somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়ন চাই

০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। বিশ্বের ৪০ কোটি আদিবাসীর সাথে বাংলাদেশের ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসীরাও দিনটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। প্রতিবছর জাতিসংঘ এই দিনটিকে ঘিরে আদিবাসী অধিকার সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণের জন্য প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে থাকে। এবছর আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রের এক দশক (The 10th Anniversary of the UN Declaration on the Rights of Indigenous Peoples)। বিশ্বব্যাপি আদিবাসীদের অব্যাহতি আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আদিবাসী ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হয়েছিল। এরপর নৈতিকভাবেই জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এই ঘোষণাপত্রটি বাস্তবায়নে দায়বদ্ধ থাকলেও বাংলাদেশ কখনই এটি বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেইনি। বরং রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। তাহলে উত্তরবঙ্গ তথা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বসবাসরত সাঁওতাল, উরাও, মালো, মাহাতো, ডালু, কডা, কোল, ভীল, গঞ্জু (সিং), গড়াইত, রাজোয়াড়, ভূঁইমালী, মালপাহাড়ী, কন্দ, কর্মকার, কোচ, তেলি, তুরি, বড়াইক, বর্মন, বাগদী, ভূমিজ, মাহালী, মুন্ডা, মুশহর, রবিদাস, রাজবংশী, লোহার ইত্যাদি জাতিরা কারা? সিলেট- ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল অঞ্চলে বসবাসরত গারো, খাসি, বানাই, হাজং, হদি ও উপকূল অঞ্চলের রাখাইন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চগ্যা, বম, পাংখোয়া, চাক, খিয়াং, খুমি, লুসাই ইত্যাদি জাতিরা কারা? প্রশ্নাতীতভাবে রাষ্ট্র ৪৬ বছর ধরে অস্বীকার করে যাচ্ছে বাংলাদেশে বসবাসরত ৫৪টির অধিক আদিবাসী জাতিদের আত্মপরিচয়। এই অস্বীকার কি আদিবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের নিপীড়ণ নয়?

আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রটি আদিবাসীদের অধিকারের আন্তর্জাতিক একটি দলিল। ঘোষণাপত্রের বর্ণিত ৪৬টি অনুচ্ছেদে আদিবাসীদের মৌলিক মানবাধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার, ভূমি, অঞ্চল বা টেরিটরি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পূর্ণ অধিকার, ভূমির উপর ব্যক্তিগত ও সমষ্টিক মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ, আদিবাসীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, শিক্ষাসহ নিজস্ব ভাষা ও জীবনধারা সংরক্ষণের স্বীকৃতি দিয়েছে। ঘোষণাপত্রের ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার রয়েছে এবং এই অধিকারের বলে তারা স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নির্ণয় করতে পারে এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে। অনুচ্ছেদ-১০ এ বলা হয়েছে- আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূমি কিংবা ভূখন্ড থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে উৎখাত করা যাবে না। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের স্বাধীন ও পূর্ববহিত সম্মতি ছাড়া কোনভাবে অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা যাবে না এবং ন্যায্য ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে সমঝোতা সাপেক্ষে স্থানান্তর করা হলেও, যদি কোন সুযোগ থাকে, পুনরায় তাদেরকে স্ব-এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা থাকতে হবে। অনুচ্ছেদ-১৬ (১) এ বলা হয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করার অধিকার এবং কোনরূপ বৈষম্য ব্যতীত অ- আদিবাসী জনগোষ্ঠী কর্তৃক পরিচালিত সকল প্রকার গণ মাধ্যমে প্রবেশাধিকার রয়েছে। অনুচ্ছেদ-২২ (২) তে বলা হয়েছে আদিবাসী নারী ও শিশুরা যাতে সকল প্রকার সহিংসতা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা পায় ও তা নিশ্চয়তার সাথে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করে তার নিশ্চিত করার জন্য, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে রাষ্ট্র যৌথভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ঘোষণাপত্রের ২৬ ধারায় বলা হয়েছে, যে সব ভূমি, এলাকা ও প্রাকৃতিক সম্পদ আদিবাসীরা বংশপরম্পরায় ঐতিহ্যগতভাবে ভোগদখল করে আসছে বা কোনরকম ব্যবহার করে আসছে, তার উপর আদিবাসীদের অধিকার রয়েছে। আবার বলা হয়েছে, রাষ্ট্র এই সব ভূমি, অঞ্চল ও সম্পদের আইনগত স্বীকৃতি প্রদান করবে এবং এ ধরনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে আদিবাসীদের রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও ভূমি মালিকানা প্রথাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে। অনুচ্ছেদ ২৮ এ বলা হয়েছে, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ যা তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলকৃত বা ব্যবহারকৃত, এবং যা তাদের স্বাধীন ও পূর্ব সম্মতি ছাড়া বেদখল, ছিনতাই, দখল বা ক্ষতিপূরণ করা হয়েছে এসব যাতে ফিরে পায় কিংবা তা সম্ভব না হলে, একটা ন্যায্য, যথাযথ ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায় তার প্রতিকার পাওয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রয়েছে। সবমিলিয়ে এই ঘোষণাপত্রে মোটাদাগে আদিবাসীরা যাতে মর্যাদার সাথে রাষ্ট্রের উন্নয়নে অংশীদার হয়ে তাদের জ্ঞান ও ঐতিহ্য রীতি নীতিকে পালনপূর্বক নির্বিঘেœ জীবনযাপন করতে পারে সেইসকল অধিকারের কথায় উঠে এসেছে।

