somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাচন হয়ে গেল তিউনিসিয়ায়

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




তিউনিসিয়া আরব বসন্তের সূতিকাগার।


জাতীয় নির্বাচন হয়ে গেল তিউনিসিয়ায়। ১৫ সেপ্টেম্বর। গতকাল ফল ঘোষনা না হলেও ফলাফল জানা গেছে।

স্বৈরশাসক বেন আলীর বিদায়ের পর অন্যান্ন আরব দেশের মত মৌলবাদি বা একনায়কের খপ্পর থেকে বেচে যাওয়া তিউনিসিয়া নিয়ে আমার আগ্রহ বরাবরই ছিল।
বাংলাদেশী পত্রিকায় ইসরাইলি নির্বাচনের খবর থাকলেও তিউনিসিয়ার কোন খবরই দেখি না। টিভিতেও নেই।
বিবিসি ইংলিশ পেজে কিছু পেলাম।

২০১৪ নির্বাচনে পশ্চিমা সেক্যুলার ধারণাকে ভিত্তি করে সুশীল সমাজকে নিয়ে সাইদ এসেবসি গড়ে তোলেন 'নিদা তুনিস'। আরব বসন্তের পর কর্মদক্ষতা দিয়ে নিদা তুনিসকে স্থানীয় ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জিতিয়ে দেশটিকে মৌলবাদি খপ্পর থেকে বাচিয়ে দিয়েছিল।
এসেবসি জয়লাভ করলেও ইসলামপন্থি আধা-মৌলবাদি আন্নাহদা দলের অনেককে স্পিকার পদ সহ বিভিন্ন পদ দেয়া হয়েছিল।
তিউনিসিয়া ছিল আরব বসন্তের সূতিকাগার।
বিপ্লব-পরবর্তী উত্তাল দিনগুলোতে ইসলামপন্থী আর সেক্যুলারদের ক্ষমতা ভাগাভাগিতে স্থিতিশীল ছিল তিউনিসিয়া। যদিও ক্ষমতার ভাগাভাগি করে দেশটিকে ৫ বছর একটানা শান্তিপুর্ন রাখা আরব দুনিয়ায় অকল্পনীয় ঘটনা।
গত বছর মুসলিম উত্তরাধিকার আইন সংসোধন করেছিল।




ত্রুটিপুর্ন মুসলিম উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে আরব বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে তিউনিসিয়ায় সম্পত্তিতে নারীপুরুষের সমান অধিকার বিল পাশ হয়েছে। এর মাধ্যমে নারী-পুরুষেরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির সমানাধিকার দেয়া হচ্ছে।

গত ২৩ নভেম্বর দেশটির মন্ত্রীসভা পরিষদ নতুন এই বিল পাস করে। বিলটি পাস করার আগে দেশটির মন্ত্রীসভায় ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়।
তিউনিসিয়ার কট্টরপন্থি মুসলিমরা এই বিলের প্রবল বিরোধিতা করে আসছিলন। তাদের অভিযোগ নতুন এই আইন ইসলাম বিরোধী। তবে প্রেসিডেন্ট এসবেসি পক্ষ থেকে বলা হয়, তিউনিসিয়ার সংবিধান দেশটির নাগরিকদের মতামতের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। নাগরিকদের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে এসবেসি সরকার বদ্ধ পরিকর।

২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট এসেবসি দেশটির নাগরিকদের ব্যক্তিস্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য স্বতন্ত্র স্বাধীনতা ও নারী সমানাধিকার কমিটি গঠন করেন।
অন্যান্ন আরব দেশের মত তিউনিসিয়ায় ভিন্নধর্মে বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল, বিশেষ করে মুসলিম নারীদের ভিন্নধর্মে বিবাহ কঠিন ভাবে নিষিদ্ধ ছিল। গত বছর একটি আইনে দেশটির মুসলিম নারীদের যে কোন ধর্মে বিয়ে করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী পিতার সম্পত্তির পুত্রের চেয়ে কন্যা সন্তান বঞ্চিত হয়ে অর্ধেক কম পেত। এখন সমানধিকার।

গত অগাস্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট, যিনি একজন উদার সেক্যুলার রাজনীতিক, নারীদের অধিকার এগিয়ে নেওয়ার লক্ষে খসড়া প্রস্তাব পেশ করতে একটি কমিটি গঠন করেন।

তিউনিসিয়াই একমাত্র দেশ যেখানে ‘আরব বসন্ত’ সফল হয়ে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।





১৫ সেপ্টেম্বর আবারও জাতীয় নির্বাচন হয়ে গেল তিউনিসিয়ায়।
তবে স্বতন্ত্র প্রার্থিরা গত বছর থেকেই ভাল করছিল
গত বছরের স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩৩, ইসলামপন্থি আধা-মৌলবাদি আন্নাহদা ২৯ আর এসেবসি সেকুলার নিদা তুনিস ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।

কিন্তু বেচারা প্রেসিডেন্ট সাইদ এসেবসি মারা যাওয়াতে একটু আগেই আগাম নির্বাচন হলো।
এই নির্বাচনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬ জন, যার মধ্যে দু’জন নারীও ছিলেন। মূল প্রতিদ্বন্দীদের মধ্যে ছিলেন -

১। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নাবিল করৌই।
২। ইসলামপন্থী আন্নাহাদা দলের প্রধান ও প্রাক্তন স্পিকার আবদুল ফাত্তাহ মুরো।
৩। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ শাহেদ।

কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে সবাইকে অবাক করে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থি কায়েস সাইদ 18.4% ভোটে প্রথম হন। উনি একজন ল প্রফেসর।
২য় হন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নাবিল করোই (সদ্য জেল থেকে বের হওয়া)।

যেহেতু এরা কেউই ৫০% ভোট পান নি। ফ্রান্স, মিশরের মত এই দুজনের ভেতরেই আবার ভোট হবে। অক্টোবরে।
আর পার্লামেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ৬ অক্টোবর। সেই একই দিনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় রাউন্ড (ফাইনাল) ভোটগ্রহণও করা হতে পারে।

তিউনিসিয়ার গণতন্ত্রের জন্য শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৩
১৭টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×