মিড টার্ম পরিক্ষা শেষ। গত সপ্তাহে খুব খাটনি গেছে। এবার একটু আনন্দ দরকার। কিন্তু আনন্দ কথায় পাব। আনন্দতো আর কিনতে পাওয়া যায়না। আনন্দ কোথায় পাই। আমার এক বন্ধু নাম রোকন, ও বলল দোস্তো মজা করতে চাউ, তাহলে আমার সাথে চল, আমাদের বাড়ি। আমি শুনেতো আনন্দে আত্মহারা, কারন আমার বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে খুব ভাল লাগে। আমি বললাম, দোস্তো তোমাদের বাড়ি কোথায়। রোকন বলল আমাদের বাড়ি বকশিগঞ্জ, জামালপুর জেলা। আমি বললাম তার মানে ভারতের সীমান্তের কাছাকাছি। রোকন বলল আমাদের বাড়ি থেকে ভারতের সীমান্ত ২ কিলোমিটার দূরে। রোকন এর কাছ থেকে আরও জানলাম ওখানেই গারপাহার। আর কি শুরু করলাম পাহাড় চড়ার, সীমান্ত দেখার প্ল্যানিং। আমাদের আরও ৩ জন বন্ধু, হাবেল, আসাদ, ইয়াকুব ওদের বললাম আমাদের প্ল্যান এর কথা। দেখলাম ওরাউ এই বিষয়ে আগ্রহী।
আমার একটা সমস্যা আছে, সেটা হল কোন কিছু করার প্ল্যান করার পর তা আর করতে পারি না। এর পিছনের কারন হচ্ছে, আমার বাবা-মায়ের বাড়ন। আমি বুঝতে পারছিলাম এত প্ল্যান করার পর দেখা যাবে সব শেষ। তাই বন্ধু হাবেল আর ইয়াকুব কে আমার সমস্যার কথা বললাম। আমার কথা শুনে ইয়াকুব বলল, “দোস্তো তোর বাবা-মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ে আমার কাছে কোন ব্যাপারইনা”। আমি দেখলাম ইয়াকুব যে পরিমান চাপাবাজ ওর কাছে এইটা কোন ব্যাপার না। তার পর আমি, হাবেল আর ইয়াকুব আসলাম আম্মার কাছে অনুমতির জন্য। কারন আম্মা যদি অনুমতি দেয় তাহলে সব ঠিক, কারন আব্বাকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আম্মার। অনেক চেষ্টার পর আম্মার কাছ থেকে অনুমতি আদায় করা গেল। এখন আর কোন বাধাই থাকল না।
০৩/০৭/২০১১ তারিখ বিকাল ২.৩০ তে আমরা টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে আমাদের যাত্রা সুরু করলাম। রোকন এর কাছে জানতে চাইলাম, যেতে কতক্ষন লাগবে। রোকন বলল কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা। আমার পকেট পিসির গুগল ম্যাপ এ দেখলাম দুরত্ত ১৬০ কিলমিটার এর মত (গুগল ম্যাপ এ ওই অঞ্চল সাদা দেখায়, তাই দূরত্ব আনুমানিক ধরে নেয়া হয়েছে)। আমি বললাম মাত্র ১৬০ কিলোমিটার যেতে ৬ ঘণ্টা লাগবে? ও বলল রাস্তায় যাওয়ার সময় দেইখো কেন এত সময় লাগে। প্রথমে টাঙ্গাইল থেকে জামালপুর এর বাসে জামালপুর পর্জন্ত গেলাম। এর পর ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সায় ব্রহ্মপুত্র নদীর কিনার পর্জন্ত যেতে হল। তারপর C.N.G. চালিত অটো রিক্সায় বকশিগঞ্জ এলাম। এই পথ যেতে প্রায় ১ ঘণ্টার মত লাগল। এরপর বকশিগঞ্জ থেকে কামাল পুর, কামাল পুর থেকে ট্যাংরামারি। ট্যাংরামারি হচ্ছে রোকন এর গ্রাম। আমরা প্রায় ৯ টার কাছা কাছি সময়ে রোকনদের বাড়ীতে গিয়ে উঠলাম। দেখলাম বাড়ীতে খালা-খালু (রোকন এর মা-বাবা) আমাদের পথ চেয়ে আছে।
-----চলবে
একটি ভ্রমণ কাহিনী। পর্ব-2
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১০:১৯