনি আছে,সিকি ভাগও পচে নাই। তখন থেকে জনৈক প্রজা ঔষধযুক্ত তরিতরকারি,মাছ-মাংস কিনতে লাগলো এবং আগের থেকে একটু বেশি সুখে বসবাস করতে লাগলো। কারণ এখন একদিন বাজারে গেলে দশ দিন না গেলেও চলে। এমন সুবিধা পেয়ে রাজ্যের সবাই রাজার আরো বেশি সুনাম গাইতে লাগলো। কিন্তু এই বাড়তি সুখ বেশিদিন স্থায়ী হলো না। যেহেতু অন্য এক রাজ্যের রাজার কাছ থেকে ঐ ঔষধ নিয়ে আসা হতো ঐ রাজ্যের রাজার সাথে বনিবনা না হওয়ায় সে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ করে দিল। ঐদিন কেউ ঔষধযুক্ত খাদ্যদ্রব্য পেল না। জনৈক প্রজা বাজারে গিয়ে দেখল যে ঔষধযুক্ত তরিতরকারি আর পাওয়া যাচ্ছে না তাই জীবন বাঁচার তাগিদে সাধারণ তরিতরকারি সে বাড়িতে নিয়ে আসলো। রান্না বান্না করে খেয়েদেয়ে রাজ্যের সবাই ঘুমিয়ে পড়লো। পরদিন দেখা গেল যে যারা পূর্বেকার মজুদকৃত ঔষধযুক্ত খাবার খেয়েছিল তারাই সুস্থ আর যারা সাধারণ খাবার খেয়েছিল তারা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লো। ভাগ্যিস রাজা মজুদকৃত খাবার খেয়েছিল! রাজা মহা চিন্তায় পড়ে গেল। রাজ্যের সব বিজ্ঞানীদের ডাকা হলো। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে লাগলো কিন্তু কেউই কোন রোগের কারণ আবিষ্কার করতে পারছিল না। অবশেষে এক বিজ্ঞ বিজ্ঞানী চিন্তা করে দেখল যে উক্ত ঔষধের সরবরাহ বন্ধই এ রোগের কারণ হতে পারে। তাই পাশের রাজ্যের রাজার সাথে সমোঝতার মাধ্যমে উক্ত ঔষধ নিয়ে আসা হলো এবং পরীক্ষামূলকভাবে বিশ গ্রাম উক্ত ঔষধ জনৈক প্রজার শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হলো। ঔষধ প্রয়োগ মাত্রই জনৈক প্রজা সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে গেলো। এভাবে রাজ্যের অসুস্থ সবাইকে সুস্থ করা হলো। রাজা উক্ত ঔষধকে নিয়মিত খাবারের অপরিহার্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করলো। রাজ্যের সবাই ঔষধযুক্ত খাবার খেয়ে সুখেই বসবাস করতে লাগলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:০৩
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ার রক্তচোখ: ক্রোধের নগর

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫২


ষড়ঋপু সিরিজের দ্বিতীয় কাহিনী ”ক্রোধ”

রাত্রি নেমেছে শহরের উপর, কিন্তু তিমির কেবল আকাশে নয়—সে বসেছে মানুষের শিরায়, দৃষ্টিতে, শ্বাসে। পুরনো শহরের এক প্রান্তে, যেখানে ইট ভেঙে পড়ে আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২



প্রিয় কন্যা আমার-
ফারাজা, তুমি কি শুরু করেছো- আমি কিছুই বুঝতে পারছি না! রাতে তুমি ঘুমানোর আগে ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমাতে যাও। প্রতিদিন তোমার মুখে ঘুমের দোয়া শুনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি আমি আর আমাদের দুরত্ব

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩



তুমি আর আমি
দুই বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে,
নেই কোন লোভ চুম্বনের ,
ছোঁয়ারও কোন প্রয়োজন নেই
অথচ প্রতিটি নিঃশ্বাসে কেবলি তুমি।

তোমার হাসি সুবাসিত নয়,
কিন্তু সে আমায় মাতাল করে
যেন তরংগ বিহীন কোন সুর বাজে
মন্থর বাতাসে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৪



পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

'৭৪ সালের কুখ্যাত বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এখন সময়ের দাবী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫


বিগত আম্লিক সরকারের আমলে যে কুখ্যাত আইনের অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করে গায়েব করার চেষ্টা চলতো তা হলো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। এই আইন ব্যবহার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×