উপরোক্ত অধিকারসমূহ দেওয়ার কথাতো অনেক দূরে। বাংলাদেশে আদিবাসী আছে কি নেই সেটা নিয়ে বিতর্ক জারির চেষ্টা আছে। সরকারও বিভিন্ন সময়ে এদেশে আদিবাসী নেই বলেই প্রচার করেছে এবং ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার ঠেকাতে রীতিমত নির্দেশনাও দিয়েছে। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো ১৯ এপ্রিল ২০০৬ তারিখের একটি চিঠিতে ‘আদিবাসী’ নয়, ‘উপজাতি’ শব্দটি লেখার অনুরোধ জানানো হয়। ২০১১ সনের মে-জুন মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইনমন্ত্রী বিভিন্ন আলোচনায় বারবার উল্লেখ করেছেন, কোনো অবস্থাতেই ‘আদিবাসী’ প্রত্যয়টি গ্রহণ করা যাবে না। একই বছরে আদিবাসী দিবসের প্রাক্কালে ৩০ জুন তারিখে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এদেশের আদিবাসীদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। পরের বছর ২০১২ সনে আন্তজার্তিক আদিবাসী দিবস পালন না করার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সরকারের এসব ষড়যন্ত্র আদিবাসীরা মেনে নেয়নি। আজও প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।

