somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এনকাউন্টারে কেন জনসমর্থন?

২২ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মোহাম্মাদ নেছার উদ্দিন

"পুলিশের এনকাউন্টারে বা ক্রসফায়ারে সন্ত্রাসী মারা গেছে" এমন কথা শুনেনি এরকম লোক পাওয়া দুষ্কর। পুলিশ, র্যাব তথা প্রশাসনিক বাহিনীর ক্রসফায়ারে যারা মারা যায়, তাদের আদালতের বিচারের মুখোমুখি দাড় করানো হয় না। স্পটে মেরে ফেলা হয়। এই ধরনের এনকাউন্টারের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধে যারা মারা যায়। তাদেরকে আদালতের মুখোমুখি দাড় করানোর সুযোগ থাকে না। কারন, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিজের জীবন রক্ষার্থে হামলাকারি সন্ত্রাসীকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলেন। তবে অনেককে বন্দুক যুদ্ধ ছাড়াও ক্রসফায়ার দেয়া হয়। এই ক্রসফায়ারে মৃত্যুদণ্ড সবসময় আদালতের রায়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় না। তবুও সাধারন মানুষ ক্রসফায়ার সমর্থন করে। এই সমর্থনের পেছনে নিঃসন্দেহে যৌক্তিক কিছু কারন আছে। ক্রসফায়ারে যে সকল হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকে। তার ৮০ ভাগই প্রকৃত অপরাধীরা। বাকি ২০ ভাগের ব্যাপারে রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক বিতর্ক রয়েছে। এদের মধ্যেও অবশ্যই প্রকৃত অপরাধী রয়েছে। সাধারন মানুষের ক্রসফায়ার সমর্থন করার প্রথম কারন হচ্ছে, আইনের ফাক ফোকর। আমাদের দেশে আইনের ব্যাপারে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে। সেই প্রবাদটি হলো, "আকাশের যত তারা, আইনের তত ধারা"। অর্থাৎ, আকাশের তারা যেমন অগণিত, তেমনি আইনের ধারাও অগণিত। আইনের এই অগণিত ধারা আর উপধারার ভিতরে বিভিন্ন ফাঁকফোকরও আছে। পুলিশ যখন কোন একজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতে সোর্পদ করে। সেখানে অপরাধী আসামীর পক্ষে একজন আইনজীবী থাকেন। সেই আইনজীবী অপরাধী ব্যাক্তিকে অপরাধী জানার পরও নিরপরাধ প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। তাতে আইনজীবীর সহযোগী হয় আইনের ফাঁকফোকর ওয়ালা ধারা এবং উপধারাগুলো। যার ফলে আসামী অপরাধী হওয়ার পরও মুক্তি পেয়ে যায়। মুক্ত হয়ে আসামী আবারও তার অপরাধের রাজত্বে অবাধ বিচরণ করে। যে মানুষগুলো তার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলো অতীতে। তারা তার গ্রেপ্তারে নিঃসন্দেহে খুশি হয়েছিলো। যখন সে আসামী মুক্ত হয় । তখন নির্যাতিত সে সকল মানুষ আশাহত হয় এবং আদালতের উপর তারা আর আস্থাশীল থাকতে পারে না। যদিও দায়টা আদালতের নয়, দায় অপরাধীদের সহায়তা করা আইনজীবীদের। কিন্তু, সাধারন মানুষ তো অত কিছু বোঝে না। এরপর আছে অপরাধীদের রাজনৈতিক প্রশ্রয় দেয়া। বেশীরভাগ অপরাধীদের পালনকর্তা রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা। কোন অপরাধীকে যখন আটক করা হয়। তখন, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা প্রশাসনকে চাপের মুখে রাখেন। যার ফলে প্রশাসন ঐসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে পারে না। এই জায়গা থেকেও সাধারন মানুষ আশাহত হন। আর একটা বিষয় আছে পুলিশ-আসামী সখ্যতা। এটা সবচাইতে ভয়ঙ্কর ব্যাপার। পুলিশ এবং আসামী দুজন দুজনার চিরশত্রু। এমনটাই নিয়ম হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু, আমাদের দেশে পুলিশ এবং আসামীদের মধ্যে দহরমমহরম সম্পর্ক দেখা যায়। যদিও এটা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তবে যাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তাদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। পুলিশ এবং আসামীদের মধ্যে এই সখ্যতা বিদ্যমান থাকার কারনে সাধারন মানুষ আসামীদের ব্যাপারে কার্যকর ব্যাবস্থা নেয়ার ব্যাপারে সন্দিহান থাকে। তারা আশংকা করে, পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবে না। যদিও আসামীদের বিরুদ্ধে তারা কোন ব্যাবস্থা নিয়ে থাকে। সেটা আসামীদের বাঁচানোর জন্য নেয়া হবে। এই যে, এতসব জায়গায় সাধারন মানুষ আস্থাশীল হতে পারেনি। এই কারনে এরা ক্রসফায়ারে উৎসাহিত হয়েছে। এদের কেউ এসে বলেনি, তোমরা ক্রসফায়ার সমর্থন করো। কেউ এটাও বলেনি, ক্রসফায়ারের কি কি উপকারিতা আছে। এরা নিজেরা ক্রসফায়ারের ব্যাপারটা বিবেচনা করেছে। একটা অপরাধীকে ক্রসফায়ার দেয়া হলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। এই অপরাধীর অধ্যায় সম্পূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়ে যায়। থানায় গেলে অসৎ পুলিশের কারনে বা রাজনৈতিক নেতাদের কারনে বের হয়ে আসার চিন্তা নেই। আদালতে গেলে অসৎ আইনজীবীর সহায়তায় বের হয়ে আসার চিন্তা নেই। এই বিবেচনার কারনে সাধারন মানুষ ক্রসফায়ার সমর্থন করছে। তারা মনে করে, ক্রসফায়ারে অপরাধী মারা যাওয়ার মানে অপরাধীকে নিয়ে ভীত না হওয়া। কেননা, এই অপরাধীর পক্ষে আর কখনো অপরাধের রাজত্ব করা সম্ভব হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দরখাস্ত - বরাবর: জনাব, কাল্পনিক ভালোবাসা / জাদিদ সাহেব

