হে আমার মেয়ে!জেনে রেখো! একবার যদি কোন মেয়ের জীবনে কলঙ্ক নেমে আসে এবং তার সমাজ যদি তা জেনে ফেলে তবে কেউ তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করবে না। এমন কি যেই পুরুষ তাকে নষ্ট করেছে সেও তাকে বিয়ে করে নিজের সংসার গড়তে রাজী হবে না। অথচ সেবিয়ের মিথ্যা ওয়াদা করে তার সতীত্ব ও সম্ভ্রম নষ্ট করেছে এবং মনের চাহিদা পূরণ করে কেটে পড়েছে। বরং সে যখন বিয়ের মাধ্যমে কোন নারীকে ঘরে উঠাতে চাইবে তখন তাকে বাদ দিয়ে অন্য একটি সম্ভ্রান্ত, সম্মানিত, ভদ্র, সতী ও পবিত্র নারীকেই খুঁজবে। কেননা সে কখনই চাইবে না যে, তার স্ত্রী হোক একজন নষ্ট নারী, ঘরের পরিচালক হোক একজন নিকৃষ্ট মহিলা এবং তার সন্তানদের মাতা হোক একজন ব্যভিচারীনী। নিজে ফাসেক ও পাপী হয়েও সে চাইবে তার স্ত্রীটি হোক ফুলের মত পবিত্র। এমন কি যখন সে নিজের পাপ ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্য পাপের বাজারে কোন পাপীষ্ট মহিলাকে খুঁজে পাবে না এবং বিয়ে ছাড়া নিজের যৌনচাহিদা পূর্ণ করার কোন রাস্তা খুঁজে পাবে না তখন সে ইসলামের সুন্নাত অনুযায়ী বিয়ের মাধ্যমে কাউকে নিজের স্ত্রী বানানোর সন্ধানে বের হবে। সে কোন পতিতাকে বা নষ্ট মহিলাকে কখনই ঘরের স্ত্রী বানাতে রাজী হবে না।
হে আমার মেয়ে!তুমি তোমারবোনদেরকে বলঃ হে বোন! তুমি কি জান পুরুষেরা কেন তোমার কাছে আসতে চায়? কেন তোমাকে নিয়ে ভাবে? কারণ তুমি খুব সুন্দরী এবং যুবতী। সে তোমার সৌন্দর্য্যরে পাগল। তাই সে তোমার চারপাশে ঘুরে এবং তোমাকে নিয়েই ভাবে। এখন আমার প্রশ্ন হল, তোমার এই যৌবন ও সৌন্দর্য্য কি চিরকাল থাকবে? দুনিয়াতে কোন জিনিস কি চিরস্থায়ী হয়েছে? শিশুর শিশুকাল কি শেষ হয় না? সুন্দরীর সৌন্দর্য্য কি আজীবন থাকে? তোমার বোন যদি বিবাহের মাধ্যমে পরিবার গঠনে আত্মনিয়োগ না করে এবং ইসলামের শত্রুদের ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত হয়ে ইসলামী পারিবারিক জীবনের গণ্ডির বাইরে চলে যেতে চায় তাহলে তাকে প্রশ্ন করঃ হে বোন!তুমি যখন বৃদ্ধ হবে, যখন তোমার পিঠ ও কোমর বাঁকা হবে এবং দেহের সৌন্দর্য্য বিলীন হবে তখন কে তোমার দায়িত্ব নিবে? তোমার পরিচর্যাই বা করবে কে? তা কি তোমার জানা আছে? যারা তার সেবা করবে, তারা হচ্ছে তার ছেলে-মেয়ে, নাতী-নাত্নী। আর সে রাণীর মত সিংহাসনে বসে পরিবারের অন্যদেরকে পরিচালনা করবে। এখন তুমি চিন্ত কর, তুমি কি করবে? বিবাহের মাধ্যমে তুমি কি এক নির্মল শান্তির সংসার রচনা করবে? না ব্যভিচারীনী হয়ে স্বল্প সময় উপভোগ করে তোমার ভবিষ্যৎ জীবনকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিবে? স্থায়ী সুখের বিনিময়ে অস্থায়ী সুখ ক্রয় করা কি কোন বুদ্ধিমানের কাজ হবে? যুবক বয়সের সামান্য বিলাসিতা কি শেষকালের করুণ পরিণতির সমান হবে? কখনই হবে না।
