চাকরীর সুবাদে প্রতিদিন প্রায় 15 কিলোমিটার সিএনজিতে চলতে হয়। গত ০৯/০৩/২০১৪ বিকাল 3.50 এর সময় কর্মস্থল থেকে আসছিলাম- হঠাৎ এক চতুর্থাংশ আসার পর সি এনজি ওয়ালা বলল “কারো কাছে কি কোন অবৈধ কিছু আছে?” বলতে বলতে গাড়ী প্রায় থামাতে চলল।
প্রতিদিনেই এই চেক এর বিষয়টি প্রত্যক্ষ করি- কিন্তু কোন ড্রাইভার এমনটি প্রশ্ন করতে দেখিনী। সিএনজি ওয়ালার আজকের এই প্রশ্ন করার প্রক্রিয়াটি নতুন- আমি সামনের সীটে ড্রাইভারের বামদিকে বসা।
- আমি তাই বিরক্ত হয়ে ড্রাইভারকে বল্লাম- এইটা জিজ্ঞাসা করার কি তোমার কোন প্রয়োজন আছে?
ড্রাইভার জবাব দেয়- প্রয়োজন আছে-
আমি বল্লাম- এটা কি তোমার দায়িত্ব?
ড্রাইভার জবাব দেয়- দায়িত্ব না হলেও আমি জিজ্ঞাসা করছি- কারন অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে- গাড়ীর ড্রাইভার সহ গাড়ীর নামে মামলা হবে।
- আমি বিরক্ত হয়ে বল্লাম- তার মানে? ড্রাইভার কি সব যাত্রীকে চেক করে গাড়ীতে উঠাবে?
- সে জবাব দেয়- আমার চাচাত ভাইয়ের নামে মামলা হয়েছে- গাড়ী থানায় আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আমি চিন্তা করতে লাগলাম- গাড়ী ওয়ালা যেভাবে প্রশ্ন করছে – অবৈধ কিছু আছে কিনা? তার মানে যদি কোন সমস্যা কোন যাত্রীর মধ্যে থাকে তাহলে ড্রাইভার তাকে নামিয়ে দিবে। তাহলে চেকিং এর ফলাফলটা কি দাঁড়াল?
উত্তর হলো- “জিরো” কারন দায়ী হলো পুলিশের ব্যবস্থাপনা। গাড়ীর নামে মামলা হলে বা ড্রাইভারের নামে মামলা হলে তো ড্রাইভার যাত্রীকে নামিয়ে দিবেই।
সাথে সাথে আমার মাথায় একটা কথা আসল একজন বন্ধু একদিন তর্ক করতে করতে আমাকে বলেছিল- “একজন অপরাধী আইনের হাত ফসকে বেড়িয়ে গেলে আইনের যতটুকু না ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হবে যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে অপরাধী করা হয়”
কথাটার সত্যতা অনুভব করলাম আজ। কারন যাত্রী অবৈধ মাল বহনের দায়ে যদি সিএনজি ওয়ালাকে মামলায় না জড়ানো হতো তাহলে- আজ এই সিএনজি ওয়ালা এই প্রশ্নটি করতো না। বা অবৈধ মাল বহনাকারীকে নামিয়ে দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসতো না। সিএনজি ওয়ালা অপরাধীকে ধরিয়ে দেওয়ার মানষিকতা নিয়ে যাত্রী বহন করতো।
আবারো বলছি- সেই কথাটি “একজন অপরাধী আইনের হাত ফসকে বেড়িয়ে গেলে আইনের যতটুকু না ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হবে যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে অপরাধী করা হয়”
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:০৮