আজ হরতাল। কেন এই হরতাল? পত্রিকায় দেখলাম একজনের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নাকি এই হরতাল। আগ্রহ জাগল সেই ব্যক্তির গ্রেফতারের কারন খুজে দেখার। দেখলাম। যা পেলাম তাই এখানে তুলে ধরলাম।
• ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে তদন্ত সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু করে।
• তিনি ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং ১৯৭১ সালে মালেক মন্ত্রিসভার রাজস্ব, পূর্ত, বিদ্যুৎ ও সেচমন্ত্রী ছিলেন।
• মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৯৬ জন জামাত ও স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে খুলনার আনসার ও ভিডিপি ক্যাম্পে সর্বপ্রথম সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা।
• তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৫টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
• এই প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ২০১৩ সালের ১২ মে রোববার বেলা পৌনে একটার দিকে র্যা ব-২ এর একটি দল ধানমন্ডির বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
• ১৯৭১ সালে প্রায় ৭০০ মানুষকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বর্তমানে জামাতে ইসলামীর নায়েবে আমির এ কে এম ইউসুফ।
• মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর বিরুদ্ধে আট(৮) জনকে হত্যা, ৩০০ বাড়ি লুট, ৪০০ দোকান লুট ও অগ্নিসংযোগ এবং ২০০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গণহত্যার অভিযোগগুলো হলোঃ
• ১৯৭১ সালের ১৩ মে বাগেরহাটের কচুয়া থানার রণজিৎপুর গ্রামে গণহত্যা।
• ১৯৭১ সালের ১৯ মে মোরেলগঞ্জ বাজারে গণহত্যা।
• ১৯৭১ সালের ২১ মে রামপালের ডাকরা গ্রামে গণহত্যা।
• ১৯৭১ সালের ১৪ অক্টোবর রামপালের চুলকাঠি গ্রামে গণহত্যা।
• ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর কচুয়ার মঘিয়া গ্রামে গণহত্যা এবং
• ১৯৭১ সালের জুলাই ও নভেম্বরে কচুয়ার শাঁখারীকাঠিতে গণহত্যা।
আরও অভিযোগ সমুহঃ
• ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল রামপালে শান্তি কমিটির সভায় লুট ও ধ্বংসের প্রকাশ্য আদেশ প্রদান।
• ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল কচুয়ার ১০টি গ্রামের ৩০০-৪০০ হিন্দুর বাড়ি লুট ও অগ্নিসংযোগ।
• ১৯৭১ সালের ১৩ মে মোরেলগঞ্জের আবু বক্কর সিদ্দিক হত্যা।
• ১৯৭১ সালের ১৭ মে মোরেলগঞ্জ বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান-বসতবাড়ি লুট ও অগ্নিসংযোগ।
• ১৯৭১ সালের ৭ জুন শরণখোলার রায়েন্দা গ্রামে হত্যা।
• ১৯৭১ সালের ৯ জুন শরণখোলার তাফালবাড়ি গ্রামে হত্যাকাণ্ড।
• ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই মোরেলগঞ্জে ডা. মজিদ হত্যা এবং
• ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই রায়েন্দাতে সালাম হত্যা।
১৯৭১ সালের ২১ মে ডাকরা গ্রামের গণহত্যা যেভাবে ঘটে:
• বাগেরহাট জেলার ডাকরা গ্রামের কালীমন্দিরের পুরোহিত বিনোদবিহারী চক্রবর্তী ওই অঞ্চলের হিন্দুদের ধর্মগুরু ছিলেন। একাত্তরের ২১ মে দুপুর ১২টার মধ্যে ডাকরাসহ আশপাশের ২০-২১টি গ্রামের প্রায় চার হাজার হিন্দু ভারতের শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার উদ্দেশে ওই কালীমন্দিরে গিয়ে জড়ো হয়। ইউসুফকে এ খবর পৌঁছে দেন ডাকরা গ্রামের মুসলীম লীগ নেতা ও স্বাধীনতাবিরোধী লিয়াকত আলী গজনবী ও আলতাব গজনবী। ইউসুফ তখন কুখ্যাত রাজাকার রজব আলী ফকিরসহ (পরে আত্মহত্যা করেন) ৪০-৫০ জন রাজাকারের একটি দল ডাকরা গ্রামে পাঠান। ওই দলটি পরিকল্পিতভাবে দুই ভাগ হয়ে কালীমন্দিরে জড়ো হওয়া হিন্দুদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। দুই-তিন ঘণ্টা ধরে চলা ওই হত্যাযজ্ঞে প্রায় ৭০০ হিন্দু মারা যান। ওই গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ১০৪ জনের নাম অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বিভিন্ন প্রিন্টিং গণমাধ্যম।