সালঃ ১৯৬৩
পরিচালকঃ জন ষ্টুর্গেস
অভিনয়ঃ ষ্টিভ ম্যাককুইন, জেমস গার্নার, রিচার্ড অ্যাটেনবোরো
ট্যাগলাইনঃ The Great Adventure! The Great Entertainment!
কিছু কথাঃ পল ব্রিকহিল এর লেখা ‘দ্যা গ্রেট এস্কেপ’নামক বই অনুসরণে এই মুভিটি নির্মান করা হয়। এটি কোন কাল্পনিক কাহিনী নয়, পুরোটাই সত্য ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানীর ‘ষ্ট্যালাগ লাফট ৩’ বন্দিশিবির থেকে ৭৬ জন বন্দীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে মুভিটিতে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের আবার ধরে আনার কাজেই জার্মান সৈনিকদের একটা বড় অংশকে ব্যাস্ত থাকতে হত। তাই জার্মানরা এমন একটা ক্যাম্প তৈরি করতে চাইল যেখান থেকে পালানো হবে অসম্ভব। এই লক্ষ্যেই তৈরী করা হয় এই ‘ষ্ট্যালাগ লাফট ৩’ ক্যাম্প।
বন্দীদের এখানে নিয়ে আসার প্রথম দিনেই কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু বিফল হয়। ক্যাপ্টেন ভার্জিল হিল্টস বেশ কয়েকবার পালানোর চেষ্টা করে এবং তাকে বেশ লম্বা একটা সময় এজন্য কুলারে কাটাতে হয়। স্কোয়াড্রন লীডার বার্নেটকে ক্যাম্পে নিয়ে আসার পরে সবাই মিলে একটা সংগঠিত পরিকল্পনা করা হয়। তারা তিনটা টানেল খোঁড়ার কাজ শুরু করে যাদের নাম দেওয়া হয় টম, ডিক এবং হ্যারি। ২৫০ জনের পালিয়ে যাবার পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নানান সমস্যায় পালাতে সক্ষম হয় ৭৬ জন। এরপর একেকজন আলাদা আলাদাভাবে পালানোর চেষ্টা করে। কেউ ট্রেনে, কেউ নৌকায়, কেউ মোটরসাইকেলে কেউবা আবার সাইকেলে।
মুভিটির অনেক কিছুই ভাল লেগেছে। বিশেষ করে রিচার্ড অ্যাটেনবোরোর দারুণ অভিনয় আর ষ্টিভ ম্যাককুইনের নিজের করা চোখধাঁধানো মোটরসাইকেল ষ্টান্ট এর কথা না বললেই নয়। অনেকে মনে করেন যে তারকাটার বেড়ার উপর দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে লাফ দেওয়াটা ষ্টিভ ম্যাককুইনের নিজের ষ্টান্ট করা, কিন্তু সেটা ভুল ধারণা। ষ্টান্টটি করেছিলেন তার বন্ধু বাড একিন্স।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট
প্যাপিয়ন
সালঃ ১৯৭৩
পরিচালকঃ ফ্র্যাঙ্কলিন জে. স্কাফনার
অভিনয়ঃ ষ্টিভ ম্যাককুইন, জাষ্টিন হফ্ম্যান
ট্যাগলাইনঃ The Great Adventue of Escape is Back
কিছু কথাঃ এই মুভিটি নির্মাণ করা হয়েছে হেনরী চ্যারিয়ের এর লেখা বহুলবিক্রিত অটোবায়োগ্রাফিক্যাল বই ‘প্যাপিয়ন’ এর কাহিনী অনুসারে। এই বইয়ে বর্ণিত ঘটনাগুলি লেখকের নিজের অভিজ্ঞতা নাকি অন্য কারো এটা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। লেখকের মতে তার কিছু স্মৃতিভ্রম ছাড়া এই বইয়ের পুরোটাই তার নিজের জীবনের বাস্তব ঘটনা। কিন্তু কিছু গবেষকদের মতে এটি তার সঙ্গের অন্যান্য বন্দীদের নানান কাহিনী এবং জেলে থাকাকালে শোনা নানান গল্প একত্র করে লেখা একটি বই।
