somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইশতিয়াক চক্রবর্তী, From রংপুর With LOVE

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বালকদিগের সর্দার ইশতিয়াক চক্রবর্তীর মাথায় চট করিয়া একটা নূতন ভাবোদয় হইল, সে তাহার সমমনা সারথিদিগকে লইয়া এক খানা ফুটবল টীম গঠন করিবে। ফুটবলে লাথি দিয়া তাহার পিছনে দৌড়াইতে কি পরিমান আনন্দ বোধ হইবে, তাহাই উপলব্ধি করিয়া সে বিমলানন্দ উপভোগ করিতে লাগিল।
এই লক্ষে সে FaceBook নামক অদ্ভুত বইয়ের Bangbros পৃষ্ঠার দেয়ালে, কাঠপেন্সিল দ্বারা একখানি লেখা লিখিল। সে লিখিল, “Dear Bangbros and sis, I’m going to setup a Football Team, Who wants to join just raise your hand”. যা Google Translator এ বাংলা অনুবাদ করিলে দ্বারায়, “প্রিয় Bangbros এবং sis, আমি শুধু আপনার হাত বাড়াতে সেটআপ যোগ দিতে চায় একটি ফুটবল দলের, যাচ্ছি”।
লেখাখানি লেখিবার অর্ধ ঘন্টার মধ্যে ১২ খানা Like এবং ১৩ খানা Comment পরিল। ঠিক যেন ১২ হাত আকুরের ১৩ হাত বিচি (আকুর কি বস্তু, সে সম্পর্কে লেখক অবগত নয়)। ইশতিয়াক চক্রবর্তী Bangbros এর বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের অন্যতম, Senior বলে কথা। তাহার লেখায় Like , Comment পরিবেনা তো কি “জসীম উদ্দিন” এর লেখায় পরিবে? Comment গুলোর মধ্যে একটি Comment ছিল এরকম, “BooRoo, Your উদ্যোগ Sottie প্রশংসনীয়”। যে ব্যাক্তি এই Comment খানা প্রসব করিয়াছেন, তিনি সকলের মাঝে, “Minul Islam Rony” নামে পরিচিত।
যাহা হউক, ইশতিয়াক চক্রবর্তী তাহার সারথিদিগকে লইয়া একখানি সভার আহব্বান করিল। সভায় সর্ব সম্মত ভাবে, দলের প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালক, সভাপতি ও দলের অধিনায়ক হিসেবে ইশতিয়াক কেই নির্বাচিত করিল। এবং সকাল-বিকাল দুইবেলা Swinburne University’র Multi Purpuse Field এ Football অনুশীলন চলিতে লাগিল।
একদিন ইশতিয়াক তাহার বাটির দাওয়ায় বসিয়া, তাহার দলের কাহাকে মাঠের কোথায় নিযুক্ত করিলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাইবে তাহাই ভাবিতেছিল,
মিশুঃ ছেলেটি খেলোয়াড় হিসেবে Swinburne এর ললনাদের নিকট সুপরিচিত। কিন্তু তাহার ভুঁড়ির যে আকৃতি, তাহাতে তার দৌড়াইবার সামর্থ নাই। অতএব, তাহাকে গোল রক্ষক পদে বহাল করা হউক।
চৌধুরী মইন উদ্দিনঃ ছেলে ভাল, কিন্তু মাঝে মাঝে কিঞ্চিৎ কদাচিৎ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। তবে তাহাকে দিয়া কাজ চালানো যাইতে পারে।
আল-আমিনঃ ছেলেটি দেখিতে আবালের মত হইলে কি হইবে, ঘটে তাহার প্রচুর বুদ্ধি। তাহাকে নির্দ্বিধায় প্রতিরক্ষা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া যায়।
ইশতিয়াক যখন এইরূপ ভাবিতেছিল, তখন তাহার বাটির একমাত্র গৃহভৃত্য “সানি মনির” আসিয়া বলিল, “আজ্ঞে কর্তা বাবু, আজ সারা দিনমান বাটিতেই বসিয়া রহিলেন যে বড়, আপনার কি কোথাও যাইবার নাই”। ইশতিয়াক বলিল, “না সানি, আমার শরীরটা তেমন ভাল ঠেকিতেছে না, আজ সারাদিন গৃহেই থাকিব”। “কর্তা বাবু আপনার খেদমতের জন্য কিছু কি প্রেরণ করিব?”, “না, আমাকে নিয়া তোমাকে ব্যাস্ত হইতে হইবে না”,। “আজ্ঞে কর্তা বাবু আমি ব্যাস্ত হইতেছি না, আমাকে ক্ষণ কালের জন্য প্রস্থান করিতে হইবে, পাঠশালায় আমার একখানি যন্তরমন্তর পাঠ (Lab Class) বাকী রহিয়াছে, সেইখানে আমাকে হাজীরা দিতে হইবে”। “তা কখন ফিরিবে”। “আজ্ঞে কর্তা বাবু, এই এলুম বলে”। এই বলিয়া গৃহভৃত্য “সানি মনির” হাটি হাটি পা পা করিয়া Swinburne এর দিকে যাত্রা করিল।
