আমার ফটোগ্রাফার হবার শখ কিভাবে নিভেছিল তা যদি আজ না লিখি তবে অতি দূর আগামীতে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ ইলেক্ট্রন মাইক্রস্কোপ দিয়ে খুঁজলেও তার নাগাল পাবেননা। তাদের সেই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্যি আমার এই খুদ্র অপচেষ্টা।
তখন ভার্সিটিতে পড়ি। শাটল ট্রেনে আসি যাই। ঠিক কোন বর্ষে জানিনা এক শীতের সন্ধ্যায় পাঁচটার ট্রেনে ফিরতে সুর্য ডোবার পরের আলো এতই ভালো লাগল ভাবলাম ইস যদি ক্যমেরা হাতে থাকত।
তখন অটোর যুগ, ডিজিটালের যুগ আসে নাই। অটো মানে এক ক্লিকেই ছবি তোলা যায়। এই রকম এক খানা ক্যমেরার সন্ধান পেলাম আমার এক প্রতিবেশীর কাছে। সেই ক্যামেরা তার মামা মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাঠিয়েছেন। কাচু মাচু ভাব করে ধার নিয়ে এলাম সেই ক্যামেরা। রিল কিনে প্রস্তুত। পরদিন সকালে ক্যামেরা হাতে ট্রেনে চড়ে বসলাম। যাই দেখি ভালো লাগে। বিভিন্ন এঙ্গেল কল্পনা করি তাহলে হয় দূর্দান্ত। ছবি নিলাম। বন্ধু বান্ধবের ছবি তুললাম। ভার্সিটি গিয়ে কাটা পাহাড়ের রাস্তা, ট্রেন, প্ত্রশুন্য বৃক্ষ, ঝরণা যা পেলাম তুললাম। ক্লাশ সেষ করে ফিরতে ফিরতে আরো অনেক সাবজেক্ট পেলাম। ছবি নিলাম।
ফিরবার ট্রেনে উঠে ব্যগ রেখে জায়গার দখল রাখলাম। পরিচিত দুতিন জন আশে পাশে আছেন। বসে বসে ছবি গুলো প্রিন্ট করলে কেমন হবে ভাবতে ভাবতেই ক্ষুধা লাগল। ন্সতা সেরে আসলাম। ফিরে এসে দেখি ব্যগ আগের জায়গাতেই আছে। কিন্তু যে একটা মোটা ভাব ছিল তা আর নেই। বোকা নয় বেকুবের মত ব্যগের ভেতর ক্যামেরা রেখে নামার মজা বুঝলাম।
মাথা কেমন করে উঠল। ক্যামেরা ফেরত দেব কেমন করে?
সেদিন টুশনের টাকা পেলাম তাই রক্ষা। নিঊ মার্কেট থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড একটা অটো ক্যামেরা কিনে রশিদ সহ কাচু মাচু হয়ে সেই ক্যামেরা দিয়ে এলাম।
তখন বুঝিনি ক্যামেরার এমন সুদিন আসবে।