আদিবাসী আত্মপরিচয় ও অধিকারের দাবিতে আজও আদিবাসীরা বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকে চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় ওয়াংঝা লিখেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে, ২২ জুন ১৯৭২ তারিখে, যখন বাংলাদেশ সরকার ILO Convention No. 107 on Indigenous and Tribal Populations অনুস্বাক্ষর বা অনুমোদন করে, তখন সরকার এটা বলেননি যে বাংলাদেশে tribal জনগোষ্ঠী রয়েছে কিন্তু indigenous নেই। জাতিসংঘের একজন বিশেষ প্রতিবেদক বা Special Rapporteur Jose R. Martinez Cobo কে বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিল যে দেশে আদিবাসীদের অবস্থান রয়েছে। Study On The Problem Of Discrimination Against Indigenous Populations শিরোনামের ঐ প্রতিবেদনের অনুচ্ছেদ ৬১ তে তিনি লিখেছেন: ‘In Bangladesh, the government states that the members of Tribal or Semi-Tribal populations are regarded as indigenous Òon account of their descent from the populations which are settled in specified geographical areas of the country.’। শুধু তাই নয় প্রতিবেদনের আরও একাধিক প্যারাতে বাংলাদেশের আদিবাসীদের উল্লেখ রয়েছে।” চাকমা রাজা আরো লিখেছেন, বাংলাদেশী আইন ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আদিবাসী বা এর প্রতিশব্দের ব্যাবহার দেখতে পাওয়া যায়। ইদানীংকালের কিছু বাংলাদেশী আইন যেখানে আদিবাসী, indigenous বা aboriginal শব্দ রয়েছে: Chittagong Hill Tracts Regulation 1900 (Rules 4, 6), State Acquisition and Tenancy Act 1950 (section 97), Finance Act 1995 (para 27), ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন ২০১০ [ধারা ২(২)]। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিম্নলিখিত মামলার রায়েও পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীদের উল্লেখ করে “indigenous” শব্দটি আছে: Sampriti Chakma v. Commissioner of Customs & Others, BLC, Vol. 5 (2000); Wagachara Tea Estate Ltd v. Md. Abu Taher & Others, 36 BLD (AD), 36 (2016).

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আদিবাসী দিবসে বাণী দিয়ে বলেছিলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করা হবে।’ ২০০৮ সালে তাঁর দল অর্থাৎ আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও আদিবাসী শব্দটির ব্যবহার করে সমতলের আদিবাসীদের ভূমি কমিশন গঠন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছিল। আওয়ামী নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসলেও তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কোন মাথাব্যাথা ছিলনা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলটি আবারো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে একইরকম প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তবে এখানে যে পরিবর্তনটি ছিল তা হলো পূর্বের ইশতেহারে যেখানে যেখানে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার ছিল সেগুলোকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী করে দেওয়া হয়েছে। এই হলো তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চিত্র। আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য ২০১০ সালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন সংসদে পাশ করে সেখানে মাত্র ২৭টি আদিবাসী জাতির নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকার আবারো বেশকিছু আদিবাসীদের বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়। এখানে যেসব আদিবাসীদের নাম বাদ পড়ে যায় তারা বিভিন্ন সময়ে সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণে নানা রকম বিড়ম্বনায় পড়ে যায়। আদিবাসীরা বারবার দাবি করলেও আজ অবধি তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এভাবেই এদেশে আদিবাসীদের আত্মপরিচয়কে ভূলুন্ঠিত করে, আদিবাসী উন্নয়নের নামে লোকদেখানো তামাশা জারি রয়েছে।

