somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেহেস্তে গোলাম আজম!

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসস পথ শ্যাষ হয় না ক্যান? ২য় আসমানের পাথুরে করিডোর দিয়ে হুইল চেয়ার ঘুরাইতে ঘুরাইতে বেহেস্তের দরজার দিকে যাইতেছেন হুজুর গোলাম আজম। জান্নাতুল ফেরদৌস পাইলে ভাল হইত, যাক যেটা জুটসে যতেষ্ঠ। “ওফফ ঘাম ছুটে গেছে” বেহেস্তের বিশাল ফটকের সামনে ট্রলির চাকা থামলো। বিশাল লম্বা দ্বাররক্ষী বল্লম হাতে দাঁড়ানো!
খামোশ। কি চাই?
বেহেস্তে ঢুকবো। ফেসফেসে গলায় শব্দ বের হচ্ছে না, একটু কাসি দিয়ে আবার বললো। “বেহেস্তে যাবো”
নাম কেয়া হ্যায়?
গোলাম আজম। সামান্য ফেরেস্তা হইয়া ইনসানের সাথে এহেন বেয়াদবি দেখে একটু বিরক্ত ছাগু চিফ।
কোন দেশ থেকে আসা?
পাকিস্তান। ওহো ভুল হয়ে গেছে, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।
চামড়া মোড়ানো নোটবুকের পাতা উল্টাইতেছে দ্বাররক্ষী, সরি সার, আপকা নাম নেহি হ্যায়।
কি বলেন! আমাকে আগেই সার্টিফিকেট দেয়া হইছে, ভাল করে দেখেন নাম আছে।
নাম নাই, আমরা একবারের বেশী দুইবার দেখিনা, বল্লমটা সোজা করে ধরে।
এই সার্টিফিকেট টা দেখেন। একটা ছোট চিরকুট এগিয়ে দিল গোলাম।
দেইখা লাভ নেহি হ্যায়, কাগজটা হাতে নিয়ে চোখ বড় হয়ে গেল দ্বাররক্ষী ফেরেসতার।
ইয়াল্লাহ! এত বড় পাশ কোথায় পাইলেন? ফটকের ভেতর থেকে আরেক ফেরেস্তা, কোমরে তলোয়ার।
দেখি, বাজখাই গলায় বলল ২য় ফেরেস্তা। “ঠিক আছে আপনি ভেতরে যেতে পারেন”

সুন্দর একটা হুর এসে হুইল চেয়ারটা বেহেস্তের ভেতর নিয়ে গেল। মিষ্টি বেহেস্তি বাতাসে শরির জুরিয়ে গেল গোলামের।
হাই! “দুনিয়াভি সফর কেমন হ্যায়”। একদল হুর ঘিরে ধরেছে গোলামকে। দাড়ীতে আঙ্গুল চালিয়ে একজন - ইসস কিয়া সুন্দর বাল হ্যায় ! কেউ দাড়ী ধড়ছে কেউ পাঞ্জাবী, একটু ঠেলাঠেলি, হট্টগোল.. এই! আমারে একটু সাইড দে, টুপি হাতে নিয়ে একজন, ওফফ কি সুন্দর আতর খুসবু! ফাকে একজনকে টেনে নিল গোলাম, জড়িয়ে ধরতেই ..
সব থাম! সবাই সরে দাড়া।
স্লামালাইকুম, হুজুর। আমি হাবিবা হুর, ৭২ জন হুরের ক্যাপ্টেন, আপনার খেদমতে আছি। ওকে ছেড়ে দেন, এখন কিছু করা বা ধরা যাবে না, কিছু ফরমালিটি আছে। একটা ফর্ম পুরন করতে হবে। এছাড়া আজ রাতে পরিক্ষা হবে, মেশিনের। পাস করলে তারপর সব, হাসিমুখে হাবিবা।

