দেশে কর্ম সংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমান উপার্জনের আশায়।তারা উপার্জন করে যেমন নিজের আর্থিক সবচ্ছলতা আনছে তেমনি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।স্বভাবতই যখন একটি দেশের নাগরিকদের আর্থিক অবস্থা ভাল হয় সার্বিক ভাবেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি ঘটায়।
এখানেই শেষ নয় প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের( রেমিট্যান্স) আয়ের দেশের আয়ের বড় একটা অংশে পরিণত হয়েছে।দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অস্থিতিশীলতা ও রফতানী আয় কমে যাওয়ার কারণে দেশের অর্থনীতি ক্রমেই খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী, বিনিয়োগ কারী,বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার অনুদান ও ঋণ ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে ফলে একটা শোচনীয় অবস্থায় আছে অর্থনীতি।এই ক্ষেত্রে আশার আলো বৈদেশিক রেমিট্যান্স।
২০১১-১২ অর্থ বছরে বিদেশীদের পাঠানো অর্থ থেকে দেশ আয় করেছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। এ রেমিট্যান্স বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমপরিমাণ।বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস প্রবাসীদের রেমিট্যান্স
এত গেল প্রবাসীদের কথা তারা দেশের জন্য কি করছে?
এখন আসি আমাদের কথায় আমরা তাদের জন্য কি করছি?
আমারা মানে আমাদের সরকার তাদের জন্য কার্যকর কিছুই করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশীদের জন্য সবথেকে বড় শ্রম বাজার ছিল সোদি আরব, মালয়েশিয়া, দুবাই,সিঙ্গাপুর এর মত দেশ গুলি। এরপরে যুক্তরাষ্ট্র।বর্তমানে সোদি আরব, মালয়েশিয়া, দুবাইয়ের শ্রম বাজার বাংলাদেশীদের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে ।আমেরিকাতে ও লোকা পাঠানো বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি হুমকির মুখে। মধ্যপ্রাচ্যের শ্রম বাজার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই বাজার ধরে রাখতে সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে।এর জন্য প্রয়োজন জোরালো কূটনৈতিক পদক্ষেপ কিন্তু সরকারের কুটনৈতিক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তারা কার্যকর কোন ভূমিকা পালন করতে পারছে না।বিদেশে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলে দূতাবাস গুলোর কাছে থেকে আশানুরোপ সাহায্য সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন না।
শুধু দেশের বাইরে নয় দেশের অভ্যন্তরেও তারা হয়রানীর সম্মুখীন হচ্ছেন।
আমি কিছুদিন আগে এক জাপান ফেরত লোকের সাথে কথা বলছিলাম।তিনি বলছিলেন বিমানবন্দরে তাদের অতিরিক্ত চার্জ দিতে হচ্ছে প্রচলিত ভ্যাট এবং ট্যাক্সের বাইরে না হলে ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে।তিনি বললেন যে, তিনি একটা ঔষধ ঠান্ডা রাখার যন্ত্র এনেছিলেন হাতে করে লাগেজের বাইরে।বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মকর্তারা সেটির জন্য অযৌক্তিক অর্থ দাবী করে তিনি দিতে অস্বকৃতি জানালে তার সাথে খুব খারাপ ব্যহার করে।এমনকি তাকে এও বলে বেশি বাড়াবাড়ি করলে পায়ের জূতাতে যে সূতার সেলাই আছে সেটারও ট্যাক্স দিতে হবে।এমনকি তাদের দাবীর প্রতিবাদ করলে লাগেজ ছুড়ে ফেলে দেওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে।
এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় আমারা প্রবাসীদের প্রতি আন্তরিক নই। তারা দেশের জন্য অনেক বড় অবদান রাখলেও আমরা তাদের প্রাপ্য সম্মান দিচ্ছি না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:৪৬