২০০৫ সালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি আদিবাসী সনদ পেয়েছিলাম। সেই সনদটি এখনো যত্নসহকারে রেখে দিয়েছি। সেখানে লেখা আছে মানিক সরেন…সাঁওতাল সম্প্রদায়ভুক্ত একজন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীভূক্ত। খোঁজ নিয়ে দেখেছি এখন যারা রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আদিবাসী সনদের জন্য আবেদন করেন তাদের সনদে আর আদিবাসী শব্দটি লেখা থাকেনা। আদিবাসী শব্দের পরিবর্তে এখন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শব্দটি শোভা পায়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক একটি জরিপের তথ্য থেকে জানতে পারি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে ১১২৬টি আদিবাসী পরিবার দেশান্তরিত হয়ে গেছে। এরমধ্যে বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা পরিবারও নাকি আছে। তাহলে কি যেভাবে জেলা প্রশাসকের সনদ থেকে আদিবাসী শব্দটি হারিয়ে গেছে অদূর ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীরাই এদেশ থেকে হারিয়ে যাবে নাতো! রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতরা যদি দ্রুত তাদের বোধ উপলব্দি করেন এবং জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দেন তাহলে হয়তো আদিবাসীদের এই হারিয়ে যাওয়া বন্ধ হবে ও আদিবাসীদের প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মুক্ত হবে। আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। বিশ্বের ৪০ কোটি আদিবাসীর সাথে বাংলাদেশের ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসীরাও দিনটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। প্রতিবছর জাতিসংঘ এই দিনটিকে ঘিরে আদিবাসী অধিকার সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণের জন্য প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে থাকে। এবছর আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রের এক দশক (The 10th Anniversary of the UN Declaration on the Rights of Indigenous Peoples)। বিশ্বব্যাপি আদিবাসীদের অব্যাহতি আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আদিবাসী ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হয়েছিল। এরপর নৈতিকভাবেই জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এই ঘোষণাপত্রটি বাস্তবায়নে দায়বদ্ধ থাকলেও বাংলাদেশ কখনই এটি বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেইনি। বরং রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। তাহলে উত্তরবঙ্গ তথা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বসবাসরত সাঁওতাল, উরাও, মালো, মাহাতো, ডালু, কডা, কোল, ভীল, গঞ্জু (সিং), গড়াইত, রাজোয়াড়, ভূঁইমালী, মালপাহাড়ী, কন্দ, কর্মকার, কোচ, তেলি, তুরি, বড়াইক, বর্মন, বাগদী, ভূমিজ, মাহালী, মুন্ডা, মুশহর, রবিদাস, রাজবংশী, লোহার ইত্যাদি জাতিরা কারা? সিলেট- ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল অঞ্চলে বসবাসরত গারো, খাসি, বানাই, হাজং, হদি ও উপকূল অঞ্চলের রাখাইন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চগ্যা, বম, পাংখোয়া, চাক, খিয়াং, খুমি, লুসাই ইত্যাদি জাতিরা কারা? প্রশ্নাতীতভাবে রাষ্ট্র ৪৬ বছর ধরে অস্বীকার করে যাচ্ছে বাংলাদেশে বসবাসরত ৫৪টির অধিক আদিবাসী জাতিদের আত্মপরিচয়। এই অস্বীকার কি আদিবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের নিপীড়ণ নয়?

আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রটি আদিবাসীদের অধিকারের আন্তর্জাতিক একটি দলিল। ঘোষণাপত্রের বর্ণিত ৪৬টি অনুচ্ছেদে আদিবাসীদের মৌলিক মানবাধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার, ভূমি, অঞ্চল বা টেরিটরি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পূর্ণ অধিকার, ভূমির উপর ব্যক্তিগত ও সমষ্টিক মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ, আদিবাসীদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, শিক্ষাসহ নিজস্ব ভাষা ও জীবনধারা সংরক্ষণের স্বীকৃতি দিয়েছে। ঘোষণাপত্রের ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার রয়েছে এবং এই অধিকারের বলে তারা স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নির্ণয় করতে পারে এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে। অনুচ্ছেদ-১০ এ বলা হয়েছে- আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূমি কিংবা ভূখন্ড থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে উৎখাত করা যাবে না। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের স্বাধীন ও পূর্ববহিত সম্মতি ছাড়া কোনভাবে অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা যাবে না এবং ন্যায্য ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে সমঝোতা সাপেক্ষে স্থানান্তর করা হলেও, যদি কোন সুযোগ থাকে, পুনরায় তাদেরকে স্ব-এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা থাকতে হবে। অনুচ্ছেদ-১৬ (১) এ বলা হয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করার অধিকার এবং কোনরূপ বৈষম্য ব্যতীত অ- আদিবাসী জনগোষ্ঠী কর্তৃক পরিচালিত সকল প্রকার গণ মাধ্যমে প্রবেশাধিকার রয়েছে। অনুচ্ছেদ-২২ (২) তে বলা হয়েছে আদিবাসী নারী ও শিশুরা যাতে সকল প্রকার সহিংসতা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা পায় ও তা নিশ্চয়তার সাথে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করে তার নিশ্চিত করার জন্য, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে রাষ্ট্র যৌথভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ঘোষণাপত্রের ২৬ ধারায় বলা হয়েছে, যে সব ভূমি, এলাকা ও প্রাকৃতিক সম্পদ আদিবাসীরা বংশপরম্পরায় ঐতিহ্যগতভাবে ভোগদখল করে আসছে বা কোনরকম ব্যবহার করে আসছে, তার উপর আদিবাসীদের অধিকার রয়েছে। আবার বলা হয়েছে, রাষ্ট্র এই সব ভূমি, অঞ্চল ও সম্পদের আইনগত স্বীকৃতি প্রদান করবে এবং এ ধরনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে আদিবাসীদের রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও ভূমি মালিকানা প্রথাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে। অনুচ্ছেদ ২৮ এ বলা হয়েছে, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ যা তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলকৃত বা ব্যবহারকৃত, এবং যা তাদের স্বাধীন ও পূর্ব সম্মতি ছাড়া বেদখল, ছিনতাই, দখল বা ক্ষতিপূরণ করা হয়েছে এসব যাতে ফিরে পায় কিংবা তা সম্ভব না হলে, একটা ন্যায্য, যথাযথ ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায় তার প্রতিকার পাওয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রয়েছে। সবমিলিয়ে এই ঘোষণাপত্রে মোটাদাগে আদিবাসীরা যাতে মর্যাদার সাথে রাষ্ট্রের উন্নয়নে অংশীদার হয়ে তাদের জ্ঞান ও ঐতিহ্য রীতি নীতিকে পালনপূর্বক নির্বিঘেœ জীবনযাপন করতে পারে সেইসকল অধিকারের কথায় উঠে এসেছে।

