বিষয়: হড় বিয়ের হালচাল-প্রথম কিস্তি
------------------------------
আপনাদের মেয়েকে আমাদের বেশ পছন্দ হয়েছে। আমরা তাকে পুত্রবধু করতে চাই যদি আপনাদের কোন আপত্তি না থাকে। কয়েকদিন সময় নিয়েই জানান, অসুবিধা নেই।
-ক্রিং ক্রিং ক্রিং.........
হ্যালো হ্যালো কে বলছেন?
-আমি ভেলেন্তিনার মা বলছি।
ও আচ্ছা। কেমন আছেন? তা কি খবর? আমাদের ছেলেকে কি পছন্দ হলো?
-পছন্দতো হয়েছে কিন্তু একটা সমস্যা আছে।
কি সমস্যা?
-কিভাবে বলি আপনাকে, আপনাদের পরিবার ছেলে বাড়ি-ঘর সবকিছুই আমাদের পছন্দ হয়েছে কিন্তু কিছু মনে করবেন না আমাদের মেয়েকে আপনারা নিয়ে চলে যান আর ওখানেই বিয়ের সমস্ত কাজ করেন।
কি বলেন এসব? এভাবে কি বিয়ে হয় নাকি? আমার ছেলের বউকে আমি ধুমধাম করে বিয়ে দিব ভেবেছি, কত স্বপ্ন আছে ছেলের বিয়ে নিয়ে। না না না এভাবে চুপিচুপি করে আমার ছেলেকে কখনই আমি বিয়ে দিবনা।
আচ্ছা কি সমস্যা হয়েছে সেটা আপনি বলবেনতো?
-আসলে গ্রামের লোকেরা এই বিয়েতে যোগ দিবেনা।
কেন কেন? কেন যোগ দিবেনা?
-আপনারাতো খ্রিস্টান না। আমরা ঘটকের কাছ থেকে শুনেছি আপনারা চার্চে গিয়ে ছেলেক বিয়েও দিবেননা। আর আপনারা চার্চে গিয়ে বিয়ে না করলে গ্রামের লোকজন আসবেনা। তাইতো বলছিলাম মেয়েকে নিয়ে আপনারা চলে যান আর আপনাদের বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠান করেন। এতে আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা। আমরা শুধু মেয়ের মঙ্গল চাই। আর কিছুনা।
আচ্ছা ঠিক আছে বিষয়টি আমি আমার ছেলে স্বামীর সাথে কথা বলে দেখি। আপনাকে ফোন করে যতদ্রুত সম্ভব জানাবো।
পরেরদিনই ছেলের মা মুক্তির মায়ের কাছে ফোন করে বলে বিয়েতে হড়দের অনেক কৃষ্টি পালন করা হয়। আমরা শিক্ষিত হয়ে যদি আমাদের আদি ঐতিহ্য ধরে না রেখে দাউড়ার বদলে চার্চে বিয়ে করি তাহলে হড় জাতির সংস্কৃতি বিলীন হতে সময় লাগবেনা। আপনাদের উচিত হড় বিয়ের রীতিনীতি অনুযায়ি মেয়েকে বিয়ে দেওয়া।
-হুমম সেটাতো ঠিকই বলেছেন। কিন্তু সমাজকে কে বোঝাবে? আমাদের গ্রামে সবাই খ্রিস্টান। কেউ বুঝতে চাইবেনা। ফাদার যা বলবে তাই করতে হবে। নাহলে জোর করে বিয়ে দিলেও পরে আমাদের একঘরে করে দিবে। আচ্ছা তারপরেও আরো একবার গ্রামের লোকজন মাঞ্জহি হাড়ামের সাথে কথা বলে দেখি। আমি আপনাকে এক সপ্তাহের মধ্যে জানাবো।
ঠিক আছে যতদ্রুত পারেন আমাদের জানাবেন।
-এইভাবে ৬ মাস চলে যায়। ছেলের পরিবার এখনো অপেক্ষায় আছে কখন ফোন আসবে।
চলবে.............
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১৬