লিখেছেন ঠাকুরমাহমুদ, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৩



বরাবর:
জনাব, কাল্পনিক ভালোবাসা / জাদিদ সাহেব
চিফ এক্সিকিউটিভ এডমিন
সামহোয়্যারইন ব্লগ

তারিখ: ১১-১১-২০২৪ইং

বিষয়: ব্লগার সোনাগাজী নিকের ব্লগিং ব্যানমুক্ত করার জন্য অনুরোধ।


জনাব, কাল্পনিক ভালোবাসা / জাদিদ সাহেব,
আপনাকে ও সামহোয়্যারইন ব্লগের সকল ব্লগারদের প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সময়ের স্রোতে ক্লান্ত এক পথিক তবু আশায় থাকি …

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:০৫


হালকা হাওয়ায় ভেসে আসে গত সময়ের এলবাম
মাঝে মাঝে থেমে যায়, আবার চলে তা অবিরাম
সময় তো এক নদীর মতো, বহমান অবিরত,
জল-কণা আর স্মৃতি বয়ে নেয় যত তার গত।

একটু... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশঃ ইতিহাস কি বিজয়ীরাই লেখে?

লিখেছেন জাদিদ, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩২

"বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার সমস্যা" -বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আলী রীয়াজ একবার বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের সঙ্গে ক্ষমতার একটা সম্পর্ক আছে। সে ক্ষমতায় যারা বিজয়ী হয়, তারাই ইতিহাস রচনা করে। পরাজিতরা ইতিহাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধু নাম আর কেউ মুছতে পারবেনা।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০


২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপনণের পরপরই ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মহাকাশে আজ উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। আজ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

“বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো উচিত হয়নি “এই কথা রিজভী কোন মুখে বলে ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫১



অবাক হয়ে রিজভীর কথা শুনছিলাম উনি কি নিজেকে মহান প্রমান করার জন্য এই কথা বললেন নাকি উনি বলদ প্রকৃতির মানুষ সেটাই ভাবতেছি। উনি নিশ্চই জানেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×