কেসস্টাডি১; জনাব আমির হোসেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তার নিজস্ব পরিবহণ রয়েছে। প্রতিদিন অফিসে আসা-জাওয়ার পথে তাকে বেশ কিছুটা সময় ট্রাফিক জ্যামে কাটাতে হয়।
সকালবেলা তাড়া আর বিকেলবেলা ক্লান্তির সাথে জ্যামে বিরক্তির বাড়তি সংযজন হল ক্ষুদে বিক্ষুক। এরা এমনভাবে আঁকড়ে ধরে যে মানবিকতা বা পুণ্যলাভের মানসিকতার চেয়ে সম্মান রক্ষা বা দায়সারাটাই মুখ্য বিষয় হয়ে পড়ে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে কিছু অর্থ তাদের দিতেই হয়। সুযোগ পেলে একটি উপদেশও দেন এই বলে যে, পত্রিকা বিক্রি করতে পারসনা?
বাসায় পত্রিকা রাখা হয় তাই ক্ষুদে হকারদের সাথে তিনি কোন সম্পর্ক রাখেন্না।
.........
কেসস্টাডি২; শিফু ৬বছরের বালক। তার মা তাকে একটি চা দোকানের কাজে দিয়েছিল কিন্তু কষ্টকর ভবে সে তা করেনা। তার প্রতিটি সকাল শুরু হয় টঙ্গের চা-নাস্তার দোকান গুলোর সামনে গুরেগুরে। নাস্তারত এরওর কাছে ধরনা দিয়ে কারো কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে, কাউকে বাধ্য করে বা কারো করুনা পেয়ে তখনকার মতো সে কিছু খেতে পায়। এরপর শহরের বেস্ততম মোড়গুলোতে এসে সে তার দুপুরের খাবারের বন্দবস্ত করতে থাকে জ্যামে পড়া গাড়িগুলো এবং বেস্ত পথচারীদের লক্ষ করে। কেউ ফিরিয়ে দিলেও সে জানে অন্যজনের কাছে কিছু পাবেই। হাত পাতার পর না দিলে যদি জড়িয়ে ধরা হয় তাতে কাজ হয়। মানুষকে এভাবে বিরক্ত করতে তার ভালই লাগে। তাই সে তার সর্বচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যায়।
...............
কেসস্টাডি৩; সোহেল একজন কলেজ স্টুডেন্ট। টোকাই পথ শিশুদের নিয়ে তার মনোভাব ভিন্ন। যে শিশুগুলো খালিহাত পাতে এমনকি জড়িয়ে ধরে সে কখনো তাদের কাউকে একটি পয়সাও দেয়না। বরং সময় থাকলে শাসিয়ে নেয়। সে মনে করে, শুধুমাত্র হাতপেতেই যদি সে সাহায্য পায় তবে সে কোন দুঃখে কোন কষ্টকর কাজ করবে? আর আমাকে জড়িয়ে ধরে যদি সে কিছু আদায় না করতে পারে তবে সে অবশ্যই অন্যকোন জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নিবে।
সোহেলের বাসায় পত্রিকা রাখা হয়। তাই বলে ক্ষুদে হকারদের সে ফিরিয়ে দেয়না। ২টাকা মূল্যের পত্রিকাটি নিয়ে একবার চোখ বুলিয়ে টাকাসহ পত্রিকাটি ফেরত দেয় সে। এতে একদিকে যেমন শিশুটি উৎসাহ পাবে অন্যদিকে নিজেকে পুণ্যের অধিকারী মনে হয়।
বয়স্কদের খেত্রেও তার একই মনোভাব। কোন সুস্থ দুস্থ তার সহানুভুতির বিষয় নয়। কারন তাড়া নিজেরাই তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের যোগ্য। তাই একজন রিকশাওয়ালার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সে সদা প্রস্তুত থাকে।