somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবু বকর ছিদ্দিক মনছুর এর অকাল মৃত্যু ঃ এ শূণ্যতা পূরণ হবার নয়

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবদুল্লাহ আল-মামুন
ঐতিহ্যবাহী সোনাগাজী আল-হেলাল একাডেমীর অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক পরিষদ ফেনী জেলা শাখার সেক্রেটারী জনপ্রিয় শিক্ষক আবু বকর ছিদ্দিক আর নেই। ২৫ জুলাই বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় তাঁর ফেনীর বাসায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
১৯৬৮ সালের ০১ জুন। এক শীতের রাতে ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার ওমরাবাদ গ্রামে আবু বকর ছিদ্দিকের জন্ম। ডাক নাম মনছুর। বাবা আবদুস সাত্তার ও মা হারিছা বেগমের প্রথম সন্তান তিনি।

বাবা আবদুস সাত্তার বাংলাদেশ রেলওয়ে চাকুরী করতেন, আর মা ছিলেন গৃহিণী। ছয় ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিজান তাঁর দ্বিতীয় ভাই। তৃতীয় ভাই সাংবাদিক সেলিম রেজা বর্তমানে বীমা পেশায় চাকুরীরত, অপর ভাই মোঃ শাহীন বীমা কর্মকর্তা, পঞ্চম ভাই ফখরুল ইসলাম শিপন দক্ষিণ অফ্রিকা প্রবাসী, সবার ছোট ভাই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আমিরুল ইসলাম গার্ডিয়ান হাউজিং এর পরিচালক, একমাত্র বোন নাছিমা আক্তারের স্বামী সৌদি প্রবাসী।
আবু বকর ছিদ্দিকের শৈশবের প্রথম অধ্যায়টি যতটা স্নেহ ও মমতায় কেটেছে, দ্বিতীয় অধ্যায়টি কেটেছে অনেক কষ্টের ভেতর দিয়ে। কারণ সংসারের বড় হয়ে পিতার সামান্য রোজগারে নিদারুন কষ্ট নিয়ে বড় হয়েছেন তিনি। অপর ৬ ভাই বোনের কথা ভেবেই অনেক কষ্ট করেছেন বড় ভাই মনছুর।

প্রাইমারি স্কুল পাসের পর এই আবু বকর বদলে যান। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে স্কুলের প্রতি তাঁর আগ্রহ বাড়তে থাকে। আগ্রহটা এমনই ছিল যে এসএসসি পরীক্ষার ভাল ফল লাভ করেছেন। ১৯৮৩ সালে ধলিয়া হাই স্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন। ফেনী সরকারী কলেজ থেকে ১৯৮৬ সালে তিনি এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ফেনী শাহীন একাডেমীতে খন্ডকালীন শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি পড়ালেখা চালিয়ে তিনি ১৯৯০ সালে ডিগ্রি পাশ করেন। এরপর ভর্তি হন ফেনী বিএড কলেজে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে তিনি দাগনভূঞা একাডেমীর অধ্য হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি থেকে মাষ্টার্স ডিগ্রি নেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সোনাগাজী আল হেলাল একাডেমীর জনপ্রিয় অধ্যক্ষ ও উন্মক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনাগাজী উপজেলা কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। ১৯৯৪ সালে ছাগলনাইয়া উপজেলার মাওলানা রুহুল আমিনের মেয়ে সাজেদা আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আবু বকর ছিদ্দিক। আবু বকর এবং সাজেদা দম্পতির ৪ মেয়ে ও ২ছেলে। উলেখ্য মরহুম আবু বকর ছিদ্দিকের শশুর মরহুম মাওলানা রুহুল আমিন মৃত্যুর পূর্ব সময় পর্যন্ত চট্রগ্রাম কলেজিয়েট হাই স্কুলের হেড মাওলানা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

একজন পেশাদার শিক্ষক হিসেবে আবু বকর ছিদ্দিক ছিলেন অসাধারন জনপ্রিয়। মেধা, বুদ্ধি ও সাংগঠনিক যোগ্যতার কারণে অল্প সময়ে তিনি ফেনী জেলা আদর্শ শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাছাড়া তিনি ওমরাবাদ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক, গজারিয়া আদর্শ একাডেমীর সহ-সভাপতি, ওমরাবাদ পঞ্চায়েত কমিটি, গজারিয়া তাওহিদ পাঠাগার, গজারিয়া ঈদগাহ ময়দান কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন।