‘প্যাপিয়ন’ হল একটি ফ্রেঞ্চ শব্দ। এর অর্থ হল ‘প্রজাপতি’। হেনরী চ্যারিয়ের এর বুকে অংকিত প্রজাপতির উল্কি থেকেই এই নামকরণ। খুনের আসামী হিসেবে প্যাপিয়নকে যাবতজীবন কারাদন্ড দিয়ে পাঠানো হয় ফ্রেঞ্চ গায়ানার ডেভিলস আইল্যান্ডে। এখানে তার সাথে পরিচয় হয় আরেক আসামী লুইস ভেগার সাথে। বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এদের দুইজনের বন্ধুত্বটি মুভির একটা দিক। আরেকদিকে প্যাপিয়ন বারবার পালানোর ব্যার্থ চেষ্টা করতে থাকে এবং প্রতিবার ধরা পড়ার সাথে সাথে তার শাস্তির পরিমাণ বাড়তে থাকে, ছোট্ট একটি সেলে একাকী কাটাতে হয় লম্বা সময়। কিন্তু এতকিছুর পরেও প্যাপিয়ন হতাশ হয় না, মুক্ত জীবনের স্বপ্ন সে ছাড়ে না।
মুভির ব্যাপারে প্রথম যেটা বলার সেটা হল, এই মুভিতে প্যাপিলনের ভূমিকায় ষ্টিভ ম্যাককুইনের অভিনয়শৈলীকে ঠিক কোন শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব সেটা আমার ঠিক জানা নেই। আমি হিপনোটাইজড হয়ে গেছি ষ্টিভ ম্যাককুইনের অভিনয় দেখে। আর বিপরীত দিকে জাষ্টিন হফ্ম্যানও সমানে সমান। মাঝে মাঝে এমন লেগেছে যে এই দুইজনের মধ্যে ভাল অভিনয় করার একটা ঠান্ডা প্রতিযোগীতা চলছে। এই মুভিতেও ম্যাককুইন ষ্টান্ট করতে ছাড়েননি, মুভির শেষাংশে ক্লিফ থেকে লাফ দিয়ে পড়ার দৃশ্যটি তার নিজের অভিনয় করা।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট
এস্কেপ ফ্রম অ্যালকাট্রাজ
সালঃ ১৯৭৯
পরিচালকঃ ডন সিগেল
অভিনয়ঃ ক্লিন্ট ইষ্টউড, প্যাট্রিক ম্যাকগোহান
ট্যাগলাইনঃ No one has ever escaped Alcatraz…and no one ever will
কিছু কথাঃ অ্যালকাট্রাজ হল সান ফ্রান্সিসকো বে’র একটা দ্বীপ। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার যার দূরত্ব। ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এটা ব্যবহার করা হয়েছিল ফেডারেল প্রিজন হিসেবে। যে ঘটনা এই মুভিতে দেখান হয়েছে সেটাই অ্যালকাট্রাজ থেকে সফলভাবে পালানোর একমাত্র প্রচেষ্টা।
ফ্র্যাঙ্ক মরিসকে পাঠান হল অ্যালকাট্রাজ প্রিজনে। এর আগে বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যাবার ইতিহাস আছে মরিসের। প্রিজন ওয়ার্ডেন তাকে বলে যে, এখান থেকে কেউ পালাতে পারেনা। যারা চেষ্টা করে তারা হয় গুলিতে মারা যায় অথবা সমুদ্রে ডুবে। প্রিজনে মরিসের দেখা হয় তার পূর্বপরিচিত দুই ভাই জন এবং ক্লারেন্স অ্যাংলিন এর সাথে। তারা তিনজন মিলে পালানোর প্রস্তুতি নেয়। তাদের সাথে যোগ দেয় মরিসের পাশের সেলের কয়েদি চার্লি বাটস্। তারা সিদ্ধান্ত নেয় সান ফ্রান্সিসকোর দিকে না গিয়ে অ্যাঞ্জেল দ্বীপের দিকে যাওয়ার।
ক্লিন্ট ইষ্টউড বরাবরের মতই দূর্দান্ত। আর এই মুভিটা দেখার সাথে সাথে অ্যালকাট্রাজ দ্বীপের ব্যাপারে অনেক কিছু জানলাম।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট
কন এয়ার
সালঃ ১৯৯৭
পরিচালকঃ সাইমন ওয়েষ্ট
অভিনয়ঃ নিকোলাস কেজ, জন কুসাক
ট্যাগলাইনঃ They were deadly on the ground, now they have wings
