
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশের স্বনামধন্য রাজনৈতিক দলগুলো যখনই ক্ষমতায় এসেছে, ঠিক তখনই নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যাকুল হয়েছে। ক্ষমতার মসনদ একটি। সুতরাং ক্ষমতায় আসলে একটি দলই আসবে। আর তাদের সময়সীমা তো বেধেঁই দেওয়া। সময় শেষ হবার সাথে সাথেই তো ক্ষমতার আসন ত্যাগ করে স্ব-স্থানে চলে যাবে। আর এটাই হলো চিরাচরিত রীতি। বর্হিবিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গনে দেখা যায়, বিরোধীদল সরকারী দলকে স্বাগত জানায় এবং দেশ গঠনে সহায়তা করে। বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, বাংলাদেশে এ ধরণের আশা, নৈরাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। কেন? কেন বিরোধীদল সরকারীদলকে সমর্থন দেয় না? কেনইবা সুর তোলে নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপী হয়েছে? এর কারণ একটাই। সেটি হলো নিজেদের স্বার্থ হাসিলের সুযোগ থেকে বিঞ্চত হওয়া। প্রতিটি দলই সর্বাগ্রে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যস্ত। অথচ যে জনগণের ভোটে তারা ক্ষমতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করে, সেই হতভাগা জনগণের কথা তো ভূলেও মনে করে না। ব্যাপারটি হলো "নির্বাচনের সময় পানি ফুস করে শব্দ করে, আর নির্বাচনের পরে ফুস শব্দ আর থাকে না।" নির্বাচনের প্রাক-কালে কতই না অঙ্গীকার। কিন্তু নির্বাচন শেষে সব অঙ্গীকারই ভঙ্গীকারে পরিনত হয়ে যায়। যখনই দেশের স্বার্থ এবং ব্যক্তি স্বার্থ একত্রিত হয়েছে, তখনই দেশে আরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। সবার উপরে হলো দেশের স্বার্থ। দেশের স্বার্থ ঠিকতো জনগনেল স্বার্থ ঠিক। ১৪ নভেম্বর বিরোধীদল কর্তৃক ডাকা হরতাল জনমনে যে ক্ষোভ দেখা দিবে তার সুরাহা দিবে কে? প্রধানমন্ত্রী না কি বিরোধী দলীয় নেত্রী?
সামনে ঈদ। সবাই ব্যস্ত কর্মস্থল ত্যাগ করে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য ছুটে যাবে নিজ আঙ্গিনায়। ঠিক এ মুহুর্তে দেশে যে সমস্যার সৃষ্টি হলো, সচেতন নাগরিকদের কি একটুও টনক নড়বে না?
সত্য কথা বলতে কি, কোন রাজনৈতিক দলই জনগণের চিন্তা মাথায় রাখেন না। আর মাথায় রাখার সময়ই বা কই? তাদের রাজনৈতিক আঙ্গিনায় তারা নিজেদের ফুল ফুটাতে পছন্দ করেন, দেশের এবং জনগণের নয়। বর্তমান সমস্যা ঈদের পরে সৃষ্টি হলে হয়তবা একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমারও তেমন খারাপ লাগত না। কারণ আমাদের দেশের রাজনীতি তো এরকমই। একজন আর একজনের দোষ খুঁজতে ব্যস্ত থাকে। অথচ নিজের দোষ সংশোধনের কোনো চেষ্টা নেই।
[কোন দলের পক্ষে নয়, আমি জনতার পক্ষে]