বর্ষা কাল শেষ, ইতিমধ্যে শরৎ কালের শরৎ শশী তাহার পুর্ন রূপ নিয়া আকাশে আনাগোনা করিতেছে। নদীর দুই তীর ছাপিয়া সাদা কাশ ফুল তাহার শোভা বর্ধন করিতেছে। এমন দিনে, রেন্ডিস্থান (রেন্ডিয়া+ফাকিস্তান) দলের অধিনায়ক আসিয়া বলিল, তাহারা Bangbros দলের সহিত একখানি প্রিতি ফুটবল ম্যাচ খেলিতে ইচ্ছুক। এই উপলক্ষে Swinburne এর সকল দেশি-বিদেশি ছাত্র-ছাত্রিদের মাঝে সাজ সাজ রব পরে গেল।
অবশেষে সেই মহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত, Swinburne Multi Purpose Field এর দুই পাশে, দুই দলকে তাহাদের নিজ নিজ উর্দি পরিধান করিয়া, খেলোয়াড় বিন্দ্রকে সমবেত হইতে দেখা গেল। রেফারীর বাঁশির সাথে সাথে খেলা শুরু হইয়া গেল। দুই দল তাহাদের সমস্ত শক্তি দিয়া বল লইয়া কাড়াকাড়ি শুরু করিয়া দিল। দুই দলই খেলায় সমান পারদর্শী, “কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান”। হঠাৎ বাংলাদেশী দলের দুর্ধর্ষ খেলোয়াড় “সামিন হাসনাত” প্রতিপক্ষ দলের প্রবল বাধা অতিক্রম করিয়া, বল সরাসরি বিপক্ষ দলের গোল পোস্টে পাঠাইয়া দিল। তাহা দেখিয়া, বাংলাদেশী সকল আবাল, বৃদ্ধ, বণিতা হর্ষধ্বনি করিয়া উঠিল। সমবেত জনতা তারস্বরে চিৎকার করিয়া বলিতে লাগিল, “সামিন ভাই, সামিন ভাই”, “বাঘের বাবা, বাঘের বাবা”।
বাংলাদেশী চিত্রগ্রাহক “Hesham Qasem” তাহার DSLR ক্যামেরা নামক অদ্ভুত যন্ত্রের দ্বারা সকলের চিত্র ধারণ করিতেছিল। বাংলাদেশীদের এমন উৎসাসে পূলকিত হইয়া, সে চাইনিজ রমণীদের চিত্র গ্রহণে ইস্তফা দিয়া, প্রবল উৎসাহে বাংলাদেশীদের চিত্র গ্রহণে মননিবেশ করিল।
যাহা হউক, প্রথম আর্ধের খেলা শেষে ফলাফল, Bangbros-১ , রেন্ডিস্থান-০। রেফারীর বাঁশির শব্দে পূনরায় তুমুল উত্তেজনাপূর্ন খেলা শুরু হইয়া গেল। খেলা এমন মজিয়া গেল যে Swinburne বাসী তাহা অনেকদিন ধরিয়া মনে রাখিবে। ক্রমেই খেলা সমাপ্তির দিকে অগ্রসর হইতেছিল। এমতাবস্থায়, দলের অধিনায়ক ইশতিয়াক চক্রবর্তী, দলের আসন্ন বীজয় এর কথা ভাবিয়া প্রসন্ন হইয়া উঠিল। এমন সময় সে দেখিতে পাইল, বলটি গরাইয়া তাহার দিকেই আসিতেছে। সে ক্ষণকাল না দাঁড়াইয়া বলেই দিকে দৌড়াইয়া গেল। বলটি তাহার পাদুকায় বাধা প্রাপ্ত হইয়া, কিঞ্চিৎ বিমর্ষতার সহিত উপরের দিকে উঠিলে, সে সজোরে স্বীয় মস্তক দ্বারা বলে আঘাত করিল। এতে বল সরাসরি প্রতিপক্ষের গোল পোস্টে ঢুকিয়া গেল এবং গোল। ইশতিয়াক কিছু বুঝিয়া উঠিবার পুর্বেই, বাংলাদেশী সকলে চিৎকার দিয়া উঠিল, আর সেই সাথেই রেফারী তার বাঁশি বাজাইয়া খেলার পরিসমাপ্তি ঘোষণা করিল। খেলার ফলাফল Bangbros-২, রেন্ডিস্থান-০।
বীজয়ের উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হইতেই, ইশতিয়াক চক্রবর্তী লক্ষ করিল, মাঠের অনতি দূরে, এক রূপসী, অষ্টাদশী বঙ্গ ললনা হাতে ডায়েরী এবং কলম লইয়া দাঁড়াইয়া আছে। চক্ষে তাহার তৃষ্ণা, ওষ্ঠে তাহার লাজুক হাসি। ইশতিয়াক দূরদূরু বক্ষে, ললনাটির দিকে আগাইয়া গেল। এবং কিছু না বুঝিয়াই বলিয়া উঠিল, “ছেলের মা, তোমার জন্য বাজার থেকে কই মাছ লিয়ে আসিছি, ইলিশ মাছের প্রচুর দাম তেত্তিরিশ হাজার টাকা কেজি”। ললনাটি লাজুক হেসে, ডায়েরী আর কলম ইশতিয়াক এর দিকে আগাইয়া দিয়া বলিল “আমার ইলিশ মাছ লাগিবে না, ইলিশ মাছের সেন্ট হইলেই চলিবে, আর এখনকার মত Autograph Please. ইশতিয়াক মনের আনন্দে লিখিল, “ইশতিয়াক চক্রবর্তী, From রংপুর With LOVE”.

ইহা একটি কল্পনা আশ্রিত লেখা, সকল চরিত্র কাল্পনিক। যদি কোন কারনে, জীবিত অথবা মৃত কোন ব্যাক্তি অথবা গোষ্ঠীর সাথে, কোন কথা বা ঘটনা মিলে যায়। তার জন্য লেখক কে কোন মতেই দায়ি করা যাবে না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×