ইউরোপ ভ্রমণকারী এক পর্যকট বলেনঃ আমি বেলজিয়ামের কোন এক শহরের রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় পদচারী পারাপারের জন্য সিগন্যাল খুলে দেয়া হলে দেখলাম একজন বৃদ্ধা রাস্তা পার হতে চাচ্ছে। সে এতই দুর্বল ছিল যে, তার হাত-পা কাঁপছিল। গাড়িগুলো প্রায় তার উপর দিয়ে উঠে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। কেউ তার হাত ধরছিল না। আমার সাথের একজন যুবককে মহিলাটির হাত ধরে সাহায্য করতে বললাম। তখন ৪০ বছর যাবৎ বেলজিয়ামে বসবাসকারী আমার এক বন্ধু বললেনঃ এই মহিলাটি এক সময় এই শহরের অন্যতম সুন্দরী হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত ছিল।পুরুষেরা তার উপর দৃষ্টি ফেলার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হত, তার সংষ্পর্শ পেতে পকেটের অর্থ খরচ করত এবং তার সাথে একবার হলেও করমর্দন করার প্রচেষ্টা করত।
এই মহিলাটির যখন যৌবন ও সৌন্দর্য্য চলে গেল, তখন তার হাত ধরে একটু সাহায্য করার জন্য একজন লোকও সে পাচ্ছে না! এ রকম ঘটনা একটি নয়; শত শত পাওয়া যাবে।
হে আমার মেয়ে!তোমার পথহারা বোনদেরকে এ সব কথা বলে উপদেশ দাও, তাদেরকে মর্মান্তিক করুণ পরিণতির কথা শুনাও। ইউরোপ-আমেরিকার যুবতীদের পথ ধরা থেকে তোমার ঈমানদার বোনদেরকে সতর্ক কর এবং রোগে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই তাদের মধ্যে প্রতিষেধক রোপন কর।
হে আমারমেয়ে!আমি এ কথা বলছি না যে, তোমার প্রচেষ্টায় মুসলিম রমনীগণ এক লাফে প্রথম যামানার মুসলিম নারীদের মত হয়ে যাবে। এটি অসম্ভব। কারণ বর্তমানে মুসলিম নারীগণ যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে, তা এক লাফে এসে পৌঁছে নি। তারা প্রথমে মাথার চুলের একাংশ খুলেছে, তারপর পুরোটাই। অতঃপর কাপড় ছোট করতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে দীর্ঘ দিনের ব্যবধানে তারা জাতির পুরুষদের গাফিলতির সুযোগে বর্তমানের দুঃখজনক পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। তারা হয়ত কল্পনাও করতে পারে নি যে, বিষয়টি এ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে।
তুমি যদি ছোট একটি ঘড়ির কাটার দিকে তাকাও তাহলে দেখবে, সেটি নড়ছে না; বরং আপন স্থানেই অবস্থান করছে। তুমি যদি দুই ঘন্টা পর পুনরায় ঘড়ির কাছে ফেরত আস, তাহলে দেখবে কাটা এখন আগের স্থানে নেই। দেখবে সেটি অনেক অগ্রসর হয়েছে। এমনিভাবে শিশু জন্মগ্রহণ করে একদিনেই যুবক হয়ে যায় না এবং যুবক হয়ে এক লাফে বৃদ্ধে পরিণত হয় না; বরং দিনের পর রাত, রাতের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অতিক্রম করার মাধ্যমে সে বিভিন্ন অবস্থা অতিক্রম করে। এমনিভাবেই জাতির অবস্থা পরিবর্তন হয় এবং ভাল থেকে মন্দ ও মন্দথেকে ভালর দিকে ধাবিত হয়।
