somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুলশান ট্রাজেডি: বিভিন্ন বাহিনীর সফলতা-ব্যার্থতা

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোহাম্মাদ নেছার উদ্দিন


গুলশানের হলি আরিসান বেকারীতে হামলা চালিয়েছে জঙ্গীরা। সেখানে রাত ব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে অন্তত ২০ জনকে জবাই করে হত্যা করে জঙ্গীরা। এই ছাড়া সুচনালগ্নে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সালা উদ্দিন খান এবং পুলিশের বিশেষ ইউনিট ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম কে হত্যা করে জঙ্গীরা। এই হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন বাহিনীর সফলতা এবং ব্যার্থতা চিত্রায়িত হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে দৃশ্যায়িত হয়েছে গোয়েন্দা বাহিনীর ব্যার্থতা।


১। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই। টপ সিক্রেট গোয়েন্দা সংস্থা এটি। এদের গোপনীয়তা 'র' এবং মোসাদের থেকেও বেশী। বাংলাদেশের প্রতিটা জেলা এবং উপজেলায় এদের শাখা আছে। কিন্তু, সে শাখার ব্যাপারে কেউ জানে না। এটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিচালিত হয়। এই সংস্থার পরিচালকসহ হাতে গোনা কয়েকজনের ব্যাপারে মিডিয়া এবং আমরা অবগত। এতো সিক্রেট একটা গোয়েন্দা সংস্থা হওয়ার কথা ছিলো বিশ্বমানের। কিন্তু, সে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে নিজ দেশে হওয়া হামলার পরিকল্পনার কোন তথ্য পর্যন্ত ছিলো না।


২। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা হচ্ছে ডিজিএফআই। ডিজিএফআই এর এক্টিভিটি এতো বেশী যে, এনএসআই পাত্তাই পাচ্ছে না। ডিজিএফআইও প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্থ গোয়েন্দা বাহিনী। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিচালিত। ডিজিএফআই এর এক্টিভিটি এতো বেশী। অথচ, নির্মম সত্য এটাই যে, তাদের কাছেও গুলশান হামলার কোন তথ্য ছিলো না।


৩। র‍্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয় জঙ্গী দমনের উদ্দেশ্যে। জঙ্গী দমনে অতীতে র্যাবের সাফল্য স্বর্নাক্ষরে লেখা। জঙ্গী দমনে র্যাবের ভুমিকা সর্বদা প্রশংসনীয়। কিন্তু, দুঃখের বিষয়, গুলশান ট্রাজেডিতে র্যাব জঙ্গীদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেনি। সেনাবাহিনীর অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে তাদের।


৪। র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট র্যাব ইন্টেলিজেন্স উইংও গুলশান ট্রাজেডিতে ব্যার্থতা দেখিয়েছে। অতীতে র্যাবের বিভিন্ন জঙ্গী বিরোধী অভিযানে র্যাব ইন্টেলিজেন্স উইং এর ভুমিকাও যথেষ্ট প্রশংসাযোগ্য ছিলো। কিন্তু, গুলশান ট্রাজেডিতে তাদের কাছে কোন তথ্যই ছিলো না। যেখানে ডিজিএফআই, এনএসআই এর মত সংস্থা ব্যার্থ। সেখানে র্যাব ইন্টেলিজেন্স উইং কোন ছাই।


৫। আমেরিকার তৈরী স্পেশাল টিম সোয়াটের ব্যার্থতা কাল দৃশ্যত হয়েছে। অথচ, এই সোয়াট টিমের একমাত্র উদ্দেশ্য এবং কাজ হচ্ছে উদ্ধার করা। কিন্তু, তারা এখানে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। তারা যে দুজনকে উদ্ধার করেছে বলা হয়েছে। সে দুজন নিজেরাই জঙ্গীদের চোখ ফাকি দিয়ে বের হয়ে এসেছিলো।


৬। বিজিবি জঙ্গী দমনের জন্য বিশেষায়িত কোন বাহিনী নয়। বিজিবির কাজ সীমান্ত পাহারা দেয়া। সীমান্ত সন্ত্রাস প্রতিরোধ করা। তাদের ব্যার্থতা নিয়ে তেমন কিছু বলার নাই।


৭। আমি এখানে পুলিশের ব্যার্থতার কিছু দেখছি না। পুলিশের জঙ্গী হামলা প্রতিরোধে বিশেষ কোন ট্রেনিং নাই। পুলিশের কাজ হচ্ছে, আসামী গ্রেপ্তার করা, তাদের আদালতে হাজির করা, বিভিন্ন অপরাধের তদন্ত করা। এইধরনের পরিস্থিতি সামাল দেয়া তাদের কাজ নয়।


৮। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এখানে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাদের ব্যার্থতা সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করার ব্যার্থতা। তারা যদি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাথে আলোচনায় বসে সেনাবাহিনীকে তলব করতো। এখানে অভিযান পরিচালনার অনুমতি দেয়া হতো তাৎক্ষণিকভাবে। তাহলে হয়তো এতোগুলি মানুষের অকাল মৃত্যু হতো না।



এতো ব্যার্থতার মাঝেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফল হয়েছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু, যতটুকু ব্যার্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তাতে অনেক জীবন প্রদীপ নিভে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দরখাস্ত - বরাবর: জনাব, কাল্পনিক ভালোবাসা / জাদিদ সাহেব

লিখেছেন ঠাকুরমাহমুদ, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৩



বরাবর:
জনাব, কাল্পনিক ভালোবাসা / জাদিদ সাহেব
চিফ এক্সিকিউটিভ এডমিন
সামহোয়্যারইন ব্লগ

তারিখ: ১১-১১-২০২৪ইং

বিষয়: ব্লগার সোনাগাজী নিকের ব্লগিং ব্যানমুক্ত করার জন্য অনুরোধ।


জনাব, কাল্পনিক ভালোবাসা / জাদিদ সাহেব,
আপনাকে ও সামহোয়্যারইন ব্লগের সকল ব্লগারদের প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সময়ের স্রোতে ক্লান্ত এক পথিক তবু আশায় থাকি …

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:০৫


হালকা হাওয়ায় ভেসে আসে গত সময়ের এলবাম
মাঝে মাঝে থেমে যায়, আবার চলে তা অবিরাম
সময় তো এক নদীর মতো, বহমান অবিরত,
জল-কণা আর স্মৃতি বয়ে নেয় যত তার গত।

একটু... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশঃ ইতিহাস কি বিজয়ীরাই লেখে?

লিখেছেন জাদিদ, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩২

"বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার সমস্যা" -বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আলী রীয়াজ একবার বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের সঙ্গে ক্ষমতার একটা সম্পর্ক আছে। সে ক্ষমতায় যারা বিজয়ী হয়, তারাই ইতিহাস রচনা করে। পরাজিতরা ইতিহাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধু নাম আর কেউ মুছতে পারবেনা।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০


২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপনণের পরপরই ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মহাকাশে আজ উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। আজ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

“বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো উচিত হয়নি “এই কথা রিজভী কোন মুখে বলে ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫১



অবাক হয়ে রিজভীর কথা শুনছিলাম উনি কি নিজেকে মহান প্রমান করার জন্য এই কথা বললেন নাকি উনি বলদ প্রকৃতির মানুষ সেটাই ভাবতেছি। উনি নিশ্চই জানেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×