somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

masanam91
যখন সত্য এসে মিথ্যার সামনে দাঁড়ায় তখন মিথ্যা বিলুপ্ত হয়। কারণ মিথ্যা তাঁর প্রকৃতগত কারণেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। আল-কুরআন : সূরা- ইসরা, অধ্যায়-১৭, আয়াত-৮ وَقُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ ۚ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا [١٧:٨١]

“সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” – এই প্রশ্নের সরল উত্তর

১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তমনা” নাস্তিকরা, “ডি-জুস”-কালচারে-বড়-হওয়া নিজের দ্বীন-সম্বন্ধে-একেবারে-অজ্ঞ কোন কিশোর বা তরুণকে যে ক’টি প্রশ্ন করে ভড়কে দেয়, তার একটি হচ্ছে: “সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” অথচ, একটু চিন্তা করলেই দেখা যাবে যে, এই প্রশ্নটা সেই গ্রাম্য “শঠ-পন্ডিতের” সাথে “সত্যিকার পন্ডিতের” বিতর্কের প্রসিদ্ধ গল্পের মত – যেখানে “শঠ-পন্ডিত” তার প্রতিদ্বন্দিকে জিজ্ঞেস করেছিল: I don’t know – মানে কি?
চলুন দেখি “সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছেন?” এই প্রশ্নের একটা সরল উত্তর ভেবে দেখা যাক:

স্রষ্টা এমন সত্তা যিনি সৃষ্ট নন, তিনি অস্তিত্বে আসনে নি বরং সর্বদা অস্তত্বিশীল এবং তিনি সৃষ্টিজগতের স্থান-কাল কাঠামোর অংশ নন ৷ আর এজন্যই তিনি অসৃষ্ট বা অবস্তু, ফলে তাঁর সৃষ্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই ৷ এজন্য স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছেন, এই প্রশ্নটিই অবান্তর ৷ যেমন একটি ছবি কে এঁকেছে, এর উত্তরে একজন চিত্রশিল্পীর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক, কিন্তু “চিত্রশিল্পীকে কে এঁকেছে?” এই প্রশ্নটি অবান্তর কেননা চিত্রশিল্পীর ক্ষেত্রে “আঁকা” নামক ক্রিয়াটি প্রযোজ্য নয় ৷ তাই চিত্রশিল্পীর অংকিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, অন্য কথায় “অংকিত নয়” এমন একজন অংকনকারী থাকা সম্ভব ৷ একইভাবে “সৃষ্ট নন”, এমন একজন স্রষ্টা থাকা সম্ভব, তাই বার্ট্রান্ড রাসেলের “হু ক্রিয়েটেড গড মাম?” এই প্রশ্ন করা অযৌক্তিক, অবান্তর, বোকামী ৷ আরেকটা উদাহরণ দেয়া যাক ৷ ধরা যাক আপনি অনেক দীর্ঘ একটি তাসের সারির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, আপনি দেখছেন একটি একটি করে তাস পড়ে যাচেছ এবং পড়ে যাওয়ার সময় সে পরের তাসটিকে ধাক্কা দিচ্ছে, ফলে পরের তাসটিও পড়ে যাচেছ, এভাবে একটি তাসের পতনের কারণ হচ্ছে তার পূর্বের তাসটি, তার পতনের কারণ তার পূর্বের তাসটি, তার পতনের কারণ তার পূর্বের তাসটি, এভাবে যেতে থাকলে একটি তাসে গিয়ে আপনাকে থামতেই হবে যেটি প্রথম তাস ৷ এখন যদি প্রশ্ন করা হয় যে, প্রথম তাসের পতনের কারণ কি? উত্তরে বলা যাবে না যে সেটিও একটি তাস, ফলে বুঝতে হবে যে প্রথম তাসের পতনের কারণ এমন কিছু যে নিজে তাস নয় ৷ হয়ত সে একজন মানুষ যে প্রথম তাসটিকে টোকা দিয়েছে ৷ এই মানুষটি যেহেতু তাস নয়, সেজন্য তাসের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্যসূচক প্রশ্ন করা যাবে, এই মানুষের ক্ষেত্রে তা করা যাবে না ৷ যেমন তাসের ক্ষেত্রে প্রশ্ন করা যায় যে “তাসটি কি হরতন না ইস্কাপন?”, কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এই প্রশ্নটি অবান্তর ৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও তাসের পতনের পেছনে আদি কারণ হিসেবে মানুষ থাকার বিষয়টি বাস্তব ৷ ঠিক তেমনি স্রষ্টা যেহেতু সৃষ্টি নন কিংবা ফল নন, সেহেতু “তাঁর স্রষ্টা কে?” বা “কারণ কি?” এই প্রশ্নগুলি তাঁর বেলায় প্রযোজ্য নয় – কিন্তু তাঁর থাকার বিষয়টি বাস্তব ৷ এখানে আপাতদৃষ্টিতে একটি প্রশ্ন আসতে পারে যে, যদি স্রষ্টাকে অস্তিত্বে আনার প্রয়োজন নেই বলে ধরে নেই, তবে খোদ মহাবিশ্বের ক্ষেত্রেই একথা ধরে নেই না কেন ? এর কারণ এই যে, মহাবিশ্ব কোন “জ্ঞানসম্পন্ন সত্তা” নয় যে নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, পরিচালনা করতে পারে। বরং মহাবিশ্বের সকল ব্যবস্থা ও সকল অংশ ইংগিত করছে যে, তা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। এজন্য কোন স্রষ্টা ব্যতীত মহাবিশ্বের স্বয়ংসর্ম্পূণ অস্তিত্বের ধারণা সর্ম্পূণ যুক্তি বিরোধী, তাই এক্ষেত্রে একমাত্র যৌক্তিক সম্ভাবনা হচ্ছে এই যে, এর একজন জ্ঞানী স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রণকারী থাকতে হবে যিনি নিজে সৃষ্ট নন।


(সংকলিত)
২০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ার রক্তচোখ: ক্রোধের নগর

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫২


ষড়ঋপু সিরিজের দ্বিতীয় কাহিনী ”ক্রোধ”

রাত্রি নেমেছে শহরের উপর, কিন্তু তিমির কেবল আকাশে নয়—সে বসেছে মানুষের শিরায়, দৃষ্টিতে, শ্বাসে। পুরনো শহরের এক প্রান্তে, যেখানে ইট ভেঙে পড়ে আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২



প্রিয় কন্যা আমার-
ফারাজা, তুমি কি শুরু করেছো- আমি কিছুই বুঝতে পারছি না! রাতে তুমি ঘুমানোর আগে ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমাতে যাও। প্রতিদিন তোমার মুখে ঘুমের দোয়া শুনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি আমি আর আমাদের দুরত্ব

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩



তুমি আর আমি
দুই বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে,
নেই কোন লোভ চুম্বনের ,
ছোঁয়ারও কোন প্রয়োজন নেই
অথচ প্রতিটি নিঃশ্বাসে কেবলি তুমি।

তোমার হাসি সুবাসিত নয়,
কিন্তু সে আমায় মাতাল করে
যেন তরংগ বিহীন কোন সুর বাজে
মন্থর বাতাসে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৪



পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

'৭৪ সালের কুখ্যাত বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এখন সময়ের দাবী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫


বিগত আম্লিক সরকারের আমলে যে কুখ্যাত আইনের অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করে গায়েব করার চেষ্টা চলতো তা হলো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। এই আইন ব্যবহার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×