অশ্লীল পত্রিকা, নিকৃষ্ট ম্যাগাজিন, উলঙ্গ ছিনেমা, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, ইন্টারন্টে, ফাসেক ও পাপীষ্টদের প্ররোচনা সর্বোপরি মুসলিমরমনীদেরকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইসলামের শত্রুদের অবিরাম প্রচেষ্টার ফলে বর্তমান মুসলিম নারীদের অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, যা ইসলাম ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করে। টিভি চ্যানেলে দেখা যায় একজন পুরুষ একজন যুবতী মেয়েকে হাত ধরে নাচাচ্ছে, পরস্পর জড়িয়ে ধরছে, গালে গাল ও বুকে বুক লাগাচ্ছে। টিভির পর্দার সামনে কি সেই মহিলার পিতা-মাতা ও যুবক-যবতী ভাই-বোন থাকে না? এ ধরণের পিতা-মাতা কি তাদের এই নায়িকা মেয়েটিকে চিনতে পারে না? তারা কি মুসলিম নয়? কোন মুসলিম কি তার মেয়েকে এই অবস্থায় দেখতে পছন্দ করতে পারে? এই দৃশ্য কি চোখ খুলে দেখতে পারে? তার মেয়েকে নিয়ে অন্য একজন পুরুষ এভাবে খেলা করবে আর সে তা উপভোগ করবে- এটি কোন মুসলিম সমর্থন কর তেপারে কি? ইসলাম তো দূরের কথা, এমনকি খ্রষ্টান ও অগ্নিপূজকদের ধর্মও তা সমর্থন করেনা। তাদের ইতিহাস পাঠ করলেই এ কথার প্রমাণ মিলে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ও বেশ কিছুমুসলিম দেশে মুসলিম নারী-পুরুষের চারিত্রিক অবস্থা এই পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, মানুষ তো দূরের কথা; পশুরাও তা গ্রহণ করতে পারে না।
দু’টি মোরগ যখন একটি মুরগীর নিকটবর্তী হয়, তখন মুরগীটিকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেওয়ার জন্য মোরগ দু’টি পরস্পর ঝগড়া করে এবং একটি অন্যটিকে তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তুমি দেখবে যে, মিশর, লেবানন ও বাংলাদেশের কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতসমূহে এবং ঢাকার পার্কসমূহে মুসলিম নারীদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তাদের মুখ, মাথা, পেট, পিঠ এমন কি সবই উন্মক্ত। শুধু তাই নয়; অবস্থা এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দু’জন পুরুষ মিলে একজন মহিলাকে ভাগাভাগি করে উপভোগকরছে। এই অবস্থা কি কোন পশু সমর্থন করে? একটি মোরগ কি চায় যে, তার আয়ত্তের মুরগীটির উপর আরেকটি মোরগ এসে আরোহন করুক?
