শাহবাগের গণজাগরণে শরিক হতে চাওয়ায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৪-১৫ জন শিক্ষার্থীকে বেদম পিটিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নিয়েছে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত। এরই মধ্যে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দেওয়া হয়েছে এক ছাত্রকে। অন্যদেরও টিসি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে স্কুল সূত্র।
এ পরিস্থিতিতে জামায়াতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ভুক্তভোগী অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলটিতে আর না পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তারা জানান, গত বুধবার অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছে শাহবাগ যাওয়ার আবেদন করার পরপরই তাদের বারিধারার জামালপুর টাওয়ারে স্কুল ও কলেজ শাখার সভাকক্ষে ডেকে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।
শিক্ষার্থী পেটানোর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দাঁড় করায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা শুধু শাহবাগ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদনই করেনি, তারা শাহবাগের আন্দোলনে শরিক হতে অন্য ছাত্রদেরও প্রলুব্ধ করেছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে মনে করেই কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্র্থীদের ওপর নির্যাতন চালায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্যাতনের শিকার দশম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেন ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (নম্বর-৭৬৯) করেছে। অন্য ছাত্রদের অভিভাবকরা এ ঘটনার প্রতিকার পাওয়ার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে।
নির্যাতিত অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাহিম জানায়, তাকে শুধু অমানুষিক নির্যাতন করাই হয়নি, তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি দেওয়া হয়েছে। এতে তার শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার একাধিক ছাত্র বলে, বুধবার সকাল ১০টার দিকে আবেদনপত্র নিয়ে অফিস কক্ষে যাওয়ার পরপরই পেটানোর পাশাপাশি তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোনসেট ভেঙে ফেলা হয়, যাতে ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে কাউকে না জানানো যায়।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা ঘরে বসে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে নতুন প্রজন্মের গণজোয়ারের দৃশ্য প্রতিদিন দেখছে। ওই গণজোয়ারে শরিক হওয়ার জন্য ক্যামব্রিয়ান কলেজের সব শিক্ষার্থীর পক্ষে তারা কর্তৃপক্ষের কাছে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে গিয়ে একাত্মতা প্রকাশের জন্য লিখিত আবেদন করে। এতেই কলেজ কর্তৃপক্ষ খেপে যায়।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের বেদম পেটানোর সময় বলা হয়, শাহবাগ যাওয়ার খায়েশ মিটিয়ে দেওয়া হবে।
অভিভাবকরা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই পারে। তার অনুমতি দেওয়া না দেওয়ার এখতিয়ার কলেজ কর্তৃপক্ষের রয়েছে। তাই বলে এ জন্য তাদের পিটিয়ে আধমরা করার অধিকার তাদের নেই।
আরাফাত হোসেনের বাবা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্যামব্রিয়ান কলেজের এমন ন্যক্কারজনক আচরণে যুদ্ধাপরাধীর পক্ষের চেহারা প্রকাশ পেয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তরালে জামায়াতি পক্ষপাতিত্বের কথা জানলে কখনো সেখানে সন্তান ভর্তি করতেন না বলেও জানান এই অভিভাবক।
একাধিক ছাত্রের অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করতে চাওয়ার জন্য এ ধরনের ঘটনার শিকার হওয়া দেশে নজিরবিহীন। এরইমধ্যে একজন শিক্ষার্থীকে টিসি দেওয়া হয়েছে। অন্যদেরও পর্যায়ক্রমে টিসি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্যামব্রিয়ান স্কুল ও কলেজের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার দুই ছাত্রকে বেত দিয়ে মারার কথা স্বীকার করে বলেন, কয়েক জন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে অন্য শিক্ষার্থীদের জড়ো করছিল, যার প্রেক্ষিতে তাদের শাসন করা হয়েছে। কারণ এ প্রতিষ্ঠানে কোনো ঘটনা ঘটলে এর দায় তাদেরকেই নিতে হবে।
কোনো ছাত্রকে বেত দিয়ে মারধোর করা আইনসঙ্গত কি না- সে প্রশ্ন তুললে চেয়ারম্যান বাশার নিরুত্তর থাকেন।
শিক্ষার্থীদের শাহবাগ যেতে বাধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, কোনো স্থানে নিয়ে যেতে হলে অভিভাবকদের অনুমতি প্রয়োজন। তারা এ অনুমতি না নিয়েই শাহবাগ যাওয়ার জন্য জড়ো হতে থাকে।http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=9eec65366fce025d49148a80c52cfed3&nttl=14022013174028
জামাত শিবীরের আস্তানা গুড়িয়ে দাও পুড়িয়ে দাও
সহযোদ্বা হিসাবে আমার পাশে থাকার অনুরোধ রইলো Click This Link