সদালাপি ও হাস্যজ্জ্বল আবু বকর ছিদ্দিক মনছুেরর জীবন-যাপন ছিল খুবই সাধারন। ইংরেজি শিতি হয়েও তিনি ছোটকাল থেকেই ছিলেন ইসলামের বাস্তব অনুসারী। নিষ্কুলস চরিত্রের অধিকারী মনছুরের সমস্ত জীবন ছিল আমানতদারী, সদ্ব্যবহার, মানুষের বিপদে আপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পরের উপকার করাই ছিল তার জীবনের ব্রত। তিনি তার সীমিত আয় থেকে গরীব এতিমদের সাধ্যমত দান করতেন। তিনি কখনো তার দুঃখ-কষ্ট এবং অভাব-অভিযোগের কথা কাউকে বলতেন না। সত্যিকার অর্থেই তিনি আবু বকর ছিদ্দিক নামের সার্থকতা বের করেছিলেন। তিনি ছিলেন আতœ প্রচার বিমুখ। তার মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগের একটি দানের উদাহরণ না দিলে নয়। ইফতার শেষে নিজ গ্রামের রিক্্রাচালক শামছুল হক রেবধনের রিক্্রা করে বাড়ী থেকে সিলোনীয়া পর্যন্ত যান। পথে চলতে চলতে তার পরিবারের খোঁজ খবর নেন এবং তাকে ভাড়া পরিশোধ করে নিয়মিত ইফতারের জন্য রুহ আফজা শরবত, চিড়া, মুড়িসহ অনেক কিছু কিনে দেন। রাতেই মৃত্যুর খবর শুনে রেবধন বিলাপ করতে করতে লোকজনকে এ বিষয়ে জানায়।

২৫ জুলাই বুধবার স্কুলের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি নিজ বাড়ীতে গিয়ে ইফতার করেন এবং বাড়ীর সকলের সাথে কুশল বিনিময় শেষে ফেনী এসে তারাবিহ নামায পড়েন। তারাবির পর নিজ বাসায় গিয়ে দুই মেয়েকে নিজ হাতে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে দেন এরপর শরীর অস্থির লাগছে বলে গোসল করলেন। গোসল করে বের হওয়া মাত্রই তিনি বিছানায় ঢলে পড়লে তাৎনিক ফেনী আল কেমী হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আতœীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, দীর্ঘদিনের প্রাতিষ্ঠানিক ও রাজনৈতিক সহকর্মীসহ সকল মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।

মৃত্যুর পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ফেনী আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া মাদ্রাসা মাঠে তাঁর প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় মরহুমের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সোনাগাজতে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাযায় ইমামতি করেন আল হেলাল সোসাইটির সভাপতি এ.কে.এম নাযেম ওসমানী। দ্বিতীয় জানাজায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আলম, সোনাগাজী পৌর মেয়র জামাল উদ্দিন সেন্টু, পৌর প্যানেল মেয়র আবদুল মান্নান, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাইন উদ্দিন, সোনাগাজী প্রেস কাবের সভাপতি শেখ আবদুল হান্নানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন।
সর্বশেষ মরহুমের নিজ গ্রাম দাগনভূঁঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ওমরাবাদ জামে মসজিদ মাঠে অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁঞার ইমামতিতে তৃতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।


চারদিকে শোকাতুর মানুষের ভিড়ে প্রিয় মানুষ মনছুরকে চিরবিদায় জানাতে স্বজন-শুভাকাঙ্ী-ভক্তসহ সবার চোখ ছিল অশ্রুসজল। এমনি মর্মস্পর্শী আবেগঘন পরিবেশের মধ্যে ওমরাবাদ গ্রামের আমিন বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে শীতল ছায়ায় মাটির ঘরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নন্দিত এই শিক্ষাবিদ। বিপুল সংখ্যক মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও চোখের জলে স্যারকে খুব যতনে শুয়ে দেওয়া হয় মাটির ঘরে। অচিন দেশে, অচিন কোনো গাঁয়ে চিরদিনের জন্য তিনি চলে গেলেন মহান প্রভুর কাছে।