ব্যভিচার শুধু মানব জাতির কাছেই ঘৃণীত নয়, কিছু কিছু বন্য পশুও এই অপরাধকে ঘৃণা করে।
সহীহ বুখারীতে এই মর্মে আমর বিনমায়মুন থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেনঃ “ইয়ামানে থাকাবস্থায় আমি একদা একটি উঁচুস্থানে ছাগল চরাচ্ছিলাম। দেখলাম একটি পুরুষ বানর একটি নারী বানরের হাতের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে। পুরুষ বানরটির চেয়ে কম বয়সের আরেকটি বানর এসে স্ত্রী বানরটিকে খোঁচা মারল। এতে স্ত্রী বানরটি পুরুষ বানরের মাথার নীচ থেকে চুপচাপ হাত বের করে আগত বানরটির পিছে চলতে থাকল। কিছু দূর গিয়ে বানরটি স্ত্রী বানরের সাথে কুকর্মেলিপ্ত হল। তারপর স্ত্রী বানরটি ফিরে এসে ধীরে ধীরে তার যুগলের (স্বামীর) গালের নীচে হাত রাখার চেষ্টা করতেই সে পেরেশান হয়ে জেগে উঠল। স্ত্রী বানরটির শরীরের গন্ধ পেয়েই চিৎকার করতে শুরু করল। এতে একদল বানর একত্রিত হল। পুরুষ বানরটি চিৎকার করে হাতে স্ত্রী বানরটির দিকে ইঙ্গিত করে ব্যভিচারের কথাটি অপরাপর বানরকে বুঝাতে লাগল।বানরগুলো ডানে বামে খুঁজা-খুজি করে অপরাধী বানরটি ধরে নিয়ে আসল। আমর বিন মায়মুন বলেনঃ আমি সেই বানরটিকে চিনে রেখেছিলাম। তারা উভয়ের জন্য গর্ত খনন করলো এবং তারা উভয়কেই রজম করলো। আমর বিন মায়মুন বলেনঃ আমি বনী আদম ছাড়াও অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যেও রজম দেখেছি।
অন্য বর্ণনায় আমর বিন মায়মুন বলেনঃ বানর গুলোর পাথর মারার দৃশ্যদেখে আমি ধৈর্যধারণ করতে না পেরে আমিও তাদের সাথে পাথর মারলাম।
মুসলিম দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মুসলিম যুবকরা মুসলিম মুসলিম যুবতী মেয়েদের পাশেই মাথা, মুখ ও বুক খুলে বসছে। মুসলিম পিতা-মাতাগণ স্বেচ্ছায় তাদের কন্যাদের জন্য এটিকেই বেছে নিচ্ছে।
হে আমার মেয়ে!মুসলিম মেয়েদের এই অবস্থা একদিনে পরিবর্তন হবে না। এক লাফে তারা পূর্বেই সেই আসল অবস্থায় ফিরে যাবে না; বরং আমরা সেভাবেই তাদেরকে ধীরে ধীরে পূর্বের অবস্থায় ফেরত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব, যেভাবে পর্যায়ক্রমে তারা বর্তমানের করুণ ও দুঃখজনক অবস্থায় এসে পৌঁছেছে।
আমাদের সামনে পথ অনেক দীর্ঘ। পথ যদি অনেক দীর্ঘ হয়, আর তার বিকল্প সংক্ষিপ্ত অন্য কোন পথ না থাকলে যে ব্যক্তি পথ দীর্ঘের অভিযোগ করে যাত্রা শুরু করবে না, সে কখনও তার গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে পারবে না।
হে আমার মেয়ে!তুমি প্রথমে মুসলিম নারীদেরকে পুরুষদের সাথে খোলামেলা উঠা-বসা, চলাফেরা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বেপর্দা হয়ে সহ শিক্ষায় প্রবেশ করতে নিষধ কর। সেই সাথে সহ শিক্ষার খারাপ দিক গুলোতুলে ধর। তুমি তাদেরকে মুখ ঢেকে রাখতে বল। যদিও ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে আমি মুখ ঢাকাকে ওয়াজিব মনে করি না। মুখ খুলে রাস্তায় চলার চেয়ে নির্জনে মুখ ঢেকে পুরুষের সাক্ষাৎ করা অধিক বিপদজনক, স্বামীর অনুপস্থিতে স্বামীর ঘরে স্বামীর বন্ধুর সামনে বসে গল্প করা, আপ্যায়ন করা আর পাপের দরজা খুলে দেয়া একই কথা। ভার্সিটিতে সহ পাঠীরসাথে করমর্দন করা অন্যায়, তার সাথে অবিরাম কথা ও টেলিফোন চালিয়ে যাওয়া ক্ষতিকর, একসাথে বিদ্যালয়ে যাওয়া অনুচিত, বান্ধবীর সাথে গৃহ শিক্ষকের রুমে একত্রিত হওয়া অপরাধ।