বেহেস্তি বিছানায় বসে আছে গোলাম। হুরেরা তার সেবায় ব্যাস্ত। মানে মনে গজ গজ করতেছে গোলাম, এত কাছে পাইয়াও কিছু করতে পারিনা এইডার কোন মানে আছে? হাবিবা হুরের নিয়মকানুন শুনে কিছুটা অসন্তুষ্ট। ক্যাপ্টেন হাবিবা মালটা ভালই, তারচেও খাসা ছিল প্রথমটা যেইটারে ধরছিলাম। একটা গেলম্যান থাকলে আরো ভাল হইত।
ওহহ ওইটাই আসতেছে প্রথম হুরটা। পাসে বসলো গোলামের।
কি নাম তোমার?
উম্মে খলকি।
বাহহ কি মিস্টি নাম।
খবর শুনছেন? গোলামের কানের কাছে ফিস ফিস করে উম্মে খলকি,
কিসের খবর?
রাতে মেশিন পরিক্ষা করবে দুজন হুর। পরিক্ষা ফেল করলে বেহেস্তি নিয়মে মেশিন কেটে বাদ দেয়া হয়।
নাউজুবিল্লাহ! এইটা কি শোনাইলা। তবে সমস্যা নাই। আমার দেহ খারাপ হইলেও মেশিন্ডা ভালা রাখছি।
আরেকটা খবর, আপনার দেশের দুইজন এই বেহেস্তে আসছিল আপনার মত সার্টিফিকেট নিয়ে, ফাইল চেক করে পরদিন দোজকে পাঠিয়ে দেয়া হইছে।
আসতাকফেরুল্লাহ! বল কি! ওদের নাম কি? কি করছিল।
একজনের নাম কাদের, আরেকজন নাম আলিম। ওরা দুনিয়াতে ধর্ষন করছিল।
ইয়াআল্লাহ! বলকি?
হ্যা বেহেস্তি নিয়মে দুনিয়াতে ধর্ষন করে থাকলে বেহেস্তে কোন স্থান নেই।
আমার সমস্যা নেই, আমার সার্টিফিকেট কড়া। ধর্ষনও করি নাই। (মনে মনে কয় ধর্ষন তো করছি কয়েকটা, কোন শাক্ষি তো রাখি নাই)
চলেন আপনারে একটু ঘুরাইয়া আনি, হুইলচেয়ার ঠেলছে উম্মে খলকি। বিভিন্ন জায়গা দেখাইতেছে।

এই দেয়ালডা এত গরম কেন?
এর ঐপারে দোজখ। দেখবেন? পাথরের জানালাটা খুলে দেখায় উম্মে, দেখেন।
উকি দিয়া দেখে আগুন জলতেছে, অনেক মানুষ, আগুনে পুড়তেছে হাত পা বাধা, আরে এইডা তো আলিম! শীককাবাব বানাইতেছে, মাঝে মাঝে গুরুজ দিয়া পাছায় বারি দিতেছে, কাদেররে দেখা যায় না খুইজা পাওয়া যাচ্ছে না, চশমাটা মুছে আবার কাদেরকে খোজার চেষ্টা।
চলেন। গরম। এখানে বেশিক্ষন থাকা যায় না। আটটার সময় মেশিন পরিক্ষা।

ঘাম ছুটে গেছে গোলামের, বিছানায় বসে বার বার কপাল মুছতেছে। কালকে তো পাছায় রড ঢুকাইয়া কাবাব বানানো হবে, সাথে গুরুজ তো আছেই, মক্কার হুজুর কি সার্টিফিকেট দিল? আগে জানলে ধর্ষন মায়নাস করাইরা আনতাম। ফেরেস্তা দাদার পায়ে ধরমু কালকে।
হায় হায়। ভয়ে তো মেসিন নেতাইয়া পরছে! এখন কি হবে? পরিক্ষায় নির্ঘাত ফেল! মেসিন হারাইতে হবে নিশ্চিত। দেলু ভাইয়ার কাছে মেশিন খাড়া করার সুরা মোগস্ত করছিলাম, সব ভুইলা গেছি।

স্যার টাইম হয়ে গেছে। হুজুর চলেন চলেন।
দু জন সুন্দরী হুর, একজনের হাতে ট্রে কাপড় দিয়ে ঢাকা খুর-কাঁচির বাট দেখা যাছে কাপড়ের ফাকে। হুইল চেয়ার ঠেলা শুরু করল একজন। রুমের বাইরে একপাল পুলকিত হুর গোলামের দিকে ফ্লাইং চুম্মা দিচ্ছে ... খুনশুটি ...। একটা বড় রুমে ঢুকল হুইলচেয়ার। ঐ দুইজন ও ঢুকলো। দরজা লক। বাইরে হুরদের ঠেলাঠেলি চলছেই।
একটু পরে সবাই নিশ্চুপ হয়ে কি যেন শোনার চেষ্টা করছে। ভেতরে কোন শব্দ নেই।
৫-৬ মিনিট পর একটি চিৎকারে নিস্তব্ধতা খান খান হয়ে গেল ... ওরে বাবারে ... গেছি গেছি গেছি ...


ব্লগার বিলিভ ইট অর নট (শ্যামল বিশ্বাস) এর পোষ্টের কিছু অংশের আলোকে লেখা।
কপিরাইট - হাসান কালবৈশাখী
১৫টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×