একদা এক দেশে ছিল এক রাজা। তাহার ছিল এক রাণী। রাজা তো যেই সেই রাজা না। তাহার ছিল কঠিন এক পাওয়ার। মন্ত্রের বলে সে ডাকিতে পারিতো সমস্ত পাখীকূল কে । একদিন রাণী আর রাজা ভালবাসাবাসি করিবার সময় রাণী বলিলঃ "জানু, আমার না একখান শখ আছে। তুমি তো মহাপরাক্রমশালী রাজা, আমি জানি আমার শখ তুমি অবশ্যি পূরণ করিতে পারিবে।" রাজা বলিলেনঃ "কেন নয় জানপাখি, আমার এই রাজ্য, ধন-দৌলত আর মন্ত্রসাধনা সবি তো তোমারি জইন্য। বলো কি করিতে পারি তোমার জইন্য?" রাণী সাহেবা শুধাইলেনঃ " পাখির পালকের বিছানায় তোমার সাথে শয়ন করিবার খুব খায়েশ আমার, তুমি তো পাখি আনিবার মন্ত্র জানো। ইচ্ছা করিলেই তুমি আমার লাগি পালকের বিছানা তৈয়ার করিতে পারো। রাজা তখন কিঞ্চিত চিন্তিত হইয়া পরিলেন। রানীকে সুধাইলেন "রানী আমি যদি পাখিকূল কে এই কথা বলিলে তারা বলিবে রাজামশাই মনে হয় স্ত্রৈণ। তুমি অন্য কিছু চাহিয়া দেখ আমি নিমিষেই হাজির করি তোমার সম্মুখে।" কিন্তু রানী সাহেবা অনড়। তাহার পাখির পালকের বিছানাই লাগিবে। যদি রাজামশাই উহার ব্যবস্হা অতি শীঘ্রই না করেন তবে উনি রাজামশাইয়ের সহিত বিছানায় গমন করিবেন না। এই কথা শুনিয়া রাজামশাইয়ের স্ত্রী প্রেম চ্যাগাইয়া উঠিল। উনি বলিলেন দেখি কি করিতে পারি।
রাজামশাই পাখিদের মন্ত্রবলে আহ্বান করিলেন। পাখিরা দলে দলে ছুটিয়া আসিল। রাজামশাই রানীর মনোবান্ছা পাখিদের নিকট খুলিয়া বলিলেন। পাখিদের পক্ষ হইতে একজন আসিয়া বলিল আমাদের পক্ষিরাজের আদেশ ছাড়া তো আমরা কিছু বলিতে পারিনা, উনি আবার সাতসমুদ্র তের নদীর ওপারে এক মহা হিসেব নিকেশে ব্যস্ত আছেন। তাই আসিতে পারেন নাই। আমরা উনার সাথে কথা বলে দুইদিন পর আপনাকে পাখা দিয়া যাবো। রাজা যারপরনাই আশ্বস্ত হইলেন।
অবশেষে সেই দিন সমাগত হইলো। দলে দলে পাখিরা রাজার দরবারে সমবেত হইলো। রাজা শুধাইলেন "আর দেরী কেন আমার প্রানপ্রিয় পাখিকূল? দান করো তোমাদের পালক, আমি যে রানীর সাথে সেই পালকে র বিছানায় শয়নের জইন্য কার্তিক মাসের কুকুরের চাইতেও দেওয়ানা হইয়া আছি"






রাজামশাই অতি রাগান্বিত এবং লজ্জিত হইয়া কহিলেন দূর হয়ে যা হতচ্ছাড়ার দল। লাগিবেনা তোদের পালক। নানান খিস্তি খেউর পারিতে পারিতে তিনি রানীসাহেবার মহলে রওয়ানা হইলেন। রানী সাহেবার নিকট যাইয়া রাজা অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলিতে লাগিলেন :"আজিকে শুধু তোমারি জইন্য আমি নগন্য পাখিকূলের কাছে শরমিন্দা হইয়াছি" । রানী সাহেবা চক্ষু হইতে অগ্নিবর্ষন করিয়া কহিলেন, "তার মানে তুমি পাখির পালকের ব্যবস্হা করিতে পার নাই? আমি চলিলাম আমার বাপের বাটি। আমাকে তুমি যে কেমন ভালবাস তা বুঝিতে পারিলাম" । অবস্হা বেগতিক দেখিয়া রাজা রণে ভংগ দিয়া কহিলেন "রাগ করিয়োনা প্রিয়তমা, দেখি তোমার লাগি কি করিতে পারি"
রাজামশাই আবার মন্ত্রবলে পক্ষিকূলকে আসার জইন্য বলিলেন। পক্ষিকূলের রাজা আবারো দেরিতে আসিল। রাজামশাই জিজ্ঞাসিলেন, আগেরবার তো শুমারীর জইন্য দেরী করিয়াছিলে, এইবার কি কারণে দেরী হইলো?





পক্ষিরাজ কাচুমাচু করিয়া কহিলেনঃ "মহারাজ, আমি গুনিয়া দেখিয়াছি জগতে মুখের তুলনায় *ুটকির সংখ্যা বেশি। কারণ যারা একেক বার একেক কথা বলে তাহাদিগের মুখ কে আমি *ুটু হিসেবে গুনিয়াছি। আর আরেক টা কথা মহারাজা, হিসেবের সুবিধার জইন্য আপনার মুখকেও পুটু গুনিতে হইয়াছে আমার"



*** ইহা নিতান্তই একটি গল্প। কেহই ইহার সাথে আমাদের রাজনীতিবিদদের কথা মিলাইতে যাইবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:৩৭