শোকে স্তব্ধ আল হেলাল একাডেমী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষক নেতা আবু বকর ছিদ্দিক মনছুরের প্রিয় আল হেলাল একাডেমী শোকে নিস্তব্ধ। সেখানকার ছাত্রছাত্রী এবং আশপাশের গ্রামবাসী সবাই শোকে স্তব্ধ। বিদ্যাপীঠে শোকের ছায়া। কাঁদছে শিক্ষার্থী-শিকসহ পুরো গ্রামের মানুষ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাঁধ ভাঙ্গ জোয়ারের মত ছাত্র জনতা স্কুল প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে। সেখানে সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। দল-মত নির্বিশেষে সকল পেশার মানুষের ঢল। সবাই বিমর্ষ, যেন তারা সবাই তাদের আপনজনকে হারিয়ে শোকাহত।
আল হেলাল একাডেমীর শিকরা জানান, ১৯৯৯ সালে তিনি এই একাডেমীতে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ সময়ে নিজ হাতে এখানকার পরিবেশ গড়ে তুলেছেন। সেখানকার শিক, ছাত্রছাত্রী, পিয়ন, বাবুর্চি তাঁরা কোনো মতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না আবু বকর ছিদ্দিক প্রিয় একাডেমীকে নিজ হাতে আর যতœ করবেন না। তারা জানান, শিক্ষক আবু বকর ছিদ্দিক তাঁদের পরম স্নেহ করতেন।
‘মনছুর স্যার আংগো প্রতিষ্ঠান ও গ্রামের অভিভাবক আছিল। স্যার চলে যাওয়ায় আংগো পরিবারের একটা লোক আরাইলাম।’ এ কথা বলতে বলতে তারা কেঁদে উঠলেন। মনছুর স্যারের অনুপস্থিতে সর্বত্র শূণ্যতা অনুভুত হচ্ছে। তবে ব্যক্তি আবু বকর ছিদ্দিক না থাকলেও কর্মের কারণে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর অন্তরে থাকবেন যুগ যুগ।

কাঁদছে মনছুরের ওমরাবাদ গ্রাম
মনছুরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর জন্মস্থান দাগনভূঞা উপজেলার ওমরাবাদ গ্রামে। যে গ্রামে তিনি হেটে খেলে বড় হয়েছেন। এখানকার মানুষের সাথে তার নাড়ীর সম্পর্ক। তার অকাল মৃত্যুর খবর যেন কারও বিশ্বাস হচ্ছিল না। কারণ ওই দিনই তিনি হঠাৎ নিজ বাড়ীতে গিয়ে ইফতার করে বাড়ীর সকলের সাথে কুশল বিনিময় করে ওমরাবাদ জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। তিনি ওমরাবাদ জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই দিনই তিনি মসজিদ কমিটির কোষাধ্য শফিকুর রহমানের সাথে কথা বলে জুমাবার কমিটির মিটিং আহবানের কথা বলে যান। আল্লাহর ইচ্ছাই অপার, মিটিং এর আগের দিন তিনি লাশ হয়ে ফিরলেন। ওমরাবাদ মসজিদ পূনঃ নির্মানে তার অবদান অসামান্য। প্রতিটি ইট, কাঠ, বালির সাথে মিশে আছে তার শ্রম। রাবেতা আল আলম আল-ইসলামী থেকে প্রাপ্ত অনুদানের টাকা যথাযথ ব্যবহারে সাধারণ সম্পাদক মনছুর ও কমিটির সহ-সম্পাদক শহীদ উল্ল্যা শহীদ, কোষাধ্য শফিকুর রহমানের অপরিসীম ভূমিকা অম্লান হয়ে থাকবে। কমিটির অপর সদস্যরাও আপ্রাণ সহযোগীতা করেছেন। মসজিদের উন্নয়ন ও কোন সমস্যা হলে সমাধানে তিনি ছিলেন অগ্রজ। তার অপরিসীম ভালোবাসার শেষ উদাহরণ লাশ বহনের খাটের জন্য যখন তেরপাল কেনার কথা হচ্ছিল তখন তিনি নিজেই তা কিনে দিয়েছিলেন মৃত্যুর কয়দিন আগে। আমাকে ওই মসজিদের সর্বকনিষ্ট সদস্য ও সহকারী কোষাধ্য হিসেবে তিনি যোগ করেছিলেন। আমি তখন মাত্র ফেনী কলেজে হিসাববিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হয়েছি। পড়ালেখার পাশাপাশি সামাজিক নানা কাজে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করে তিনি বলেছিলেন যুবকরাই সমাজকে এগিয়ে নেবে। হিসাব নিকাশের নানা কাজ আমাকে প্রাকর্টিক্যালি শিখিয়ে দেন। মসজিদের নোটিশ লেখা থেকে শুরু করে সভার কার্যবিবরনী লেখা ও আমাকে তিনি শিখিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আমার মহান শিক। গ্রামের বাড়ীতে এলে মসজিদে নামাজ পড়তে আসতেন তখন দেখা মাত্রই কুশলাদী জিজ্ঞেস করতেন সবসময় পড়ালেখার খবর নিতেন। নানা পরামর্শ দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে উদাহরণ দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিতেন। তিনি আমাকে সর্বশেষ পরামর্শ দিয়েছিলেন এমবিএ করার জন্য, আমি ওনার সে পরামর্শও কাজে লাগিয়েছি। ওমরাবাদ জামে মসজিদ নিয়ে ওনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্লান সত্যি আমাকে অবাক করেছিল। উনি ছিলেন দল মত নির্বিশেষে সকল মহলের নিকট গ্রহণযোগ্য ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তার জানাজায় সকল শ্রেণীর লোকের উপস্থিতি এবং যে আবেগ প্রকাশিত হয়েছে তাতেই বুঝা যায় তিনি সকল স্তরের মানুষের কাছে কতটুকু স্থান করতে পেরেছিলেন। এলাকায় তিনি কারও সাথে কোন দিন উচ্চ বাক্য বিনিময় করেছেন কেউ বলতে পারেনি। তাইতো স্বজন হারা এলাকাবাসীর কান্না আর আহজারীতে ওমরাবাদ গ্রামে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়, আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। জানাজায় পূর্ব সংক্ষপ্তি আলোচনায় যারাই কথা বলেছেন হাউমাউ করে কেঁদেছেন। পুরো জানাজা মাঠে কান্নার রোল উঠেছিল। তখন সমস্ত মানুষ আপসোস করে বলেছে মনছুর স্যারের এই শূণ্যতা পূরণ হবার নয়। গজারিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রতি বছর মনছুর স্যারের কথা শুনার জন্য সবাই মুখিয়ে থাকতেন। এবার রমজানের ঈদে তার সেই শূণ্যতা সবাই দারুন ভাবে অনুভব করেছে। আর প্রাণভরে সবাই দোয়া করেছে স্যারের জন্য।
ওমরাবাদ জামে মসজিদেও দোয়ার আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বাদ জুমা মনছুরের নিজ হাতে গড়া ওমরাবাদ জামে মসজিদে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। তার সর্বশেষ কর্মস্থল আল হেলাল একাডেমীতে ও অনুষ্ঠিত হয় স্বরণসভা।

