কেউ আমাকে কখনো যত্নে কিংবা অযত্নে বুনে উলের কিছু উপঢৌকন অথবা অনোপঢৌকন হিসেবেও দেয়নি। যে তার বুননশৈলী দেখে দেখে কী রকম এক অনুভূতি হবে আর স্নেহে স্নেহে প্রীতির রুপ নেবে। সে স্নেহের জনকে প্রীতির জনকে ঘনিষ্ঠ রকমে পেতে এক উৎসুক উৎসৃজন জন্মাবে, আমি জানিনা তাকে প্রেম বলবো কিনা। প্রেমের কি রুপ কি ধরন সেও আমি জানিনা।
তবু এক গভীর বোধ জন্মেছে আমার মধ্যে, যতদূর জানি সবারই তেমন জন্মে নাকি। আমার সে বোধের আদল অতি স্নিগ্ধ অপাপবিদ্ধ বড্ড সরল।
যখন যেখানে থাকি সে আমার সমস্ত ইন্দ্রিয়জুড়ে পরতে পরতে অদৃশ্য হয়ে জড়িয়ে থাকে। আমি তার ব্যাখ্যা দিতে পারবোনা- ''শুধু মাঝে মধ্যে মন কেমন করে'' এর বেশি নয়। কিন্তু মনে হচ্ছে কারোর প্রতি আমার প্রাত্যহিক কর্মে কিছু গোল-যোগ প্রতীয়মান। একা ঘরে, গভীর রাতে'' চিত্ত উচাটনী'' নামের এক হাঙ্গামা নিত্যই আমাকে বড় অশোভিত আর বিব্রত করে তোলে। আমার তো কারো প্রতি হৃদয়ঘটিত তেমন দৌর্বল্য নেই যে, কারো হৃদয়ের প্রতি আমার অনেক দাবী না মেটার হাহাকারে কোথাও সূক্ষ্ম উৎপাত হবে চিহ্নহীন।
কেবল এক নামের প্রতি এতটা স্বাতন্ত্র্যিক আবেদন বড্ড বেমানানই লাগে। নামের কি প্রভেদ? কেনো নামে এতো বৈচিত্র? কেনো সে নামের লিপি এতো প্রিয় হবে? কোন তাঁতশিল্পেই বা করা হয়েছে এর শিল্পায়ন।
বুদ্ধদেব গুহের সেই কথাটা ঘুরফিরেই মাথা মস্তকে অনবরত খেলছে - ''পুরুষ মাত্রই বোকা, আর বোকা মাত্রই একা, তার চারধারে ভিড় থাকলেও সে একা।
সে একাকীত্বতা শেষরাত্রির পশ্চিমাকাশের শান্ত স্নিগ্ধ তারাটির মতোন আমাকেও...। কি যে এক ভাবনাতে বুঁদ হয়ে আছি, আমার ব্যক্তিগত চেতনা, চিন্তা, সুখ য্যানো এক নামের নিষ্ক্রিয়তায় বলি হয়ে যাচ্ছে।
মাঝে মধ্যেই ভাবি, এবার হয়তো চিঠির জবাব পাবো, সুন্দর একখানা চিঠি পাবো। শুনেছি লোকে তোমার দিকে তাকায় আর ঈর্ষা করে, কিন্তু তুমি ঈর্ষা করনা কাউকেই। আমি তাই ''ঈ''কার সম্পূর্নই বর্জিত করেছি। ইশ্বর (''ঈ'' বর্জিত) যা করেন মঙ্গলের জন্যেই। কিন্তু এই বিরাট কল্পনাশক্তির যিনি বাহক তাকে আমার অন্তত রোমান্টিক কিংবা উদার কোনটাই মনে হয়না কেননা, তিনি আমাকে তোমার রোমাঞ্চ হতে ছত্রছিন্ন করেই ক্ষান্ত হননি বরং খুন করেছে আমার ভেতরে থাকা তোমার অগ্নিশিখাটিকে বহুলাংশে। এখনো আমি দারুণ বিরহকাতর, ওষ্ঠে সে বেদনার ধূমশিখা নিয়েই লিখছি, তবুও নিজেকে এইভেবে অন্যজীবনের থেকে বরীয়ান লাগে যে - ''আমাদের প্রেম লাফাতে লাফাতে বিয়ের সেই কুৎসিত গর্ত অবধি পৌঁছোয়নি। কৃতজ্ঞ আমি, তুমি আমার সমস্ত কিছু ইশ্বর সদৃশ গোপন রেখেছো এবং আমায় পরমরুপে বাঁচিয়েছো নইলে শরীর ও মন দুয়েরই সমূহ ক্ষতির অন্ত ছিলোনা আমার...
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৫১