সেদিন টিভিতে খবর দেখছিলাম.. দেখলাম আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর দলের কোন এক অনুষ্ঠানে বলছেন- "আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষ কিছু পায়-আর বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ যায় উল্টো দিকে-(হাসি হাসি মুখে তিনি এটাও বললেন) ভুতের পা থাকে উল্টো দিকে"
ভুতের পা উল্টো দিকে থাকে সেই কথাটার সাথে বিএনপির কি সম্পর্ক আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। কিন্তু আমার সমীকরন সেই মহুর্তে মিলাতে গিয়ে রাগে দু:খে সেদিন খবর দেখার মহুর্তে ডান হাতটিতে রক্ত প্রবাহ বেড়ে গিয়েছিল। মন চাইছিল-থাপ্পর মেরে টিভিটাই ভেঙ্গে ফেলি।
কারন- বর্ননার আগে এই স্কেনকৃত ছবিটার দিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্শন করছি...
০১. লাল মার্ককৃত ঘরের লেখাগুলি জেলা শিক্ষা অফিসের- একটা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি পত্র। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হতেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ। জেলা শিক্ষা অফিসে নিয়োগের জন্য অনুমতি চাইলে লাল মার্ককৃত বক্তব্যটি লিখে দেওয়া হয়।
০২. নতুন শিক্ষক নিয়োগ করলেও এমপিওভুক্তি হয় না। গত ২০১০ সালের মার্চ মাসে একবার নতুন শিক্ষক এমপিওভুক্তি হয়েছিল। তারপর আজ প্রায় ১৮টি মাস অতিক্রান্ত হতে চলছে... নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি বন্ধ।
০৩. নিবন্ধন পরীক্ষার গ্যারাকল পার হয়ে একজন বেকার যখন চাকরী নিতে যায়- তখনই শুরু হয় আওয়ামী দলীয় চামচাদের টাকা খাওয়ার মহড়া। এক চামচা ভাগ কম পেলে নিয়োগ স্থগিত। এতসব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে মাত্র আট হাজার টাকার স্কেলের চাকরীটা তিন/চার লক্ষ টাকা আওয়ামী চামচাদেরকে খাওয়ানোর পরও যখন ১৮ মাস বেকার খাটতে হয়। তখন... সেই পেছনের পা ওয়ালা ভুতের কথাটাই মনে পড়ে যায়। ভুত আমাদের আর কিছু দিতে না পারলেও ২/৩ মাস পর পর এমপিও ভুক্তির কাজটা সঠিকভাবে করছিল।
আওয়ামী লীগের মুলা ঝুলানোর রাজনীতি দেখতে দেখতে আমরা কতকিছু দেখলাম তা বলে শেষ করা যাবেনা..
নতুন শিক্ষানীতির মুলা দেখলাম। দেখলাম শিক্ষকদের জন্য নতুন পে-কমিশনের মুলা। দেখলাম বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজেশন করার মারপ্যাচে কম্পিউটার শিক্ষক নামক পোষ্টটিতে শিক্ষক নিয়োগের বেলায় নির্লজ্জভাবে ১০০% বেতন ভাতাদি প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়ার শর্তারোপ। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর মুখে শোনলাম তিল তিল করে গড়া শিক্ষা ব্যবস্থার গুনকীর্তন। ১৮ মাস যাবত বেকার খাটার মুলাও দেখলাম। আরো দেখলাম শিক্ষা মন্ত্রনালয় হতে সাতাশ কোটি টাকা ফেরত নেওয়ার মুলা। প্রতিটি ঘরে ঘরে চাকরী দেওয়ার নামে দেখলাম তার দলের সকল কর্মীদের বায়োডাটা নেওয়ার মুলা (পোষ্ট)।
অতএব মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, শিক্ষকদের সামনে আর মুলা ঝুলিয়ে না রেখে অন্তত নতুন নিয়োগ নেওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কাজটা যথা সময়েই করে ফেলুন। না হয় এভাবে ভুতের ভয় দেখানো আপনার মুখে শোভা পায়না।
আবারো বলছি.. পেছনের পা ওয়ালা ভুত আমাদের আর কিছু দিতে না পারলেও ২/৩ মাস পর পর এমপিও ভুক্তির কাজটা সঠিকভাবে করছিল। তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের সপ্ন না দেখিয়েও- বিদ্যুত আছে এমন প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ২টা করে কম্পিউটার দিতে পেরেছিল। অতএব... সাধু সাবধান.. সময় গেলে সাধন হবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:১১