কিছু কথাঃ যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরে এসেছে আর্মি রেঞ্জার ক্যামেরুন পো। একই সাথে আনন্দ যে সে বাবা হতে চলেছে। ক্লাবে কিছু লোক তার স্ত্রীকে উত্যক্ত করতে এলে স্ত্রীর অনুরোধে সে নিরস্ত হয়। কিন্তু সেদিন রাতেই পার্কিং এ তারা আবার ফিরে এলে পো প্রতিবাদ করে। পো’র আঘাতে মারা যায় একজন আর এজন্য তাকে যেতে হয় জেলেতে। আট বছর পর তার মুক্তির সময় আসে। এর মাঝে তার মেয়েও বেশ বড় হয়ে ওঠে। পো তার স্ত্রী আর মেয়েকে দেখার জন্য উদগ্রীব। আরও বেশ কিছু কয়েদীর সাথে তাকে তুলে দেওয়া হয় অ্যালবামাগামী একটি বিশেষ প্নেনে, যেটা ব্যাবহার করা হয় কয়েদীদের বহন করার কাজে। সেখানে পৌঁছেই মিলবে মুক্তি, প্রথমবারের মত তার দেখা হবে তার মেয়ের সাথে। কিন্তু প্লেনটি উড়তে শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই কিছু কয়েদী মিলে প্লেনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। স্ত্রী-সন্তানের সাথে পো’র দেখা করাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
অন্য প্রিজন ব্রেক মুভিগুলোর সাথে এটার পার্থক্য হল এই মুভির প্রোটোগনিস্ট প্রিজন ব্রেক করার চেষ্টা করছে না। এই হিসেবে এটাকে এ্যাকশন মুভিও বলা যায়। তবে পরিবারের বিপরীতে একজন রেঞ্জারের শপথ রক্ষার যে চিত্র দেখা সেটা অসাধারণ।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট
দ্যা এস্কেপিষ্ট
সালঃ ২০০৮
পরিচালকঃ রুপার্ট হুয়াইট
অভিনয়ঃ ব্রায়ান কক্স, জোসেফ ফিয়েন্স, লিয়াম কানিংহাম, সিও জর্জ, ডমিনিক কুপার
ট্যাগলাইনঃ 5 MEN. 4 WALLS. 1 PLAN
কিছু কথাঃ ফ্র্যাঙ্ক পেরি যাবতজীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। গত ১৪ বছরে তার কাছে কোন চিঠি আসেনি, তার সাথে কেউ দেখা করতেও আসেনি। তার স্মৃতি বলতে শুধু তার মেয়ের ছেলেবেলার একটা ছবি যার বয়স এখন প্রায় ২১ বছর। একদিন হঠাৎ তার কাছে একটা চিঠি আসে যেখান থেকে সে জানতে পারে যে মাদক গ্রহণের ফলে তার মেয়ে এখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। তখনই সে পালানোর কথা ভাবতে শুরু করে কারণ সে তার মেয়ের সাথে শেষবারের মত একবার দেখা করতে চায়। তার পরিকল্পনাতে যোগ দেয় আরও কয়েকজন। কিন্তু কিছু প্রভাবশালী কয়েদির মাথা গলানোতে পন্ড হতে চলে সবকিছু।
এটা একটি আইরিস-ইউকে কো-প্রোডাকশন ফিল্ম। প্রথম যেটা বলতে হয় সেটা হল প্রিজন ব্রেক মুভি হিসেবে এটার সিনেমাটোগ্রাফি ভিন্ন ধরণের। দুই’টা পাশাপাশি চলমান ঘটনা দিয়ে তাদের পরিকল্পনা আর তার বাস্তবায়ন দেখান হয়েছে। ফ্র্যাঙ্ক পেরি’র চরিত্রটি ব্রায়ান কক্স এর জন্য বিশেষভাবে লেখা হয়েছিল তার চরিত্র রূপায়নটাও তিনি করেছেন অসাধারন দক্ষতার সাথে। এই মুভির ব্যাপারে রেডিও ওয়ানের জেমস কিং এর মতামতঃ ‘ফিল্ম মেকিং এ্যাট ইটস ফাইনেষ্ট। দ্যা এস্কেপিষ্ট টেকস্ দ্যা প্রিজন ব্রেক মুভি টু এ নিউ লেভেল’।
ডাউনলোড লিঙ্কঃ টরেন্ট
আশা করছি মুভিগুলো আপনাদেরও ভাল লাগবে।
১ম কিস্তি দেখতে চাইলেঃ ভাললাগা ৫টা প্রিজন ব্রেক মুভিঃ ব্রেসো থেকে বর্তমান
২৪শে নভেম্বর, ২০১১, ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৯