somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৪ ।।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আগের পর্বগুলো পড়েননি, শুধুমাত্র তাদের জন্য আগের পর্বগুলোর লিংক দিলামঃ
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০১ ।।
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০২ ।।
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৩ ।।



বেশ অনেকক্ষণ পরেই সুমনাই আগে মুখ খুললো,

- ভাইয়া, কি বলবেন ? বলেন ।

- এ্যা, কি বলবো ? (হাসান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েই বলে উঠলো)

- কি বলবো মানে ? কিছু একটা তো নিশ্চয়ই বলবেন ।

- তুমি কি করে জানলে ? (এই কথা শুনে সে আরও বেশি করে ঘামতে লাগলো)

- আমি কি জানলাম ?

- এই যে, আমি কিছু বলবো । তুমি কি করে জানলে ?

- কিছু একটা তো নিশ্চয়ই বলবেন, না হলে সবার থেকে আলাদা করে আমাকে ডাক দিলেন কেন ? আর তাছাড়া আপনি এমনভাবে ঘামছেন কেন ? আপনাকে দেখে তো অসুস্থ মনে হচ্ছে ।

- (এই কথা শুনার পর হাসান অনেকটাই জোর করে হাসার চেষ্ঠা করলো) কেন, তোমাকে এমনি কি আমি ডাকতে পারি না ?

- হুম, অবশ্যই পারেন । কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে, আপনি কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন ।

- (এবার সাহস করে বলেই ফেললো) আচ্ছা, তুমি তো বাসায় থাকো, তাই না ?

- জি, ভাইয়া, আমি তো বাড়ি থেকে এসেই ক্লাস করি ।

- তাহলে তোমার বাড়ির টিএনটি নাম্বারটা কি দেওয়া যাবে ?

- বাড়ির নাম্বার ? ইয়ে, ভাইয়া, মানে, আমি তো আমার বাড়ির নাম্বার এভাবে আপনাকে দিতে পারি না । মানে, বুঝতেছেন তো ? আব্বু-আম্মুর অনুমতি ছাড়া কি করে, মানে......

- কেন ? তোমার বাড়ির নাম্বার তো আমি ইচ্ছে করলেই যেখান-সেখান থেকে ম্যানেজ করতে পারি । কিন্তু আমি তো তোমার কাছেই চাইলাম । তাহলে দিতে সমস্যা কোথায় ?

- না, মানে, সমস্যা তো নেই ।

- তাহলে দাও ।

- আচ্ছা, নিন ।

সুমনা অনেকটাই অপ্রস্তুত অবস্থাতেই ব্যাগ থেকে একটি ডায়েরি নিয়ে তার একটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে তাতে কলম দিয়ে নিজের বাড়ির টিএনটি নাম্বারটি লিখে দিলো ।

- ভাইয়া, এই নেন । এবার আমি যাই ?

- যাই মানে, দাঁড়াও । আমার কথা এখনও শেষ হয়নি তো ।

- তোমাকে রাতে কল করলে সমস্যা আছে ?- ইয়ে মানে, ভাইয়া, ঐ সময় তো আব্বু বাসায় থাকে ।

- তাহলে সন্ধ্যার পরপর ?

- ইয়ে ভাইয়া, আসলে এই টিএনটি ল্যান্ডফোনটি তো আমার আব্বু-আম্মুর ঘরে । তাই সমস্যা আর কি...... মানে বুঝছেন তো ?

- তাহলে কি কোন সুযোগ নেই ?

- ইয়ে, মানে, মনে হয় না, নেই ।

- আচ্ছা, ভাইয়া, আমি তাহলে যাই এখন ।

এই কথা বলেই আর কোনদিক না ভেবেই সুমনা পিছন ফিরে হাঁটা শুরু করতেই পিছন থেকে হঠাৎ আওয়াজ আসলো, “আই লাভ ইউ” । বেশ জোরেই হল আওয়াজটা । সেখানে ভার্সিটির অন্য ডিপার্টমেন্টের যারা ছিল সবার মুখ একরকম হাঁ হয়ে গেল । আর হাসানের ডিপার্টমেন্টের অন্য ব্যাচের বেশ কয়েকজনও শুনতে পেল এই কথা, তাদের মুখ তো আরও বড় রকমের হাঁ হয়ে গেল । অনেকের তো ঢোঁক গিলতেই সমস্যা হল । আর সুমনা তো অনেকটাই পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিলো । আচ্ছা, সে এখন যা শুনলো তা কি সত্যি ? নাকি ভুল শুনেছে ? তাই সে আবার পিছনে ফিরে হাসানের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো ।

- আচ্ছা, ভাইয়া, আপনি এই মাত্র কি বললেন ? নাকি আমিই ভুল শুনেছি ?

- (হাসানের সাহস এখন বৃহস্পতিতুঙ্গে । আর কাউকে থোরাই কেয়ার তার) হুম, আই লাভ ইউ বলেছি ।

- কাকে !!!!!!!!!! ???

- কাকে মানে, তোমাকে ? তোমাকে যেদিন প্রথম দেখি, সেদিন থেকেই তোমাকে ভালবাসি । আমি জানি না, তুমি কি করবে এখন । হয়তো না বলে চলে যাবে, তাও তোমাকে ভালবাসি আমি । আর সারাজীবন ভালোবেসে যাবো । তুমি রাজি না হলে সারাজীবন একা থাকবো ।

- মানে কি ? মানে, কিভাবে ?

- কিভাবে মানে ? তুমি বুঝনা কিভাবে ?

- না, ঠিক আছে । কিন্তু একবারেই কি করে ?

- একবারে না, আমি তোমাকে হাজার বার বলতে চেয়েছি কিন্তু সাহস করে উঠতে পারি না । কিন্তু আর না । আজ সাহসের সব বাঁধ ভেঙ্গেই আমি ছুটে এসেছি । বাকীটা তোমার হাতে......

সুমনা আর কিছু বলতে পারলো না । সে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো । তার কেন জানি প্রচণ্ড আকারে কান্না পাচ্ছে । সে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েই কেঁদে ফেললো । হাসান হয়তো এমন কিছুর অপেক্ষাতেই ছিল । সে তৎক্ষণাৎ সুমনাকে নিজের বাহু বন্ধনীর মাঝে জড়িয়ে ধরলো । এখন আর মেয়েটির কিছু বলতে হবে না । যদি সে ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে দেয় তাহলে সে সরে যাবে কিন্তু যদি না দেয়...... বেশ অনেকক্ষণ পরেই তার ভালোবাসার মানুষটিও তাকে জড়িয়ে ধরে । মুহূর্তেই আশেপাশের সবাই একসাথেই উল্লাসের চিৎকার করে উঠে ।

(বাকীটা আগামী পর্বে)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×