সিঙ্গাপুর কাদের কার্গো সার্ভিস এর মালিক কাদের ভাইকে ফোনদিলাম যে, আজ আমি মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আসছি । কিন্তু কাদের ভাই যা বল্লেন তাতে মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। শনিবার অনেকের ই আধাবেলা অফিস তাই নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিদর্শক এর কোটা পুরন হয়েগেছে, আজকে কোন ক্রমেই দেখা করা করা সম্ভ্যব নই। কি করাযায় কোন কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। অনেক চিন্তা ভাবনা শেষে অফিস এর এক সিঙ্গাপুরিয়ান কলিক এর কাছে ফোন দিলাম সে আমাকে সাহায্য করতে পারবে কিনা। বিস্তারিত শুনে সে অন্য একজন এর মোবাইল নাম্বার দিয়ে বল্ল উনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য।
অনেক কাঠখড় পুরিয়ে অবশেষে সেই মূহুর্তটা এল এই জীবনের প্রথম দেখতে পেলাম প্রিয় মানুষটাকে। ৭-১০জন ছিলাম আমরা তাই প্রাণ ভরে দেখতেপেলাম। সবাই ছিল উনার চেনা মুখ শুধু আমি ছাড়া। এক পর্যায়ে আমার পরিচয় যানতে চাইলেন। সবাব বসত পরিচয় দিলাম আমি একজন প্রবাসী শ্রমিক। এই পরিচয়টা পেয়ে উনি আমাকে কাছে ডেকেনিয়ে অনেক প্রশ্ন করলেন। অনেক কথা বার্তা এবার বিদায়ের পালা, তখন বল্লাম স্যার পরবর্তিতে এসে আমি আপনার সাথে একটা ছবি উঠাতে চায় খুশিমনে উনি রাজি হলেন। উনাকে আমি নিমন্ত্রন করলাম আমাদের হোষ্টেল এ আসার জন্য, তা ও ওনি গ্রহন করলেন খুশি মনে। উত্তরে বল্লেন তোমরা আমদের দেশে সম্পদ অবশ্যয় যাব তোমাদের দেখতে। খুশি মনে বাসায় ফিরলাম। সকল বন্ধুদের বল্লাম দেলোয়ার সাহেব আমাদের হোষ্টেলে আসবে।
দিন যেন যাচ্ছেনা কবে সুস্থ্য হবেন এই মানুষটা যে কিনা প্রবাসী শ্রমিকদের এত ভালবাসেন।
কিন্তু সেই দিনটা আর এলনা উনি আসলেন না আমাদের হোষ্টলে দেখতে অভাগা শ্রমিকদের যারা মাথার গাম পায়ে ফেলে উপার্যন করে চলছে। ১৬ই মার্চ বুধবার ঠিক ৬টার দিকে সেই সংবাদটা এসে হৃদয়টাকে বিদির্ণ করে দিয়ে গেল। কাদের ভাই ফোনে জানালেন সেই মর্মান্তিক সংবাদটা। সাথে সাথে ছুটে গেলাম হসপিটালে। ১০-১২ লোক এসেছে পরিচিত যনদের খবর দেয়া হচ্ছে। আইসিও ১ এর বিতরে দেখতে গেলাম যেন শুয়ে আছেন শ্রমিক দের কিছু কথা শুনার জন্য। বাহিরে উনার মেয়ে পান্না আর ছেলে ডাব্লু অযোরে কাধতেছিল কিছুই বলার ভাষা ছিলনা।
এই দিকে অনেক মানুষের ভির করে ফেলছে । হসপিটাল এর সিকউরিটি মূল গেইট বন্ধ করে দিয়েছে। রাত ৮+ মরদেহ নিয়ে যাওয়া হল হিমাগারে। তরিৎ সিদ্ধান্ত হল পরদিন ১৭ তারিখ সকাল ৯টা উনার জানাযা দেয়া হবে আংগুলিয়া মসজিদ এর পাশে, সকল প্রবাসী দের নিয়ে।
একে একে সাবাই বিদায় নিল, একেবারেই মনটা যেতে চাচ্ছেনা হসপিটাল থেকে। প্রিয় মানুষটাকে একে ফেলে। সবাই চলে গেল রাত ৯:৩০+ বাসার উদ্যেশে চল্লাম।
সকাল ৭টায় অফিসে এসে কার্ডটা পান্চ করে চলে গেলাম আংগোলিয়া মসজিদে। আমার মত এমন প্রায় ২০০ লোক অপেক্ষা করতে ছিল ঐখানে। কিন্তু হসপিটাল থেকে দেহ আনতে অনেক দেরি হচ্ছে ৯+ অনেকেই চলে গেলেন। অফিসে ফোন করে কিছু লোকের সাথে আমি থেকে গেলাম।
ক্ষমা করে দিবেন স্যার আপনাকে নিয়ে যেতে পারলাম না আমাদের হোষ্টেলে, রাহতে পারলাম না শেষ ইচ্ছা টুকু।
তুলতে পারলাম না ছবিটা আপনার পাশে বসে।
শুধু দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে বেহেস্ত নসিব করুক
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৪০