উপরোক্ত অধিকারসমূহ দেওয়ার কথাতো অনেক দূরে। বাংলাদেশে আদিবাসী আছে কি নেই সেটা নিয়ে বিতর্ক জারির চেষ্টা আছে। সরকারও বিভিন্ন সময়ে এদেশে আদিবাসী নেই বলেই প্রচার করেছে এবং ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার ঠেকাতে রীতিমত নির্দেশনাও দিয়েছে। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো ১৯ এপ্রিল ২০০৬ তারিখের একটি চিঠিতে ‘আদিবাসী’ নয়, ‘উপজাতি’ শব্দটি লেখার অনুরোধ জানানো হয়। ২০১১ সনের মে-জুন মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইনমন্ত্রী বিভিন্ন আলোচনায় বারবার উল্লেখ করেছেন, কোনো অবস্থাতেই ‘আদিবাসী’ প্রত্যয়টি গ্রহণ করা যাবে না। একই বছরে আদিবাসী দিবসের প্রাক্কালে ৩০ জুন তারিখে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এদেশের আদিবাসীদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। পরের বছর ২০১২ সনে আন্তজার্তিক আদিবাসী দিবস পালন না করার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সরকারের এসব ষড়যন্ত্র আদিবাসীরা মেনে নেয়নি। আজও প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।

