পাহাড়ে সেনা মোতায়েন ছিল জেনারেল জিয়াউর রহমানের একটি সুদূরপ্রসারী চিন্তার প্রতিফলন।
পাহাড়ে জুলুম হয়েছে একথা খুব সত্য।
আপনি প্রায়শই পাহাড়ে বাঙালি ও অবাঙালিদের সংঘর্ষের কথা শুনবেন, তবে এই সংঘর্ষ কি হিন্দু মন্দিরে হয় না, জাতীয় মসজিদে হয় না? নও-মুসলিম ওমর ফারুককে মেরে ফেলার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ কায়েম হয়নি? হয়েছে, রাষ্ট্রের কাছে আমার আপনার বিক্ষিপ্ত কথার চেয়ে তার নিজের নিরাপত্তা বেশি জরুরি। রাষ্ট্র নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। রাষ্ট্র নদী ভেঙে ঘরবাড়ি হারানোদের পাহাড়ে স্যাটেলড করেছিল, আর সেইসব বাঙালিদের নাম হয়েছে স্যাটেলার। এই জমিগুলি ব্যক্তিগত নয়, রাষ্ট্রের জমি। সেখানকার বহু বাঙালিও আবার দখলদারিত্বের রাজনীতি কায়েম করেছে। অবাঙালিরাও যে করেছে, পাহাড়ে সংঘটিত বহুবিধ সন্ত্রাসবাদই তার প্রমাণ।
পাহাড় সম্পর্কে বহুবিধ ন্যারেটিভ প্রচলিত আছে। পাহাড়ে বহু ভুমিদস্যুদের দ্বারা জুলুম হয়েছে, এটাও সত্য। কিন্তু আপনি একথা ভুলবেন না, পাহাড়ে ইউপিডিএফ কিংবা সংস্কারের মতো হাইলি ইকুইপড সশস্ত্র ইনসার্জেন্ট আছে। রাষ্ট্র ও জনগণের নিকট যারা শত্রু। যেকোন নতুন স্থাপনা করলেও তাদেরকে চাঁদা দিতে হয়, যেন তারাই সেখানকার সরকার!
বহুকাল আগে আমি নিজেও পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছি। বিভিন্নক্ষেত্রে পাহাড়ের জনপ্রতিনিধিরাও অনিরাপদ। অথচ এগুলো আপনি মিডয়ায় খুব কম শুনবেন। জানেন তো বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকও পাহাড়ে পোস্টিং চায় না। কিছুদিন পর পর পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনীর উপর সন্ত্রাসীদের হামলা হয়।
পাহাড়ে বাঙালি অবাঙালিদের সংঘর্ষে সেনা প্রত্যাহারের দাবি আসছে, এই দাবি বামেরাও করছে। পাহাড়ে কিছু ঘটলেই সেনা প্রত্যাহারের দাবি আসে। মামুর বাড়ির আবদার আর-কি!
ভুলে যাবেন না ঢাকা শহর রক্ষার জন্য শহরের পাশে পিলখানা তৈরী করা হয়েছিল, তৈরী করা হয়েছে সাভার ক্যান্টনমেন্ট। পাহাড়ে সেনাবাহিনী আছে এবং থাকবে। কিন্তু সেনাবাহিনীর রুল কী হবে তা ভিন্ন বিষয়। সেটা নিয়ে নাগরিক সমাজের মধ্যে কথা চলতেই পারে, পাহড়ের সমস্যাকে সমতলে নিয়ে এসে বোঝাপড়া করা প্রয়োজন। রাষ্ট্রকে নাগরিকদের মধ্যে ইনসাফ কায়েম করতে হবে।
পাহাড়ে সেনাপ্রত্যাহারের মতো আত্নঘাতী সিন্ধান্ত কোন সরকারই গ্রহণ করবে না। কোন রাষ্ট্রই তার সীমান্ত ও দুর্গম এলাকা অরক্ষিত রাখে না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:২৬