প্রচন্ড বুড়ো হয়ে গেছি হঠাৎ করে,
ঘুম থেকে সচকিত হয়ে জেগে উঠে
ঝাপ্সা চোখে আবিষ্কার করি,
জবুথবু একটা হৃদ্পিন্ড-
মন্থর হয়ে গেছে ওর বীরদর্পের হাসি-
তার চেয়েও বড় কথা,
জমাট কালো হয়ে গেছে মাংস্পিন্ড--
শরীরের সমস্ত রক্ত বাসি
হয়ে গেছে এক রাতে।
অথচ কাল ও তো সব ঠিক ঠাক ছিল !
সারাটি রাত মৃত আরশোলার মত উলটে ছিলাম-
তবে তার আগে বেশ জমিয়ে
আড্ডা হয়েছে মেসের ডাইনিং এ,
নিবারণদের সাথে দুইদান তাসের চালে
পৃথিবীর সমস্ত বর্জ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
শরীরটাকে এভাবে পচিয়ে দেয়ার মত,
অতিরিক্ত কিছু কি করা হয়েছে?
রোজকার মত দুই গ্লাস --এ আর বেশি কি !
তারপর ও - সব কেন এত বিব্রত,শোকাহত !
এসব যন্ত্রনা সামাল দেয়া
আর আমার কাজ নয়,
যদ্দিন তুমি ছিলে, এসব নিয়ে ভাবতে,
আমি অনেক নির্দয় ,কিপ্টে
পচে যাক, সব---
বাজারে বিক্রি করে দিয়ে আসব !
বিনিময়ে অনেক দাম দিয়ে কষ্ট কিনব।
মাস দুয়েক অনায়াসে চলে যাবে !
সেদিন টেলিফোনে শেষ কথোপকথনের পর
ভেবেছিলাম,
আনন্দের সাথে বুঝি চির শত্রুতা হল !
অথচ, সেকেন্ডের কাঁটা যখন পুরোটা একবার ঘুরে আসে,
দেখতে যে কি ভাল লাগে,
তুমি বোধহয়, জানো না।
মাঝে মাঝে তোমাকে সত্যিই এসব
জানাতে ইচ্ছা করে,
ইচ্ছে করে,বিশাল একটা হাতুড়ি এনে
বার্লিনের এই দেয়াল
ভেঙ্গে টুকরো করে দেই-
তখনই আবার মনে হয়, এই যুগে তো আর
ক্লজ মিন -ফ্লয়েড দের জন্ম হয়নি,
যে আমাদেরকে স্বাগত জানাবে।
বরং হাজারো রক্ত পিপাসু বন্য নাইটিঙ্গেল
তোমার আমার কাছে
বিকৃত সুরের কান্না শোনাবে।
আমি বলি,
তুমি আরো দূরে হেঁটে চলে যাও--
নয়তো হৃদয় পচা গন্ধ পাবে !
ভুল বুঝে নাক সিঁটকাবে !
কিন্তু তুমি এও জানোনা বৈকি-
এই পচা শরীরের বিশাল একটা অংশ
ভুলে তোমার কাছে রয়ে গেছে !
হাত দিয়ে অনুভব করি এখনো-
অনেক বড় একটা ক্ষত,
মস্তিষ্কের হিমশীতল একটা জায়গা,
ভালবাসা ছাড়া জমে বরফ হয়ে গেছে।
তোমার কাছে নেই পচে যাবার ভয় !
তাই ওটাকে অনেক যত্ন করে রেখ,
আমি যতই কৃপণ হই, বলছি----
ফেরত চাইব না কক্ষণো
সে জিনিস বিক্রি হবার নয়।।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২৯