আদিবাসী আত্মপরিচয় ও অধিকারের দাবিতে আজও আদিবাসীরা বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকে চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় ওয়াংঝা লিখেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে, ২২ জুন ১৯৭২ তারিখে, যখন বাংলাদেশ সরকার ILO Convention No. 107 on Indigenous and Tribal Populations অনুস্বাক্ষর বা অনুমোদন করে, তখন সরকার এটা বলেননি যে বাংলাদেশে tribal জনগোষ্ঠী রয়েছে কিন্তু indigenous নেই। জাতিসংঘের একজন বিশেষ প্রতিবেদক বা Special Rapporteur Jose R. Martinez Cobo কে বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিল যে দেশে আদিবাসীদের অবস্থান রয়েছে। Study On The Problem Of Discrimination Against Indigenous Populations শিরোনামের ঐ প্রতিবেদনের অনুচ্ছেদ ৬১ তে তিনি লিখেছেন: ‘In Bangladesh, the government states that the members of Tribal or Semi-Tribal populations are regarded as indigenous Òon account of their descent from the populations which are settled in specified geographical areas of the country.’। শুধু তাই নয় প্রতিবেদনের আরও একাধিক প্যারাতে বাংলাদেশের আদিবাসীদের উল্লেখ রয়েছে।” চাকমা রাজা আরো লিখেছেন, বাংলাদেশী আইন ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আদিবাসী বা এর প্রতিশব্দের ব্যাবহার দেখতে পাওয়া যায়। ইদানীংকালের কিছু বাংলাদেশী আইন যেখানে আদিবাসী, indigenous বা aboriginal শব্দ রয়েছে: Chittagong Hill Tracts Regulation 1900 (Rules 4, 6), State Acquisition and Tenancy Act 1950 (section 97), Finance Act 1995 (para 27), ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন ২০১০ [ধারা ২(২)]। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিম্নলিখিত মামলার রায়েও পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীদের উল্লেখ করে “indigenous” শব্দটি আছে: Sampriti Chakma v. Commissioner of Customs & Others, BLC, Vol. 5 (2000); Wagachara Tea Estate Ltd v. Md. Abu Taher & Others, 36 BLD (AD), 36 (2016).

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আদিবাসী দিবসে বাণী দিয়ে বলেছিলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করা হবে।’ ২০০৮ সালে তাঁর দল অর্থাৎ আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও আদিবাসী শব্দটির ব্যবহার করে সমতলের আদিবাসীদের ভূমি কমিশন গঠন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছিল। আওয়ামী নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসলেও তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কোন মাথাব্যাথা ছিলনা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলটি আবারো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে একইরকম প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তবে এখানে যে পরিবর্তনটি ছিল তা হলো পূর্বের ইশতেহারে যেখানে যেখানে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার ছিল সেগুলোকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী করে দেওয়া হয়েছে। এই হলো তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চিত্র। আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য ২০১০ সালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন সংসদে পাশ করে সেখানে মাত্র ২৭টি আদিবাসী জাতির নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকার আবারো বেশকিছু আদিবাসীদের বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়। এখানে যেসব আদিবাসীদের নাম বাদ পড়ে যায় তারা বিভিন্ন সময়ে সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণে নানা রকম বিড়ম্বনায় পড়ে যায়। আদিবাসীরা বারবার দাবি করলেও আজ অবধি তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এভাবেই এদেশে আদিবাসীদের আত্মপরিচয়কে ভূলুন্ঠিত করে, আদিবাসী উন্নয়নের নামে লোকদেখানো তামাশা জারি রয়েছে।

২০০৫ সালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি আদিবাসী সনদ পেয়েছিলাম। সেই সনদটি এখনো যত্নসহকারে রেখে দিয়েছি। সেখানে লেখা আছে মানিক সরেন…সাঁওতাল সম্প্রদায়ভুক্ত একজন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীভূক্ত। খোঁজ নিয়ে দেখেছি এখন যারা রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আদিবাসী সনদের জন্য আবেদন করেন তাদের সনদে আর আদিবাসী শব্দটি লেখা থাকেনা। আদিবাসী শব্দের পরিবর্তে এখন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শব্দটি শোভা পায়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক একটি জরিপের তথ্য থেকে জানতে পারি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে ১১২৬টি আদিবাসী পরিবার দেশান্তরিত হয়ে গেছে। এরমধ্যে বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা পরিবারও নাকি আছে। তাহলে কি যেভাবে জেলা প্রশাসকের সনদ থেকে আদিবাসী শব্দটি হারিয়ে গেছে অদূর ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীরাই এদেশ থেকে হারিয়ে যাবে নাতো! রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতরা যদি দ্রুত তাদের বোধ উপলব্দি করেন এবং জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দেন তাহলে হয়তো আদিবাসীদের এই হারিয়ে যাওয়া বন্ধ হবে ও আদিবাসীদের প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মুক্ত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৪
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×