মোহাম্মাদ নেছার উদ্দিন
অনেককে দেখা যায় বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সমর্থন করতে। তারা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধিনতা যুদ্ধকে টেনে নিয়ে আসে। তাদের জন্যেই আমার এই লেখা। বাংলাদেশ হচ্ছে বাঙ্গালীদের আদি-বাসস্থান। বাঙ্গালিরা বাংলাদেশের আদিবাসি। শত শত বছর ধরে বাংলাদেশে এই বাঙ্গালীদের বসবাস। তৎকালীন পাকিস্তান স্বাধিন হওয়ার পর থেকে পূর্বপাকিস্তানের নাগরিকদের উপর চলেছে শোষণ। পূর্ব-পাকিস্তানের নাগরিকেরা পায়নি তাদের কোন অধিকার। ১৯৫২সালে পাকিস্তানিরা কেড়ে নিতে চেয়েছে আমাদের কথা বলার অধিকার, আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা। সেই ভাষা রক্ষা করতে জীবন দিতে হয়েছিলো সালাম, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেককে। ভাষার অধিকার আমরা জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করেছি। কিন্তু, আমাদের অন্যান্য অধিকার আমরা পায়নি। চাকুরীর ক্ষেত্রে ছিল বণ্যবৈষম্য। পূর্বপাকিস্তানিদের রক্তে অর্জিত অর্থ দিয়ে উন্নয়ন হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। বাঙ্গালির অধিকার নিয়ে কথা বলার কারনে অনেককে চাকরিচ্যুত হতে হয়েছে। নির্বাচনে যখন আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়। তখনও পাকিস্তান সরকার আওয়ামীলীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। এতো লাঞ্ছনা সয়ে বাঙ্গালীদের আদিবাসস্থানে ভিনদেশীদের শাসন সহ্য করাটা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তখন পূর্বপাকিস্তানকে স্বাধিন করা হয়ে যায় অত্যাবশ্যকীয়। এরপর বাংলাদেশের স্বাধিনতা যুদ্ধ শুরু হলো। পূর্বপাকিস্তানের মুক্তিকামী স্বাধারন জনতা এই যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালীদের পাশাপাশি অধিকার বঞ্চিত নৃ-গুষ্ঠিরাও এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। তারপর একসময় পূর্বপাকিস্তান পায় তাদের স্বাধিনতা। জন্ম নেয় নতুন একটি দেশ বাংলাদেশ। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নৃ-গুষ্ঠিদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর পরিচালক নৃ-গুষ্ঠিরা হচ্ছে ভিনদেশী সেটেলার মাত্র। বিভিন্ন দেশ থেকে তারা নির্যাতিত হয়ে, বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় নেয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম তাদের আদিনিবাসও নয়। নৃ-গুষ্ঠিদের যেরকম সুযোগ বাংলাদেশ সরকার দেয়। তার নুন্যতম সুযোগও বাঙ্গালীদের দেয়া হয় না। নৃ-গুষ্ঠিদের জন্য দেয়া হয়েছে কোঠা পদ্ধতি। প্রশাসনিক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের উচ্চতায় দেয়া হয়েছে ছাড়। একজন নৃ-গুষ্ঠি যৌগ্যতা না থাকা সত্বেও শুধুমাত্র নৃ-গুষ্ঠি হওয়ার কারনে পেয়ে যায় সে বড় বড় চাকরী, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার চান্স। আর এই কোঠা প্রথার কারনে যৌগ্যতা দিয়েও বাঙ্গালী ছেলেটা চাকরি পায়না, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্নকে কবর দেয় সে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বড় বড় পদগুলো শুধুমাত্র নৃ-গুষ্ঠিদের জন্য বরাদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপরও তারা কোন যুক্তিতে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাধিনতা চাইবে। তারা ভিনদেশী হওয়া সত্বেও তাদের এতো সুযোগ সুবিধা দেয়া কি বেশী নয় কি?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:১৭