হে আমার মেয়ে!তুমি এ বিষয়টি ভুলে যেয়ো না যে, আল্লাহ্ তোমাকে নারী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমার সহপাঠীকে বানিয়েছেন পুরুষ। তোমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই এমন উপাদান যুক্ত করা হয়েছে, যার কারণে তোমাদের একে অপরের দিকে ঝুকে পড়ে।সুতরাং তোমাদের কেউই এমন কি পৃথিবীর সকল মানুষ মিলে চেষ্টা করলেও আল্লাহর সৃষ্টিতে কোন পরিবর্তন আনয়ন করতে সক্ষম নয়। তারা কখনই নারী-পুরুষের ব্যবধান উঠিয়ে দিয়ে উভয়কে সমান করতে পারবে না এবং নারী-পুরুষের পরস্পরের দিকে আকর্ষণকে ঠেকাতে পারবে না।
যারা সভ্যতার নামে নারী-পুরুষের মধ্যকার ব্যবধান উঠিয়ে দিতে চায় এবং উভয় শ্রেণীর জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবী জানিয়ে কর্মক্ষেত্রে মিশ্রিত হয়ে যাওয়ার আহবান জানায় তারা মিথ্যুক। কারণ এর মাধ্যমে তারা নিজেদের মনের চাহিদা মেটাতে চায় এবং অন্যের স্ত্রী-কন্যাকে পাশে বসিয়ে নারীদের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চায়। সেই সাথে আরও কিছু করার সুযোগ পেলে তাও করতে চায়। কিন্তু এ কথাটি এখনও তারা খোলাসা করে বলার সাহস পাচ্ছে না। সুতরাং তারা নারীদের সম অধিকার প্রতিষ্ঠা, সভ্যতা ও উন্নয়নের যেসুর তুলছে তা নিছক সস্তা বক্তব্য ছাড়া আর কিছু নয়। এ সমস্ত কথার পিছনে তাহাজ্জুব-তামাদ্দুন, সভ্যতা, উন্নতি অর্জন আদৌ তাদের উদ্দেশ্য নয়।
তারা যে মিথ্যুক তার আরেকটি কারণ হল, যেই ইউরোপ-আমেরিকাকে তারা নিজেদের আদর্শ মনে করে এবং যাদেরকে তারা সভ্যতা, সংস্কৃতি ও উন্নতির পথ প্রদর্শক মনে করে মূলত তারা প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে নি। তারা যেটিকে সভ্যতা ও সংস্কৃতি মনে করছে, তা মূলতঃসত্য ও সভ্যতা নয়; বরং সেটি হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকা থেকে আমদানীকৃত সত্য ও সভ্যতা।তাদের ধারণায় নাচ, গান, বেহায়াপনা, উলঙ্গ অর্ধউলঙ্গ হওয়া, স্কুল, কলেজ ওবিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষায় অংশ নেওয়া, নারীদের খেলার মাঠে নামা এবং সমুদ্র সৈকতে গিয়ে বস্ত্রহীন হয়ে গোসল করাই সভ্যতা ও সংস্কৃতির মানদন্ড। আর প্রাচ্যের দেশ তথা মুসলিমদের মসজিদ, মাদরাসা, মদীনা, দামেস্ক এবং আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালসহ সকল ইসলামী প্রতিষ্ঠানে যে উন্নত চরিত্র, সুশিক্ষা, নারী-পুরুষের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন পবিত্রতার প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাদের ধারণায় তা মুসলিমদের পশ্চাদমুখী হওয়ার এবংসভ্যতা ও সংস্কৃতির দিক থেকে পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ।
ইউরোপ-আমেরিকা থেকে ঘুরে আসা বা সেখানে বসবাসকারী অসংখ্য পরিবার নারী-পুরুষের খোলামেলা চলাফেরাতে সন্তুষ্ট নয় এবং এটি তাদেরকে শান্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আজ তারা বিকল্পের সন্ধান করছে।
চলবেঃ