শত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দিতেন পরিবারকে
মনছুরের গ্রামের বাড়িতে শোকবিধুর পরিবেশ বিরাজ করছে। নানা ব্যস্ততার মাঝেও আবু বকর ছিদ্দিক ভাই বোনের কাছে ছিলেন অন্য দশজন বড় ভাইয়ের মতোই। শত দায়িত্ব পালনের মধ্যেও পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন। ছোট ভাই আমিরুল ইসলাম বলেন, ছোট হিসেবে তাঁকে যথেষ্ট আদর-স্নেহ করেছেন। একটু সুযোগ পেলেই তিনি মাকে দেখতে ছুটে আসতেন গ্রামের বাড়িতে। তখন বড় ভাইয়ের সঙ্গে অনেক কথা হতো। ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর এমন অনেক স্মৃতি আছে, যা কোনো দিনই ম্লান হবে না। পড়াশুনাসহ সবেেক্ষত্র তিনি ভাইদের এগিয়ে নিয়েছেন। পরিবারের হাল শক্ত করে নিজেই ধরে রেখেছিলেন।


বেঁচে থাকবেন তিনি অগণিত মানুষের মাঝে
চলেই গেলেন প্রিয় মানুষ আবু বকর ছিদ্দিক। তিনি হ্যার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। ২০১১ সালের মে মাসে ঢাকার গুলশানস্থ শিকদার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তিনি ওপেন হার্ট সার্জারি করেন। অগণিত বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন আজ তাঁকে হারানোর শোকে মুহ্যমান। তিনি তার কর্মের মাঝে সমুজ্জল নত্রের ন্যায় আপন মহিমায় বেঁচে থাকবেন। একজন মানুষের জীবন যে এত কর্মমুখর ও এত বেশী সৎ গুনের অধিকারী হতে পারে মুনছুর স্যার সম্পর্কে না জানলে তা বিশ্বাস করা যায় না। আল্লাহ তার কবরকে শান্তিময় করুন। তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন। আমীন।

লেখকঃ সংবাদকর্মী।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×